জীবনে সফল হতে না পারি দুঃখ নেই... একজন ভাল মানুষ হিসেবে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে চাই...
রোড ম্যাপ
এক অনুপম স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন বিশ্বের দ্বিতীয় তাজমহল 'বাংলার তাজমহল'।
ঢাকার খুব কাছাকাছি বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁওয়ে নিরিবিলি পরিবেশ পেরাবো গ্রামে অবস্থিত একেবারে ভারতের আগ্রার তাজমহলের অনুকরণে নির্মিত এই স্থাপত্য।
ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রায় ৯ বিঘা জমির ওপর এ তাজমহল নির্মাণ করেছেন শিল্পপতি ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আহ্সানউল্লাহ মনি।
তাজমহল দেখার জন্য প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শত শত পর্যটক ছুটে আসছেন পেরাবো গ্রামে। এরই মধ্যে বাংলার তাজমহলটি লাখ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটকের মন কেড়েছে।
এখানে তরুণ-তরুণীরা ভিড় করছেন বেশি। বাংলার তাজমহলটি এখন পরিপূর্ণভাবে সাজ সাজ রবে সজ্জিত হয়েছে।
দিনদিন এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে রয়েছে পাচতাঁরা মানের ঈশা খাঁ মোটেলসহ বর্ষাকালে নৌকাবাইচ ব্যবস্হা। এছাড়াও তাজমহলে গড়ে তোলা হয়েছে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এবং বাইরে গড়ে উঠেছে হস্তপণ্য সামগ্রী ও খাবারের দোকান পাট।
রয়েছে বসার স্থানও।
ভারতের আগ্রায় নির্মিত তাজমহলের সুনাম বিশ্বজোড়া। প্রিয়তমা মমতাজের স্মৃতিকে অমর করে রাখতে সম্রাট শাহজাহান স্ত্রীর প্রতি সীমাহীন ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ তৈরি করেছিলেন বিশ্ববিখ্যাত আগ্রার তাজমহল। সময়ের আবর্তনে সেই তাজমহলটি বিশ্ববাসীর কাছে এখন পরিণত হয়েছে ভালোবাসার এক মহান স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে।
পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম নিদর্শন সম্রাট শাহজাহানের নির্মিত ভারতের আগ্রার তাজমহল।
সম্রাট তার প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজের প্রতি তার প্রেমকে চির স্মরণীয় করে রাখার জন্য সৃষ্টি করেছিলেন আগ্রার তাজমহল।
আগ্রার তাজমহলের অনুকরণে নির্মাণ করা পৃথিবীর দ্বিতীয় বাংলার তাজমহল এখন সম্পূর্ণরূপে সাজানো হয়েছে। এটি নির্মিত হওয়ায় সোনারগাঁওয়ের হারানো ঐতিহ্যকে বিশ্ববাসীর কাছে সম্পূর্ণ নতুন আরেকটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে যুক্ত হয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করেন।
বাংলার তাজমহলের প্রতিষ্ঠাতা আহসানউল্লাহ মনি জানান, তিনি ১৯৮০ সালে সপরিবারে প্রথম ভারতের আগ্রার তাজমহল দেখতে যান এবং এর স্থাপত্যশৈলীর কারুকার্যে মুগ্ধ হন। তখন থেকেই মূলত তিনি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন আগ্রার তাজমহলের আদলে বাংলাদেশেও এমন একটি তাজমহল তৈরি করবেন যার নাম হবে 'বাংলার তাজমহল'।
এরপর থেকে শুরু হয় পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির কাজ। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০০৩ সালে তার নিজ গ্রাম সোনারগাঁওয়ে জামপুরের পেরাবোতে বাংলার তাজমহলের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। জনাব আহসানউল্লাহ মনি দীর্ঘ ৫ বছরে অসংখ্য (২২,০০০প্রায়) শ্রমিকের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান করেন এই বাংলার তাজমহল।
বাংলার তাজমহলে ব্যবহার করা হয়েছে ইতালীর মার্বেল ও বেলজিয়ামের ডায়মন্ড এবং ১৬০ কিলোগ্রাম ব্রোঞ্জ।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বাংলার তাজমহল দশর্কদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
তাজমহলের ভেতরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত 'রাজমণি ফিল্ম সিটি রেস্টুরেন্ট' রয়েছে। এছাড়া 'রাজমণি ফিল্ম সিটি স্টুডিও' রয়েছে, যেখানে ইচ্ছে করলে আপনি বিভিন্ন স্টাইলে ছবি তুলতে পারবেন।
বাংলার তাজমহল প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দশর্কদের জন্য খোলা থাকে। তাজমহল প্রবেশের টিকিট ফি জনপ্রতি ৫০ টাকা মাত্র।
অনাবিল সবুজের সমারোহ, নাম না জানা হাজারো পাখির কিচিরমিচির করা বিকেল_ সব মিলিয়ে এক স্বপ্নময় রাজ্যে বিচরণের অপার সম্ভাবনাময় উপাদান নিয়ে সাংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের স্বাগত জানাচ্ছে বাংলার তাজমহল।
তাজমহলকে ঘিরে বিভিন্ন হোটেল, খাবার দোকান, শৌখিন জিনিসপত্রের দোকান ও পিকনিক স্পট গড়ে উঠেছে। বাংলার তাজমহলের রূপ-মাধুর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে বাংলার তাজমহলে ঢাকা-সিলেট অথবা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে খুব সহজেই যাওয়া যায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে কুমিল্লা, দাউদকান্দি অথবা সোনারগাঁগামী যেকোনো গাড়িতে চড়ে মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে নামতে হয়। সেক্ষেত্রে ভাড়া লাগে ১৫ টাকা।
সেখান থেকে সিএনজি বা স্কুটারে জনপ্রতি ২৫ টাকা ভাড়ায় সহজে যাওয়া যায় তাজমহলে। অন্যভাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ভৈরব, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জগামী যেকোনো গাড়িতে চড়ে বরপা বাসস্ট্যান্ডে নামতে হয়, সেক্ষেত্রে ভাড়া হবে ২০ টাকা। এখান থেকে সিএনজি স্কুটারে জনপ্রতি ১০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছে যেতে পারেন তাজমহলে। প্রয়োজনে রোড ম্যাপ দ্রষ্টব্য।
সূত্রঃপত্র-পত্রিকা,নেট।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।