আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাজার হাজার লাশ নিজ চক্ষু দিয়া দেখছি: একজন প্রত্যক্ষদর্শী।

এখানের ব্লগিং করার কোন ইচ্ছা আমার ছিল না। কিন্তু কয়েকটি কারণে এখানের রেজিস্ট্রেশন করেছি, যা আমার কার্যক্রমের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন। যারা বলে সেদিন মতিঝিলে গণহত্যা হয় নাই। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আমি নিজে তার স্বাক্ষী।

নোয়াখালীর এক মাদ্রাসা থেকে আমি এবং আর আমার জমজ ভাইসহ আরো অনেকে ঢাকা অবরোধের উদ্দেশ্যে আসি। প্রথমে আমরা যাত্রাবাড়ীতে অবস্থান করলেও পরবর্তীতে আমরা মতিঝিলে অবস্থান করি। পরে শুনি কারা যেন বায়তুল মোকাররমে আগুন দিছে পবিত্র কোরআন শরীফ পোড়াইছে। ইচ্ছা থাকলেও সেদিকে যাইতে পারি নাই। কারণ আমাদের দুই ভাইয়ের লিডার সেদিকে আমাদের নিয়া যায় নাই।

যাই হোক কথা ছিল সন্ধ্যায় চলে যাব। কিন্তু যাই নাই। শাহাদাতের তোকমা গায়ে লাগাইয়া একে বারে জান্নাতের বাসিন্দা হওয়ার আশায় আমরা বসে ছিলাম। আল্লামা শফি হুজুর না আসাতে আমরা সারা রাত থাকার প্লান করলাম। পরবর্তীতে শুনলাম আওয়ামীলীগের পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি আমাদের উৎখাত করার জন্য মতিঝিলে আসতেছে।

আমাদের লিডারসহ অনেক লিডার সিদ্ধান্ত নিল তারা শহীদ হয়ে বাকীদের রক্ষা করবে তাই সামনের কাতারেই দাড়ালো। আমি ও আমার জমজ ভাই তার সাথেই ছিলাম। রাত তখন প্রায় তিনটা বাজে ঠিক এমন সময় পুলিশ বাহিনী হাজির প্রথমে বৃষ্টির মতো টিয়ার শেল আর সাউন্ড গ্রেনেড মারতে থাকল। আমাদের লিডারসহ সব লিডার আমাদের ফালাইয়া উসাইন বোল্টের মতো দৌড় দিয়া পলাইল। আরা আমরা দুই ভাই সহ লক্ষ লক্ষ মাটিতে পড়ে রইল।

সেটা গুনে শেষ করা যাবে না। আমার খালি একটু জ্ঞান আছে। আমার ভাই আমার পাশেই পড়ে ছিল। কেউ বলে ১১ জন, কেউ বলে ২২ জন, আবার কেউ বলে ৫০ জন। কিন্তু আমি নিজ চোখে দেখেছি, সেদিন আমার মতো পড়ে থাকার সংখ্যা কম করে হলেও ১ লক্ষ হবে।

কিছুক্ষণ পড়ে দেখি আসছে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি। গণহারে সেই গাড়িতে আমার সহযাত্রীদের কেচে কেচে উঠানো হচ্ছে। এমন সময় এক টোকাই ছেলে আমাকে এবং আমার ভাইকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সে তার বাসায় নিয়ে প্রথমে আমাদেরকে গোসল করায়। তারপর নিজেই আমাদের প্রাথমিক চিকিৎসা করল।

সবচাইতে দু:খের বিষয় কি জানেন? সেই বদ টোকাইটা আমাদের দুই ভাইকে ভাঙ্গারির দোকানে বেইচা দিল। কেন? আমরা জুতা বইলা আমাদের কোন পাদুকাধিকার নাই? সেদিন লক্ষ লক্ষ জুতা পায়ে দিয়া ওই হেফাজতের মুন্সীরা মতিঝিল আইছিল। আর শালারা টিয়ার শেলের শব্দ শুইনা আমাদের ফালাইয়া থুইয়া দৌড় দিয়া পলাইল। আমরা ওই সকল মুন্সীর ফাঁসি চাই। যারা জুতাদের জীবন লইয়া ছিনি মিনি খেলে।

এই বাংলায় তাদের কোন স্থান নাই। উপরেরটা হইল একটি জুতার শাপলা চত্ত্বরের কাহিনী। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.