আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাহী বিভাগ ও সংসদের ওপরে কি আদালত?



আদালত সত্যিই কি সব করার ক্ষমতা রাখে। কখনো কখনো তারও যে অনধিকার চর্চা হয়না..........? ‌‍'গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ এর কলাম' গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা—মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবিভাজ্য। কিন্তু গণতন্ত্র আগে, না সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আগে? আমি বলব, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাই আগে প্রয়োজন। তার পরই শুধু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে পারে। স্বাধীনতা দেওয়ার পর সম্পাদক বা সাংবাদিকদের ভুল হতে পারে।

লেখার ভুলের জন্য ভর্ৎসনাই বড় শাস্তি। জেলের ভাতই খাওয়াতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। সবচেয়ে মহৎ বিচারক তিনিই, যিনি গুরু অপরাধেও লঘু শাস্তি দেন। জাতিকে ‘কলঙ্কমুক্ত’ করার ব্রত নিয়েছেন আদালত। এত বেশি কলঙ্কমুক্তি মধ্য যুগ থেকে আজ পর্যন্ত আর কোনো দেশে ঘটেনি।

জাতিকে কলঙ্ক থেকে মুক্তি দিচ্ছেন আদালত, আর কেউ নয়—নির্বাহী বিভাগও নয়, পার্লামেন্টও নয়—একমাত্র আদালত। খটকাটা সেখানেই। একটি জিনিস আমাদের ‘সংবিধান বিশেষজ্ঞরা’ ভাবছেন না যে চাঁদেরও কলঙ্ক আছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে আমাদের রাষ্ট্র আজ চলছে বিচার বিভাগের নির্দেশে, সরকারের দ্বারা নয়। গণতন্ত্র, সংবিধান প্রভৃতি বিচার বিভাগের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, সংসদের হাতে নয়।

শুধু তা-ই নয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কী করা হবে, শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান হবে কি না—সব নির্দেশই আসছে আদালতের কাছ থেকে। নির্বাহী বিভাগ ও পার্লামেন্ট অকার্যকর হয়ে পড়ছে। এসব ব্যাপারে যাঁদের কথা বলার কথা, তাঁরা বাতাসের আগে আগে চলছেন। বাতাসের বিপরীতে কোন বোকা যেতে চায়? একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিচারকেরা বিশেষ দায়িত্বে আছেন। প্রজাতন্ত্রের বেতনভুক কর্মকর্তা আছেন, যেমন একজন সচিব, জেনারেল, রাষ্ট্রদূত।

সবারই স্বাধীন দায়িত্ব রয়েছে, দায়বদ্ধতাও রয়েছে। রাষ্ট্রের এক বিভাগের সামনে আরেক বিভাগ কোমর বেঁধে ছড়ি হাতে নিয়ে দাঁড়ালে তা যে ভালো দেখায় না তা-ই নয়, সম্মিলিতভাবে কাজ করার পথটা বন্ধ হয়ে যায়। একটি দেশে পার্লামেন্টই সর্বশক্তিমান, তা গোটা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। সংসদে প্রণীত আইন ও সিদ্ধান্ত সমুন্নত রয়েছে কি না, তা দেখবেন আদালত। তবে যত যা-ই বলি না কেন, রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগই প্রধান।

সব দায়দায়িত্ব, দোষগুণের ভাগীদার তারাই। কোনো কাজে অজনপ্রিয় ও ধিক্কৃত হলে তারাই হয়—উচ্চ আদালতের বিচারকেরা নন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.