হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর এক পুত্রের নাম হযরত ইসহাক (আঃ) এবং হযরত ইসহাক (আঃ) এর পুত্র হযরত ইয়াকুব (আঃ) নবীদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য মর্যাদার অধিকারী। ইয়াকুব (আঃ) এর অপর নাম ছিল ইসরাইল। হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর বংশধরগণ বনী ইসরাইল নামে পরিচিত। এ শাখারই একটি অংশ পরবর্তীকালে নিজেদের ইহুদী নামে পরিচয় দিতে শুরু করে। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ইরাক থেকে হিজরত করে সিরিয়াতে বসবাস করেন।
হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর পুত্র হযরত ইউসুফ (আঃ) আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে মিশরের শাসনকর্তা হয়ে যান এবং পিতা মাতা ও ভাইদের তিনি মিশরে নিয়ে আসেন। এভাবেই বনী ইসরাইল জাতি মিশরে বসবাস শুরু করে। ইহুদীদের প্রধান নবী হলেন হযরত মুসা (আঃ)। আনুমানিক ১২০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে প্রাচীন বনী ইসরাইলীরা মিশর থেকে প্রত্যাবর্তন করে ভূমধ্য সাগরের দক্ষিণ পূর্ব পাড় ঘেষে বসতি স্থাপন করতে থাকে। আনুমানিক ১০০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে সম্রাট দাউদ (আঃ) এর আমলে বণী ইসরাইলগণ জেরুজালেম অধিকার করে প্যালেস্টাইন এর উপর আধিপত্য বিস্তার করেন।
তার পূত্র সোলায়মান (আঃ) পিতার সাম্রাজ্যকে আরো শক্তিশালী করেন। তাঁর মৃত্যুর পর আভ্যন্তরীন কোন্দলে এবং আল্লাহর বিধি নিষেধকে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করার ফলে সাম্রাজ্যটি বেশী দিন স্থায়ী হয়নি। সুলেমানী সাম্রাজ্যের উত্তরাংশ ইস্রাঈল বা সামারিয়া এবং দক্ষিণাংশ জুডিয়া নামে পরিচিত হয়। ৭১৯ খৃষ্টপূর্বাব্দে ইস্রাঈল এবং ৫৮৬ খৃষ্টপূর্বাব্দে জুডিয়া তার রাজনৈতিক অস্তিত্ব হারায়। ইহুদীদের প্রান স্পন্দন যখন কমে আসছিল তখন তারা নিজ ধর্ম গ্রন্থের বনর্না ও প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী একজন “মসিহার” জন্য অপেক্ষা করছিল।
ঈসা (আঃ) অবতীর্ণ হলেন এবং তাদের হতাশ করলেন। ইহুদী পরিবারে জন্মগ্রহন করেও তিনি ধর্ম যাজকদের ভন্ডামীগুলো প্রত্যাখান করলেন। ইহুদী পুরোহিতদের কায়েমি স্বার্থে আঘাত করার ফলে তিনি হয়ে গেলেন ধর্মদ্রোহ্। ী ইতিমধ্যে প্যালেস্টাইন এলাকা রোম সম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গিয়েছে। যিশু খৃষ্টের অন্তর্ধানের তিনশত বৎসর পরে “পল” কর্তৃক প্রচারিত তথাকথিত খৃষ্টধর্মালম্বীদের সাথে রোম রাজ দরবারের বিরোধ শুরু হয়।
খৃষ্টান বিদ্রোহ দমনে রোম রাজশক্তি ক্রমেই ব্যর্থতার পরিচয় দিতে শুরু করে। এ সময় আবির্ভাব হয় সম্্রাট কনস্টানটাইন এর। তিনি খৃষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে এবং রাজর্ধম হিসেবে ঘোষিত করে এই ধর্মটির ধারক ও বাহকে পরিণত হন। খৃস্টীয় রাজধর্মের সাথে ইহুদীদের বিরোধ দেখা দেয়। পঞ্চম শতকের মাঝ বরাবর রোমান সম্রাজ্যে “ইহুদী ”শব্দটি একটি ঘৃনা ব্যঞ্জক শব্দে পরিণত হয়।
এ সময় রোমান সম্্রাজ্য থেকে ইহুদীরা সরে আসতে শুরু করে। এই সময় আরব উপদ্বীপে প্রচুর ইহুদী বসতি স্থাপন করে। এর পর থেকেই ইহুদীদের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি ঘটতে থাকে এবং বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে তাদের অর্থ সম্পদ বৃদ্ধির আরাধনাতেই ব্যস্ত থাকত। তারা যাযাবর জীবনে স্থায়ী কাজের চেয়ে বুদ্ধি নির্ভর ও কম শারীরিক পরিশ্রমের কাজ বেছে নেয়। ইহুদীদের অর্থ লিপ্সা প্রবল।
অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে ন্যায় অন্যায় দেখে না। সুদী কারবারে তো এরা দুনিয়া জোড়া দূর্ণামের ভাগী হয়েছে। ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত এদের রক্তের সাথে মিশে থাকার দরুন পৃথিবীর কোন দেশেই এরা সমাদৃত হয়নি। ১২৯০ সালে ইংল্যান্ড থেকে, ১৩০৬ ও ১৩৯৪ সালে দু‘দফায় ফ্রান্স থেকে, ১৩৭০ সালে বেলজিয়াম এবং ১৩৮০ সালে চেকোশ্লোভাকিয়া থেকে ইহুদীদের বের করে দেওয়া হয়। তাছাড়া ১৪৪৪ সালে হল্যান্ড ১৫৪০ সালে ইটালী, ১৫৫০ সালে জার্মানী ও ১৫১০ সালে রাশিয়া থেকে ইহুদী জাতি বিতাড়িত হয়।
ইহুদীরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বংশ পরম্পরায় বসবাস করলেও মাটির সন্তান হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করতে পারেনি। তাই ১৮৮১ সাল থেকে ১৮৯১ সাল পর্যন্ত ১,৬০,০০০ ইহুদী আমেরিকায় পাড়ি জমায়।
১৮৯৭ খৃস্টাব্দে থিয়োডর হার্টজেল সুইজারল্যান্ডে প্রথম আন্তর্জাতিক জায়োনিস্ট কংগ্রেস আহ্বান করেন। সেখানে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, প্যালেস্টাঈনকে ইহুদী রাজ্যে পরিণত করার উদ্দেশ্যে ইহুদীদের সুপরিকল্পিত উপায়ে কৃষি ও ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অগ্রসর করানো হবে এবং এরজন্য সমগ্র দুনিয়ার ইহুদীদের সংঘবদ্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠন কায়েম করতে হবে। এজন্য থিয়োডর হার্টজেল কে ইহুদীবাদের জনক বলা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯১৬ সালে World Zionist Organisation বৃটেনের পররাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে আলোচনায় লিপ্ত হয় এবং ১৯১৭ সালের বৃটিশ সরকার “ব্যালফোর” ঘোষনায় প্যালেস্টাঈনে ইহুদীদের জাতীয় আবাসভুমি স্থাপনের দাবী সমর্থন করে। বৃটিশ ম্যান্ডেটের যুগে এসে অটোমান আমলের পুরোনো জমিদারগুলো Jewish National Fund এর এজেন্টরা কিনে নিতে থাকে। এই ফান্ডের মূলনীতি ছিল যে এর দ্বারা ক্রয়কৃত কোন জমিতে কোন অনইহুদী শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না। এভাবে ১৯১৭ সাল থেকে শুরু করে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত পুরো ২২ বছর মুসলমানরা জমিজমা ঘরবাড়ী থেকে উৎখাত হয়েছে এবং পরিশ্রম করে খাবার অধিকারটুকুও তারা পায়নি। এর মাঝে ১৯৩২ সালে জার্মানীতে ন্যাৎসীদের ক্ষমতা দখলের প্রতিক্রিয়ায় ১৯৩২-৩৩ সালে প্যালেস্টাঈনে ইহুদী প্রত্যাবসনের হার তিনগুন বেড়ে যায়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর লক্ষ লক্ষ যুদ্ধ বিধ্বস্ত গৃহ হীন লোকদের পূর্নবাসনে সমস্যা দেখা দেয়। এদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক ইহুদীও ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মিঃ ট্রু ম্যান বৃটিশ মন্ত্রী মিঃ এটলির সাথে পত্রালাপ করে প্যালেস্টাঈনে এক লক্ষ যুদ্ধ বিদ্ধস্ত ইহুদীদের বসবাসের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু সেখানে ছয় লাখ ইহুদীকে বসানো হয়। এবার ইহুদী স¤প্রদায় প্যালেস্টাঈনে মজবুত হয়ে বসার ব্যবস্থা করে।
এবং মুসলমানদের উপর নির্বিচারে যুলুম নির্যাতন শুরু করে দেয়। ফলে দাঙ্গা হাঙ্গামা চরম আকার ধারণ করে। বৃটিশ সরকার বিষয়টি জাতিসংঘের নিকট পেশ করে। ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ প্যালেস্টাঈনকে বিভক্তির সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু ইহুদীরা তা মেনে নেয় না।
তারা চায় প্যালেস্টাঈনে ইহুদীদের স্বাধীন রাষ্ট্র। ১৯৪৮ সালের ১৪ ই মে ইহুদী নেতা বেন গুরিয়ান স্বাধীন ইসরাঈল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ঘোষনা করে এবং দশ মিনিট পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান ইসরাঈলকে স্বীকৃতি প্রদান করে। মার্কিন মুল্লুকের অর্থ বিত্তের সিংহভাগ ইহুদীদের করায়ত্তে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া পার হতে হলে যে কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে ইহুদী চক্রের আশ্রয় নেওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না। যুক্তরাষ্টের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামার পক্ষ থেকে কট্টর ইহুদী রাইস ইমানুয়েলকে হোয়াইট হাউস এর চিফ অব স্টাফ করা হয়েছে।
বিত্তের কারণে ইহুদীরা বিশ্ব শক্তিকে তাদের পক্ষে কাজে লাগায়। তাই দেখা যায়, সাদ্দাম হোসেন কুয়েত দখল করার সময় বলেছিলেন কুয়েত ইরাকের অংশ। কিন্তু সে যুক্তি আমেরিকা বাতিল করে দেয়। অথচ মিডল ইস্টের কোনো এক জায়গায় ইহুদীরা ইসরাঈল দখল করে নেয় এবং সে ব্যাপারে আমেরিকা সমর্থন দিয়ে আসছে।
আশ্চর্য হলেও সত্য যে, এতগুলো বছর ইহুদীরা যাযাবর জীবন যাপন করলেও তারা নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রেখেছে।
তারা কিছু মূলনীতি মেনে চলছে। মূলনীতিগুলোর অন্যতম হচ্ছে অনইহুদীদের মাঝে অর্থনৈতিক দূরাবস্থা সৃষ্টি করা এবং আধ্যাত্মিক অবনতি ও নৈতিক অধপতন ঘটানো। বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে ইহুদীরা। ঋন করার অর্থই হচ্ছে দূর্বলতা । বিশ্বের প্রতিটি দেশ এখন হয় ঋণ দিচ্ছে বা নিচ্ছে।
বর্তমান বিশ্বেÍ মানুষ ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে গাড়ী, বাড়ী, শিক্ষা, বিদেশ ভ্রমণ থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা করছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র এই ঋণের বোঝা বহন করছে। তাছাড়া এমনভাবে বর্তমান বিশ্ব বিলাসী জীবন যাপনের দিকে ঝুকে পড়ছে যা নৈতিক অধঃপতন এর পথ খুলে দিচ্ছে। এবং এসব ব্যাপারে মিডিয়া একটি বড় ভূমিকা পালন করছে। এবং তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করছে ইহুদীরা।
New York post, The Times, Time, The sun, The Weekly Standard, Washington Post, Wall & Street Journal, Newsweek, The Daily Telegraph ইত্যাদি পত্রিকাগুলো ইহুদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। বিশ্বের অধিকাংশ পত্রিকা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস বা অচর নিউজ সার্ভিসের সাহায্য নেয়, যা ইহুদীরা চালাচ্ছে। এছাড়া ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াতে CNN, Walt Disney Television, HBO, Touch stone Television, Buena Vista Television, ESPN, BBC, History Channel, Fox TV Network, Sky TV Network, Star TV Network, National Geographic Channel সহ ইত্যাদি চ্যানেলগুলো ইহুদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। স্টিভেন স্পিলবার্গ, স্টেনলি কুবরিক, রোমান পোলানস্কি, উডি এ্যালেনের মত বিখ্যাত মুভি ডিরেক্টরগণ ইহুদীদের পক্ষে কাজ করেছেন। তাছাড়া এলিজাবেথ টেইলর, রবিন উইলিয়ামস, হ্যারিসন ফোর্ড, মাইকেল ডগলাস, বেন কিংসলে, পল নিউম্যান, অ্যাডাম স্যান্ডলার, জেরি লিউস, মার্সেল মার্সেও এর মত বিখ্যাত ইহুদী অভিনেতারা নানাভাবে ইহুদীদের পক্ষে প্রচার কাজ করেছেন।
এসব তালিকা সহজে শেষ হবার নয়। ইহুদীরা মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষকে স্বপ্নীল জীবনের হাতছানি দিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিদিন এসব স্বপ্ন দেখতে দেখতে আমরা এত ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছি যে, স্বপ্ন পূরণ আমাদের করতেই হবে, যেমন করেই হোক। ফলে অন্য কোন দিকে আমাদের নজর দেওয়ার সময় হচ্ছে না। বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, সায়েন্স ফিকশন লেখক আইজ্যাক আসিমভ, লেখক আর্থার মিলার, লিওনার্ড ডা ভিঞ্চি, দাবারু গ্যারি কাসপারভ ও ববি ফিশার, সমাজতন্ত্রের উদ্ভাবক কার্ল মার্কস, ইলিউশনিষ্ট ডেভিড কপারফিল্ড, ডেভিড ব্লেইন, বেহালা বাদক ইহুদী মেনুইন, গায়ক বব ডিলান, এলভিস প্রিসলি, পলা আবদুল এর মত অনেক ইহুদী ব্যক্তিগণ মিডিয়াতে তাদের অবস্থান শক্ত করে নিয়েছেন। এছাড়া বহু পণ্য বা ব্যান্ডের মার্কেটিং করা হচ্ছে যেগুলোর মালিক ইহুদী।
এসব পণ্যের বিক্রি লদ্ধ অর্থ তারা অন্য ইহুদীদের সাহায্যের জন্য বরাদ্দ করে এবং দাঙ্গা হাঙ্গামা ও গুপ্তচর বৃত্তিতে খরচ করে। ফলে তাদের অর্জিত অর্থ তাদের মাঝেই রয়ে যাচ্ছে। অথচ নিজের অজান্তেই আমরা ইহুদীদের তৈরী ব্র্যান্ডের জিনিসপত্র কিনে তাদের সাহায্য করছি এবং আমাদের মুসলমান ভাইদের বিরুদ্ধে আমরাই লড়াই করছি। এসব ব্র্যান্ডের অন্যতম হল- Boss, Calvin Klein, Clinique, Gap, Lancome, Giorgio Armani, Loreal, Estee Lauder, Aramis, Ralph Lauren, Maybeline, Tommy Hilgipher, Victoria`s Secret, Marks & Spencer, Selfridge, Revlon, Bali, Johnson & Johnson, Sara Lee, Apes, Cocacola, Fanta, Sprite, Fruitopia, Sunkist, Kitkat, Nestle, Maggi, Schorppes, Starbucks Coffee, Mc. Donalds, IBM, Intel, Nokia ইত্যাদি। মিডিয়া এসব পণ্যের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে এবং কোম্পানীগুলো তাদের পণ্যগুলো সহজলভ্য করে ফেলতে সহযোগীতা করছে।
ইহুদী নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াগুলি পরবর্তী বংশধরদের নৈতিক অবক্ষয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। জাকজমক পরকীয়া পূর্ণ সিরিয়াল, প্রতিভা অন্বেষনকারী প্রতিযোগিতা বা লাইফ স্টাইল ম্যাগাজিন দেখে নিজেদের আচরণ বা মনমানসিকতা সুক্ষভাবে পরিবর্র্তন হয়ে যাচ্ছে।
পবিত্র কোরআনে ইহুদীদের সম্পর্কে সূরা নিসার ১৫৯ নং আয়াতে এর ব্যাখ্যা থেকে জানা যায় প্রত্যেক ইহুদীই তার অন্তিম মুহুর্তে যখন পরকালের দৃশ্যাবলী অবলোকন করবে, তখন হযরত ঈসা (আঃ) এর নবুয়তের সত্যতা ও নিজেদের বাতুলতা উপলদ্ধি করতে সক্ষম হবে এবং তার প্রতি ঈমান আনয়ন করতে বাধ্য হবে। কিন্তু তখনকার ঈমান তাদের আদৌ কোন উপকারে আসবে না। সূরা আরাফ-এর ১৬৭-১৬৮ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় ইহুদীদের শাস্তির কথা বলা হয়েছে, যা এই পৃথিবীতেই তাদের দেয়া হয়েছে।
তা হলো এই যে, তাদেরকে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে একান্ত বিক্ষিপ্ত করে দেয়া। কোথাও কোন এক দেশে তাদের সমবেতভাবে বসবাসের সুযোগ হয়নি। কেয়ামত পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা তাদের উপর এমন কোন ব্যাক্তিকে অবশ্য চাপিয়ে রাখতে থাকবেন, যে তাদের কঠিন শাস্তি দিতে থাকবে এবং অপমান ও লাঞ্ছনা জড়িয়ে রাখবে। যদিও মুর্খরা এই অপমান ও লাঞ্ছনার অবস্থা বুঝতে পারবে না। কয়েক বছর থেকে প্যালেস্টাইনের একটি অংশ তাদের সমবেত এবং কৃত্রিম ক্ষমতার কারণে ধোকায় পড়া উচিৎ হবে না।
শেষ যামানায় এখানে তাদের সমবেত হওয়াটা অপরিহার্য। কারণ সদা সত্য রাসূল (সাঃ) এর হাদীসে বলা হয়েছে যে, কেয়ামতের কাছাকাছি তাই ঘটবে। শেষ যামানায় ঈসা (আঃ) অবতীর্ণ হবেন। সমস্ত খৃষ্টান মুসলমান হবে এবং তিনি ইহুদীদের সাথে জেহাদ করে তাদের হত্যা করবেন।
সূরা জুমআহ এর ৫ নং আয়াতে ইহুদীদের গর্দভের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
পার্থিব জাকজমক ও ধনেশ্বর্যের কারনে তাওরাতের পন্ডিত হওয়া সত্ত্বেও তাওরাতের নির্দেশাবলী বাস্তবায়নের দিক দিয়ে সম্পূর্ণ মূর্খ ও অনভিজ্ঞের পর্যায়ে চলে এসেছে। গাধার পিঠে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বৃহদাকার গ্রন্থ চাপিয়ে দেয়া হলেও সে শুধু বোঝা বহন করে, কোন বিষয়ের খবর রাখে না। ইহুদীদের সেই অবস্থা হয়েছে।
সূরা মায়েদার ৫১ নং আয়াতে ইহুদী ও খৃষ্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং ৮২ নং আয়াতে বলা হয় মুসলমানদের চরম শত্র“ ইহুদী।
Protocol of the learned Elders of Zion বইটিতে ইহুদীদের দ্বারা কিভাবে বিশ্ব সমাজকে গ্রাস করা হবে তার পরিকল্পনা দেওয়া আছে।
সেখানে অন-ইহুদীদের প্রতি তারা কিরূুপ আচরণ করবে ্তা বলা আছে। কিছু উদ্ধৃতি তুলে দেওয়া হল।
“সময় না আসা পর্যন্ত অন-ইহুদীদের আমোদ ফূর্তিতে দিন কাটাতে দাও অথবা ভবিষ্যতে নতুন ধরনের সুখ-ভোগের সম্ভাবনাময় আনন্দে বিভোর হয়ে থাকতে দাও। অথবা অতীতে যেসব সুখ সুবিধা ভোগ করেছে তার সুখ স্মৃতিতে ভড়িয়ে রাখ। আমাদের কার্যক্রমের চাহিদা পূরণ করার জন্য আমরা তাদের যে কাজের ব্যবহার করাতে চাই সে কাজ সম্পাদনে যেন তারা প্রধান ভুমিকায় নেমে আসে, তার ব্যবস্থা কর।
এ উদ্দেশ্যের প্রতি লক্ষ্য রেখেই আমরা আমাদের প্রেস মার্ফত অবিরাম প্রচার চালিয়ে আমাদের নীতিগুলোর প্রতি জনগণের অন্ধ অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করে চলছি। ”
“গইম (অন ইহুদী) সমাজের লোকগন যেন চিন্তা ও লক্ষ্য করার সুযোগই না পায় সে জন্য আমরা এদের মন-মগজকে কাজে বুঝিয়ে দিব। ”
“আমাদের ডিরেক্টোরেটে প্রধান কার্যসূচী হচ্ছে- সমালোচনার মাধ্যমে গণমনকে বিভ্রান্ত করা। ”
“প্রতিরোধ প্রবৃত্তি পূরণ করার জন্য মানুষের মনকে গুরুত্বপূর্ন বিষয় থেকে সর্বদা হালকা বিষয়ের দিকে ফিরিয়ে রাখা। ”
“মানব মনের সকল উদ্যোগ উৎসাহকে নিরর্থক ও অকল্যাণজনক সংগ্রামে অপচয় করে দেয়া”।
“জনগণের মধ্যে থেকে আমাদের একান্ত অনুগত যেসব লোকদের আমরা শাসন পরিচালনার জন্য বাছাই করবো তারা শাসন সংক্রান্ত ব্যপারে আমাদের প্রতিভাশীল বিশেষজ্ঞদের হাতের পুতুল হয়ে যাবে। ”
“বর্তমান বিলাসী জীবন যাপনের উদগ্ন আকাঙ্খা গইম সমাজকে ক্রমেই গ্রাস করে চলেছে। আমরা শ্রমজীবিদের পারিশ্রমিকের হার বৃদ্ধি করবো। কিন্তু এতে শ্রমিক সমাজের কোনই লাভ হবে না। কারণ একই সময়ে কৃষিজাত দ্রব্যাদির উৎপাদন কমে যাওয়া ও চাষের জন্তুর বংশ হ্রাস পাওয়ার অজুহাত তুলে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বাড়িয়ে দিব।
আমরা সুকৌশলে উৎপাদনের পরিমান কমাবার সুদূর প্রসারী ব্যবস্থা অবলম্বন করবো। ”
উপরোক্ত উদ্ধৃতিগুলো থেকে বুঝা যায় যে, ইহুদীরা বড় বড় চক্রান্তকারী। আমাদের চারপাশের ঘটনাবলীর স্বার্থে উদ্ধৃতিগুলো মিলিয়ে দেখলে সহজেই অনুমেয় যে ভবিষ্যতে কি ঘটতে যাচ্ছে। পুজিবাদী অর্থনীতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করে এবং শ্রমিক আন্দোলনের নামে সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা নষ্ট করে যাচ্ছে তারা। তাছাড়া এক নায়কত্ববাদী শাসক তৈরীর মাধ্যমে জনগণ ও সরকারের মধ্যে পরস্পরের প্রতি ঘৃনা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে যাচ্ছে।
মুসলিম রাষ্ট্র বা নেতাদের মাঝে পারস্পরিক সন্দেহ ও শত্র“তা সৃষ্টি করে দ্বন্দ্ব তৈরী করে দিচ্ছে। মিশরের বিপ্লব, কাশ্মীর সমস্যা, ইরাক-ইরান যুদ্ধ, পাকিস্তান, বসনিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালশিয়া ও বর্তমানে বাংলাদেশের অভ্যান্তরে যে মুসলমানদের দল উপদল সৃষ্টি তা ইহুদীদের তৈরী উদারতা, সমানাধিকার ও ভ্রাতৃত্বের ধূয়ায় তৈরী পরিকল্পনার ফসল। খুব সুক্ষভাবে তারা আমাদের মন ও মগজে বিষাক্ত পদার্থগুলো ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আর অনেকেই আমরা নিজ স্বার্থে তা বুঝেও না বুঝার ভান করে থাকি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।