যে জানেনা এবং জানে যে সে জানেনা সে সরল, তাকে শেখাও। যে জানেনা এবং জানেনা যে সে জানে না, সে বোকা-তাকে পরিত্যাগ কর।
E = mc2 (ই ইক্যুয়াল টু এমসি স্কয়ার)
যাদের কাছে বিজ্ঞান বিষয়টি খটমট লাগে তারা শিরোনামটি দেখে চমকে(!) উঠবেন না। এটি জটিল কোন সূত্র নয়। একটি সাধারণ বিষয়।
কিন্তু অসাধারণ এক শক্তি নিয়ে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে বিরাজ করছে।
এই সূত্রটি দ্বারাই দুনিয়া চলছে।
এই সূত্রটিকে নিখুঁতভাবে বিশ্লেষণ করে যে যত সুবিধা নিতে পারছে সে তত এগিয়ে যাচ্ছে।
যে জাতি, সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, ধর্মীয় গোষ্ঠী এই সূত্রটিকে ভালভাবে প্রয়োগ করতে পারবে সে জাতি তত সমৃদ্ধ হবে। বর্তমানে বোমা শক্তি বানানোর কাজে এ সূত্রের অপপ্রয়োগ ঘটছে কিন্তু এ শক্তি দ্বারা বিশ্বে শান্তিপূর্ণ অনেক কিছু করা সম্ভব।
কৃষি ক্ষেত্রে, শিল্প ক্ষেত্রে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে, জ্বালানী ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ ব্যবহার করা সম্ভব।
কিন্তু বর্তমানে এই সূত্রটির অপব্যবহার চলছে। এর প্রমাণ পারমাণবিক শক্তির অপপ্রয়োগ। এই সূত্রটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বুঝেছে ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল। এই সূত্রটির মর্মার্থ বুঝেছে আমেরিকা।
তাইতো তারা অন্য কোন দেশকে এ ক্ষেত্রে শক্তির অধিকারী হতে দিতে চায় না, হোক তা শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে।
আমরা অসীম এক শক্তির জগতে বাস করছি। এই শক্তির জগতটা হচ্ছে ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রনের জগত। এই জগত থেকে শক্তি আহরণ করে নিতে হবে। আইনস্টাইনের তত্ত্বে এই শক্তি আহরণের কথা বলা আছে।
জ্বালানী শক্তির কার্যকারিতা একদিন হারিয়ে যাবে। এর পরিবর্তে আসবে পারমাণবিক শক্তি। কিন্তু এই শক্তি সীমিত কিছু ব্যক্তি/রাষ্ট্রের হাতে জিম্মি থাকবে। বর্তমানে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো নিজেরা বিদ্যুৎ উৎপাদনে এ শক্তি ব্যবহার করলেও ইরানকে তা করতে বাধা দিচ্ছে। তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশকেই পারমাণবিক শক্তির অধিকারী হতে দিচ্ছে না।
তাদের পরিত্যক্ত প্ল্যান্টগুলো তৃতীয় বিশ্বের দেশে বর্জ্য হিসেবে স্থানান্তর করছে।
ই ইকুয়াল টু এমসি স্কয়ার চেতনা দ্বারা এই বিশ্বে শান্তিময় অনেক কিছু করা সম্ভব। কিন্তু শক্তিমানরা শক্তির মদ মত্তে তা হতে দেবে না। পারমাণবিক শক্তিকে তারা ভয়-ভীতি এবং দমন কৌশল হিসেবেই নিয়েছে। এই অপশক্তি অধিকারী দেশগুলোর ভাব এমনই যেন তারাই এই বিশ্বের রক্ষা কর্তা।
পারমাণবিক বোমার হুমকির ভয়ে ছোট দেশগুলো ভীত এবং অনুগত থাকবে। সবাই যদি ইহুদী-আমেরিকান হয়ে যায় তাহলে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব কোথায়?
বর্তমান এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মানুষের মস্তিষ্কই হতে পারে একেকটি ইনফরমেশন প্ল্যান্ট। এই ইনফরমেশন প্ল্যান্ট দিয়ে নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব। বর্তমান যুগ গতির যুগ। গতি যত বাড়ানো যাবে, সময়কে তত নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
এই কৌশলটি আয়ত্ত করতে পারলেই কেল্লা ফতে। তাই বিজ্ঞানকে ধারণ করতে হবে মনে প্রাণে। বিজ্ঞান চেতনা সমৃদ্ধ জাতি গঠনে মনোনিবেশ করতে হবে।
আইনস্টাইনের এই সূত্রটি কিছু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের হাতের ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছে। ফলে বিশ্বব্যাপী একটি সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা বিরাজ করছে।
আর বর্তমানে মুসলিম সম্প্রদায় এই অস্থিরতার করুণ শিকার। এর কারণ হচ্ছে এই সূত্রটিকে আঁকড়ে না ধরা। আমি এখানে পারমাণবিক বোমা বানানোর কথা বলছি না। আমি বলছি গতি অর্জন করার কথা।
আলোর গতি সেকেন্ডে প্রায় ৩ লক্ষ কিলোমিটার।
বর্তমানে পারমাণবিক বোমা বহনকারী ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর গতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ কত? দুই/তিন হাজার কিলোমিটার? এর দ্বিগুণ গতিতে ক্ষেপণাস্ত্র বানালে উৎসেই পারমাণবিক বোমাকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া সম্ভব। তাই গতি বাড়াতে হবে।
আচ্ছা ধরা যাক্, এমন একটি স্পেসশিপ আবিষ্কৃত হল যার গতি সেকেন্ডে ৮০ হাজার কি.মি। ধরা যাক আমেরিকার দূরত্ব বাংলাদেশ থেকে সরল রেখা ধরে ২০ হাজার কিলোমিটার। এখন কোন ব্যক্তি স্পেসশিপ চড়ে ১/৪ সেকেন্ডে আমেরিকা গিয়ে বারাক ওবামার সাথে ১/২ সেকেন্ড মিটিং করে পরবর্তী ১/৪ সেকেন্ডে আবার বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে।
অর্থাৎ বাংলাদেশের যে অফিস থেকে সে বের হয়েছে সেখানে আবার ফিরে আসতে লেগেছে ১ সেকেন্ড। কল্পনা করা যাক এই স্পেসশীপে চড়ে বাংলাদেশের এক তরুণ সারা বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে সাক্ষাৎ করছে বিশ্বে শান্তির বাণী বয়ে নিয়ে। অথবা ধরা যাক, বারাক ওবামা এরকম এক স্পেসশীপে চড়ে সারা বিশ্ব দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে ক্ষমতায় কাকে রাখবে না রাখবে ভেবে।
এটি কল্পনা নয়। এটি বাস্তব হতে পারে।
পারমাণবিক শক্তি দিয়ে শুধু বোমা না বানিয়ে এর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারিক দিক বাড়ানোর চিন্তা করতে হবে। যেমন বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট। এই অসীম শক্তিকে ব্যবহার করে অনবরত বিদ্যুৎ উৎপাদন করে পৃথিবীর সর্বত্র বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। চিকিৎসা শাস্ত্রেও এই শক্তি নিরঙ্কুশ কাজে লাগানো যায়। সাম্প্রতিক বিশ্ব রাজনীতির দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই ইরান পারমাণবিক শক্তিকে একটি শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের কথা বললেও ইসরাইল এবং আমেরিকা তা মানছে না।
পারমাণবিক অস্ত্রের ধুঁয়া তুলে ইরাককে ধ্বংস করে দেওয়ার পর ইরানের দিকে নজর। প্রকারান্তরে মুসলিম শক্তিকে ধ্বংস করে দেওয়ার একটি পাঁয়তারা চলছে সরবে। কিন্তু আমরা মুসলিমরা প্রাচীন শৌর্য-বীর্য নিয়েই পড়ে আছি। একত্র হতে পারছি না।
আন্তর্জাতিক এই চক্রান্ত থেকে বের হয়ে আসতে হবে বিজ্ঞান চর্চার দ্বারা।
ই ইকুয়ালটু এমসি স্কয়ারের সফলতা একদিন পরিপূর্ণ আবিষ্কৃত হবে। সেদিন আমরা পিছিয়ে থাকব। তাই বিজ্ঞান চর্চা করে যেতে হবে অনবরত। আর এই চর্চাটা থাকবে ক্রমাগত গতি অর্জন করার জন্য। ক্রমাগত গতি অর্জন করতে পারলেই ক্রমাগত শক্তিশালী হওয়া সম্ভব।
এবং এভাবেই একসময় মুসলিম সমাজ জ্ঞান বিজ্ঞানকে ধারণ করে বিশ্বে আধিপত্য বিস্তারে সমর্থ হবে। কিন্তু আমরা যতই আখিরাতের ফল প্রাপ্তির আশায় বিজ্ঞানকে পরিত্যাগ করবো, ততই আমাদের দুর্ভোগের শিকার হবো। বুকে বোমা বেধে একটি অপশক্তিকে ধ্বংস করা যাবে না। বরং গতি অর্জন করে একটি অপশক্তিকে শুরুতেই থামিয়ে দেওয়া সম্ভব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।