আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিক্রেতা মহল এত উত্তেজিত কেন?



ঈদের দিন মুখ খারাপ করতে চাই না। তারপরও সংযত ভাষায় কথা বলতে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি পণ্য ও সেবা বিক্রেতামহল অত্যন্ত উগ্র হয়ে গিয়েছে। বাচ্চাকাল থেকে দেখছি রমজান মাসে দাম বাড়ে। এই যেমন ঈদের আগের আগের দিন আড়ং এর আধা কেজি টক দই কিনতে গিয়ে কোন দোকানে নাই।

এক দোকানে পেলাম একটা। প্রথমে দাম বলল ৬৫ টাকা। একটু পরে বলে ৮০ টাকা। গায়ে লেখা দাম ৫০ টাকা। যাই হোক আল্লাহর রহমতে খারাপ ব্যবহার করে নাই।

কিছু দোকানদার তো মনে হয় যেন মাগনা জিনিস দিচ্ছে। এক বন্ধুর সাথে রাইফেলস স্কোয়ারে ডিভিডির দোকান নান্দনিকে গেলাম। শালারা তো পুরা "..."র বাচ্চা। এমন ভাব যেন ডিভিডি তাদের দোকান ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় না। চেক করতে চাইলে কয়, "আমাদের মাল চেক করা লাগে না।

" আমি কই, " পরে প্রবলেম হলে তো আবার আসা লাগবে। " কয়, "আসা লাগবে না। আমাদের মালে প্রবলেম থাকে না। " আমি কই, "টাকা দিয়ে জিনিস কিনব চেক করেই কিনব। " আমার কথা শুনে ..ত্তা ম্যানেজার তার চামচারে কয়, "চেক কইরা দে সব।

নান্দনিক চিনে নাই। একবার কিনলে আবার আসব। " আমি কইলাম, " আবার আসব কি আসব না সেটা আমার ব্যপার। এখন যেটা কিনতেসি সেটা এক্কবারে চেক কইরা কিনব। " আবার একটা মুভি রেয়ার এই ওসিলায় ৭০ এর জায়গায় ১০০ টাকা চায়।

পরে বন্ধু নিতে না চাওয়ায় কয় ৮০ টাকা। আমার বন্ধু অন্য ডিভিডি দেখতেসিল তাই কথা খেয়াল করে নাই। দেখি শালা চেঁচায় কয়," কথা শুনসেন?" কয়া দেখি ডিভিডির মেনু ঢুকায় রাখতেসে। ভাব দেইখা মনে হয় ভিক্ষা চাইতে আসছি। বন্ধুরে কই, "এমনে কথা কয় কেন?" বন্ধু বলে,"দেমাগ দেখায়।

" আমি চিল্লায় কই, "দেমাগ দেখাইলে কেনার দরকার নাই। আমাদের ঠ্যাকা পড়সে নাকি। " বন্ধু বক্স ছাড়া তিনটা ডিভিডি নেয়। দেখি ব্যাটারা বক্স ছাড়াও ৭০ টাকা করেই রাখতেসে। আমি কই, বক্স সহ ৭০ টাকা হইলে বক্স ছাড়া ৭০ কেন? কুত্তারা বলে ফিক্সড প্রাইস।

আমি কই, অ। তাইলে বক্স সহই দেন। অথচ শালারা বক্স আলাদা কিনতে গেলে ১০ টাকা চায়। আমি দোকান থেকে বাইর হওয়ার সময় দেখি কুত্তা ম্যানেজার বাইরে খাড়ায় মোবাইল টিপতেসে। আমিও পার্ট লয়া বের হয়ে আসি।

আমি শিওর, বাইর হওয়ার পরে আমারে ধুমসে গালাইসে। আমিও বাইর হয়া গালাইসি। নয় বছর বয়সী ফুপাত ভাই আসছে বাসায়। কয়েকদিন আগে তার জন্মদিন ছিল। ভাবলাম গিফট কিনে দেই।

ঈদ উপলক্ষে ভাল এমাউন্ট হাতে এসেছে। গেলাম মোড়ের দোকানে। দেখি সাফারির আস্ত বক্স। দাম কয় ৪৮০ টাকা। সিঙ্গেল পিস ২০ টাকা।

বক্সে ২৮ পিস থাকে। সিঙ্গেলে কিনলে ৫৬০ পড়ে। বক্সে ৮০ টাকা লাভ। বাসায় আইসা দেখি বক্সে লেখা ২৪ পিস। আমিও গাধা।

দেইখা কেনা উচিৎ ছিল। দোকানদারগুলা তো কু.. হয়ে গিয়েছে। আবার গেলাম দোকানে। দেখালাম। কয়,ও স্যরি।

ভুল হয়ে গেসে। টাকা ফেরত দিচ্ছি। ভাবলাম ৪৮০ ফেরত দিবে। দেখি ২০ টাকা দেয়। কয় ২০ টাকা অনার করলাম।

আমি কই, রিফান্ড করেন না? কয় রিফান্দ হয় না। আমিও যেহেতু দেখে কিনি নাই তাই বেশি কিছু করতে পারলাম না। ঐ দোকানদার আসলেই একটা "শু..বা"। আইডিপি ভবনে ল্যাপটপ ঠিক করে বাসায় এসে দেখি চার্জারের তার বদলায় দিসে। চাইনিজ তা দিসে।

ল্যাপটপ আমার না হওয়ায় নেওয়ার সময় বুঝতে পারি নি। নিজেরে গালি দেই। ওরেও দেই। ও একটা "কুবা"। ব্যবসা করতে আসে আসছে দুই নাম্বারি করার জন্য।

এগুলা কইরাই শালারা খায়। বিএফসিতে এক পিস মুরগি ৬৫ টাকা। দুই পিস ১২০ টাকা। বড় দুই পিস দিতে বলার পর দেখি ১৩০ রাখসে। জিগাইলাম কেন? কয় ১৩০ হলে দুইটাই বড় পিস।

আমি কই, ও আচ্ছা। দেয়ার পরে দেখি, কু গুলা একটা ছোট একটা বড় দিসে। অবশ্য পাখা বা রান না দেয়ায় কিসু কি নাই। নিজেরে কাপুরুষ লাগে। কেমন জানি লজ্জ্বা লাগে কইতে।

শালার ঐ বিক্রেতা ব্যবসায়ী আর ওগো বেতনভুক্ত কর্মচারীগুলার "ইয়ে" আসলেই খারাপ (অবশ্যই সবাই নয়)। ঈদের আগের রাতে দশটা চল্লিশ বাজে। এক জুটি আসছে খাইতে। একটা গ্রুপও আসছে খাইতে। গ্রুপকে আগেই বলসে যে ডাইনিং হবে না।

শুধু পার্সেল হবে। তার চলে গেল না খেয়েই। আর জুটিকে কিছুই বলে নাই। খাওয়ার অর্ডার নিসে। দিসে পার্সেল।

ভদ্রলোক বলতেসে, "এখন কোথায় বসে খাব?" আমারও মেজাজ খারাপ হয়ে গেসলও। কিন্তু কাপুরুষ বলে কিছু বলতে পারি নাই। কিছু কইতে পারি না অধিকাংশ সময়ে। কারণ ভয় লাগে। পাওয়ার নাই, সাহস নাই, আমি আমজনতা।

ননীর পুতুল হিসেবে মানুষ হয়েছি। এখন বুক ফুলায় দাঁড়াইতে পারি না। আর কিছু বললেই ক্ষমতাশালীরা ফাঁসায় দেয়, পিটায় দেয় নাইলে বাসায় হুজির বই, পর্ণো সিডি পাওয়া যায়। এরপর রিমান্ডে নিয়ে যায়। জীবনে দাঁড়ান যায় না।

আর কুত্তাগুলা সব সময়েই দলবদ্ধ। একজনরে কিছু বললেই অন্যগুলা ঘাড় ফুলায় ওরে সাপোর্ট দেয়। নিলক্ষেতে বই কিনতে গিয়ে এইটা দেখেছি। হারা...দাগুলা আরামসে দাম চায়। কিসু কইলে খেইপা যায়।

অন্যগুলা সাপোর্ট দেয়। পরে নাকি গণপিটুনিও দিয়ে দেয়। ভয়ে কিছু কইতে পারি না। এগুলা সব আসলে "......"। অসভ্য ভাষা ব্যবহার করার জন্য আবারও দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

আসলে মেজাজ অসমম্ভব খারাপ। পিকিউএস, এগোরাতে তো ভ্যাট ৭৫ পয়সা হইলে ১ টাকা নেয় আবার ১০ পয়সা হলেও ১ টাকা নেয়। ঐ টাকা যায় কই? কুত্তা ওগুলা আসলে। গ্যাস স্টেশনে তো সব সময়ে পরবর্তী পূর্ণ সংখ্যার টাকা নেয়। আর সামথিং ৩৭,৩৮ বা ৩৯ হইলে নিঃসন্দেহে ৪০ টাকা নিবে।

এগুলার খোলা রাস্তায় পিটাইলা আরাম পাইতাম।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.