আড়ালেই থাকলেন ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া। তাকে আটক ছাড়াই প্রায় ১০ বছর পর গতকাল চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় হয়েছে। মোস্ট ওয়ান্টেড ও আলোচিত এই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আসাম রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিব জি.ডি. ত্রিপাঠি। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের দাবি, পরেশ এক সময় দাপটের সঙ্গে বাংলাদেশে বিচরণ করতেন। রাজধানীর উত্তরায় ভাড়া বাসায় ছিলেন কিছু দিন। একেক সময় একেক নাম ব্যবহার করে পরিচয় গোপন রেখে চলতেন। কয়েকজন ভিআইপির সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল। পরেশসহ উলফার বেশ কয়েকজন নেতা ১৯৯১ সালের পর থেকে বাংলাদেশে বসবাস শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে উলফার শীর্ষস্থানীয় আরেক নেতা অনুপ চেটিয়া গ্রেফতার হন। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ফের ক্ষমতায় এলে আরও কয়েকজন উলফা নেতাকে গ্রেফতার করে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাদের মধ্যে উলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া, উপসামরিক কমান্ডার রাজু বড়ুয়া, চিত্রবন হাজারিকা, শশধর চৌধুরী উল্লেখযোগ্য। তবে পরেশ বড়ুয়া বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়েছেন। তিনি এখন কোন দেশে অবস্থান করছেন, তাও জানা যায়নি। পলাতক আসামি হিসেবে পরেশ বড়ুয়ার নামে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে মিয়ানমার সীমান্তে জঙ্গলে পরেশ বড়ুয়ার অবস্থানের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। সে সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গুলিতে তিনি আহত হন বলেও খবর চাউর হয়। পরেশ এর পর থেকে অবস্থান পরিবর্তন করে মিয়ানমার, চীন সীমান্তের থেংচং ও রুইলি এলাকায় অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। দশ ট্রাক অস্ত্র চালানটির অস্ত্রগুলো চীনের নরিনকো কোম্পানির বলে মামলার তদন্তে জানা যায়। পরেশ বড়ুয়ার সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ অস্ত্র উলফার জন্য আনা হয়।
পরেশ বড়ুয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আসামের স্বরাষ্ট্র সচিব জি.ডি. ত্রিপাঠি। তিনি গতকাল গুয়াহাটিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'সংবাদমাধ্যমে পরেশ বড়ুয়াকে ফাঁসি দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। বাংলাদেশের তরফে এখনো সরকারিভাবে বিষয়টি আমাদের অবগত করা হয়নি। তাই এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। সরকারিভাবে জানানোর পরই আমরা কিছু বলতে পারব।'
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।