দেরিতে হলেও সরকার মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কার্যক্রমের ওপর জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণা রোধে প্রণীত একটি আইনের খসড়া ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন লাভ করেছে। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ নামের প্রস্তাবিত খসড়ায় এ ব্যবসায় লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া এমএলএম ব্যবসা পরিচালনায় সর্বনিম্ন পাঁচ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনো কোম্পানি আইন ভঙ্গ বা প্রতারণার আশ্রয় নিলে সরকার গেজেট জারি করে ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নিতে ও প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে। আইনটি জনগুরুত্বসম্পন্ন ও জরুরি হওয়ায় এটি অধ্যাদেশ আকারে জারিরও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণা একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। নানা লাভজনক প্রস্তাব দিয়ে তারা সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করছে এবং তাদের সর্বস্ব নিয়ে কেটে পড়ছে। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী অধ্যাদেশ জারির ৯০ দিনের মধ্যে যারা এমএলএম ব্যবসা করছেন তাদের লাইসেন্স নিতে হবে। যারা লাইসেন্স পাবেন তারা পূর্বানুমতি ছাড়া তা হস্তান্তর করতে পারবেন না। এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। একশ্রেণীর প্রতারক এ ব্যবসার ফাঁদ পেতে শত শত কোটি টাকা আত্দসাৎ করেছে। সর্বস্বান্ত করেছে লাখ লাখ মানুষকে। এমএলএম ব্যবসার নামে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে ডেসটিনিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নতুন আইন বা অধ্যাদেশটি এ ব্যবসার ক্ষেত্রে যে লাগাম ছাড়া অবস্থা রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়। কোনো কোম্পানির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে তার অস্তিত্ব লোপ না করে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। এদিক থেকে আমরা প্রস্তাবিত আইনকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করি। তবে সব কিছু নির্ভর করছে আইনটি কীভাবে কার্যকর করা হবে তার ওপর। এ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলরা কর্তব্যপরায়ণতার পরিচয় দেবেন এমনটিই কাম্য।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।