সময় বয়ে চলে তার আপন গতিতে
কৈ,মেনি(ভ্যাদা),পাবদা,শিং ও মাগুর মাছের কৃত্তিম প্রজনন পদ্দতি আবিস্কার করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বিবিদ্যালয়ের গবেষকরা।
সোমবার দুপুরে বাকৃবির মৎস বিজ্ঞান অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্যা জানান গবেষনা কার্যক্রমের প্রধান ড. রফিকুল ইসলাম সরদার। তিনি বলেন নানা কারনে দেশীয় প্রজাতির নানা স্বাদু পানির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। এখনই এদের সংরক্ষন না করার ব্যবস্থা করা না হলে অচিরেই স্বাদু পানির এসব মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তিনি বলেন টানা দুই বছর গবেষনা চালিয়ে তারা এ সাফল্য পান।
ড. রফিকুল ইসলাম বলেন দেশীয় পানির মাছ অত্যন্ত সুস্বাদু কিন্তু অপর্যাপ্ততার কারনে প্রতিনয়তই আমরা চাষ করা মাছের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। দেশে প্রায় ২৭০ প্রজাতির মাছ থাকলেও প্রায় ২৫ প্রজাতির মাছ ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং ২৫ প্রজাতির মাছ হুমকির সম্মুখীন। জলাশয় ভরাটের কারণে অন্যান্য প্রজাতির মাছের উৎপাদনও কমে যাচ্ছে। মৎস্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭-০৮ সালে দেশি কৈ, শিং ও মাগুর মাছের উৎপাদন ছিল প্রায় ৭৬ হাজার মেট্রিক টন, যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই কম। এসব দিক বিবেচনা করেই হিমায়িতকরণ পদ্ধতিতে দেশি প্রজাতির কৈ, মেনি, পাবদা, শিং ও মাগুর মাছের বংশ সংরক্ষণের এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়।
'
গবেষণা প্রক্রিয়ার বর্ণনা দিয়ে ড. রফিক জানান, এ পদ্ধতিতে রাজশাহী, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি উলি্লখিত প্রজাতির পুরুষ মাছ সংগ্রহ করা হয়। পরে ওই মাছ থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট নিয়মে কৈশিক নলে (প্লাস্টিক স্ট্র) লঘুকারক (ক্রায়োপ্রটেক্ট্যান্ট) ও এক্সটেন্ডার-সহযোগে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ফ্রিজার যন্ত্র ব্যবহার করে শুক্রাণুর তাপমাত্রা মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামানো হয়। এরপর এটা তরল নাইট্রোজেনে মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে গবেষকরা শুক্রাণুর সতেজ সক্রিয়তা ৯৫ শতাংশ থেকে হিমায়িত অবস্থায় ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। ওই হিমায়িত শুক্রাণু জীবিত স্ত্রী কৈ মাছে ব্যবহার করে ৩০ থেকে ৩৫, মেনি মাছে ৩০ থেকে ৪০, পাবদা মাছে ৩৫ থেকে ৪৫, শিং মাছে ২৮ থেকে ৪২ ও মাগুর মাছে ব্যবহার করে ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ পোনা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, উৎপাদিত পোনার গুণাগুণ প্রাকৃতিক নিয়মে উৎপাদিত পোনার মতোই স্বাভাবিক।
ড. রফিক বলেন, এ প্রযুক্তি দেশি মাছের প্রজাতি সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে এবং সেই সঙ্গে ওই পাঁচ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে। তবে এ প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে মৎস্যচাষিদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন রয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।