দশম সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে মাসের পর মাস। এ নির্বাচন দলীয় না তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে সে মতপার্থক্য জাতির জন্য ইতোমধ্যে বিড়ম্বনা ডেকে এনেছে। এ দাবিতে এ পর্যন্ত হরতাল-অবরোধ ইত্যাদি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। রাজপথের সহিংসতায় বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হয়েছে। সহিংস আন্দোলনের কারণে প্রাণহানির সংখ্যাও কম নয়। রাজনৈতিক সংকট দানা বেঁধে উঠেছে নির্বাচন প্রশ্নে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সৃষ্ট মতপার্থক্যকে কেন্দ্র করে। সরকার চায় সাংবিধানিক পন্থায় অর্থাৎ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। পক্ষান্তরে বিরোধী দলের দাবি দশম সংসদ নির্বাচন হতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। ১৯৯১ সাল থেকে এ পদ্ধতির নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ায় তারা দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যেতে রাজি হচ্ছে না। বিরোধী দলের বক্তব্য, সরকার একতরফাভাবে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করেছে। ফলে সংবিধানের দোহাই দিয়ে বিরোধী দলকে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার উপদেশ দেওয়া তাদের মুখে মানায় না। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিভিন্ন প্রশ্নে সরকার ও বিরোধী দলের মতপার্থক্য দেখা দিতেই পারে। এ মতপার্থক্য নিরসনের সর্বোত্তম পথ হলো সংলাপে বসা। উভয়পক্ষ যেহেতু সব পক্ষের অংশগ্রহণে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর, সেহেতু সংলাপে বসলে গ্রহণযোগ্য পথ উন্মোচন হবে এমনটি আশা করাই যেতে পারে। বিরোধী দলকে আন্দোলন থেকে সরিয়ে আনতে ইতোপূর্বে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবারই সংলাপে বসার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের প্রাক্কালে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে তখন সরকারি দলের অনীহা সংলাপের সম্ভাব্যতাকে অনিশ্চিত করে তুলছে। বিরোধী দল সংলাপে বসার আগ্রহ দেখালেও সরকারের পক্ষ থেকে নানা অজুহাত সৃষ্টি করে অনীহা দেখানো হচ্ছে। এ অনীহা রাজনৈতিক সংঘাতকে আরও ঘনীভূত করেছে। রাজনৈতিক শক্তির বিরোধে অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরের বিপদও উঁকি দিচ্ছে। আমরা এ কলামে বারবার রাজনৈতিক মতপার্থক্য নিরসনে সংলাপের ওপর গুরুত্বারোপ করেছি। আমাদের মতে, সংলাপে অনীহা রাজনীতির জন্য অশনি সংকেত হয়ে দেখা দিতে পারে। অস্তিত্বের স্বার্থে ওই ভুল থেকে সরে আসা উচিত।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।