যুক্তরাষ্ট্রের ৩২ কংগ্রেসম্যান ও সিনেটর এবং সারা বিশ্বের ৪০ বিশিষ্ট ব্যক্তি পৃথক দুটি চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। তারা এতে বলেছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো ক্ষতি করে ব্যাংকটিকে নতুন করে গড়া বা পুনর্গঠন করবেন না। সরকার গঠিত কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করলে দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংক ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর কর্মদক্ষতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন তারা। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ম্যাগাজিন ব্লুমবার্গ এই দুই খোলা চিঠির কথা প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ জন কংগ্রেসম্যান ও ১৬ জন সিনেটর লিখিত চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয়েরই গ্রামীণ ব্যাংকের নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের সাম্প্রতিক প্রস্তাবনা তাদেরকে অস্বস্তির মধ্যে ফেলেছে। এসব প্রস্তাব নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠানটির মৌলিকত্বকে পাল্টে দেবে। একটি প্রস্তাবে প্রায় ৫০ লাখ ঋণগ্রহীতা শেয়ারহোল্ডারের অধিকার ক্ষুণ্ন করে পর্ষদে তাদের প্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বসানোর কথা বলা হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের অংশীদারিত্ব বাড়ানো অথবা একে ভেঙে টুকরা করার আরেকটি প্রস্তাব কমিশন দিয়েছে। তারা বিশ্বাস করেন, এসব প্রস্তাব ধ্বংসাত্দক। এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা ব্যাংকটিকে এমন সফল জায়গায় আনা নারী ঋণগ্রহীতা ও শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতি করবে। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকের স্বাধীনতা বিসর্জন দিতে হবে, যার মাধ্যমে গত তিন দশক ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে প্রতিষ্ঠানটি মুক্ত রয়েছে। শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলা হয়, আপনি দারিদ্র্য বিমোচনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং আগামী প্রজন্মের জন্য গ্রামীণ ব্যাংককে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। আমরা ওই লক্ষ্যের অংশীদার এবং এ কারণে আপনাকে গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের সুপারিশ এবং এ প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশের জনগণের ক্ষতি করে এমন যে কোনো প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানাচ্ছি। চিঠিতে স্বাক্ষর করেন সিনেটর বারবারা বঙ্ার, মাইকেল বি এনজি, মার্ক আর ওয়ার্নার, টিম জনসন, কংগ্রেসম্যান কিথ এলিসন, জোসেফ ক্রাউলি, এরিক পলসেন, জিম ম্যাকডারমট প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরেকটি খোলা চিঠি লিখেছে বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের ৪০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। বাংলাদেশের বন্ধু পরিচয়ে লেখা চিঠিকে স্বাক্ষর করেছেন নরওয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হারলেম ব্র্যান্ডল্যান্ড, পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলেজান্দ্রো টলেডো, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাডেলিন অলব্রাইট, জর্জ শাল্টজ, বিশ্বব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক জ্যান পিয়েরেজ, কেনেডি সেন্টার ফর জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি, ভার্জিন গ্রুপের চেয়ারম্যান রিচার্ড ব্র্যানসনের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিও রয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের সুপারিশগুলো প্রত্যাখ্যান করার অধিকার প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের রয়েছে। এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তিগুলোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতা ক্ষুণ্ন হবে। তাদের চিঠি ও মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের চিঠির বক্তব্য একই। এ চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের তালিকায় আরও রয়েছেন প্রমুখ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।