আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মনোনয়ন দৌড়ে অভিনেত্রী থেকে নারী নেত্রী

সাবেক সংসদ সদস্য, নারী নেত্রীদের বাইরেও এবার দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছেন দেশের জনপ্রিয় শিল্পী, অভিনেত্রী ও নায়িকারা। আজ বিকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেবেন। এখন দেখার পালা মনোনয়নের জন্য কারা নির্বাচিত হন, কাদের কপাল খোলে। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমাদানের প্রক্রিয়ায় জড়িতরা জানান, সাধারণত যারা রাজনীতির মাঠে সক্রিয় এবং পরিচ্ছন্ন ইমেজের অধিকারী তাদেরই মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এবার সাবেক এমপিদের পাশাপাশি, আওয়ামী লীগের নারী নেত্রীরা যেমন ফরম কিনেছেন, তেমনি এ তালিকায় বেশ কয়েকজন তারকাও আছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেত্রী ফালগুনী হামিদ, শমী কায়সার ও রোকেয়া প্রাচী এবং চিত্রনায়িকা সুজাতা ও রত্না। জানা যায়, জাতীয় সংসদে নারী আসনের সংরক্ষিত ৫০ আসনের জন্য শুক্রবার পর্যন্ত ১ হাজার ৪১৭টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়। ক্রেতাদের মধ্যে ছিলেন বেশ কয়েকজন শোবিজ তারকা। তারকাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনে জমা দিয়েছেন অভিনয়শিল্পী রোকেয়া প্রাচী, অভিনেত্রী সুজাতা, ফালগুনী হামিদ, শমী কায়সার, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী এবং ক্রিকেটার নাফিস ইকবালের স্ত্রী অ্যাডভোকেট ঈশিতা তাসনিম। এ ছাড়া স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীও মনোনয়নপত্র কিনেছেন। গতবারের সংরক্ষিত আসনের এমপি তারানা হালিমও মনোনয়নপত্র কিনেছেন। আরও কিনেছেন গতবারের সংরক্ষিত আসনের এমপি কবি রুবী রহমান, ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী প্রমুখ। জমাদানে পিছিয়ে নেই ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রীরা। তারা আশা করছেন নেত্রী মূল্যায়ন করবেন তাদের। এদিকে বুধবার ঢাকা জেলার জন্য মনোনয়নপত্র কেনেন চিত্রনায়িকা রত্না। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সুযোগ দিলে তিনি সততার সঙ্গে দেশের জন্য কাজ করবেন। গতবারের এমপি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ এবার সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে নারী আসনের জন্য মনোনয়ন পাওয়ার জন্য বিভিন্ন জেলার নারী নেত্রীরা ব্যস্ত। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নারী নেত্রীদের মধ্যে আছেন চট্টগ্রামের হাসিনা মান্নান, চেমন আরা তৈয়ব, চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদিকা রেহেনা আক্তার রানুসহ আরও অনেক আওয়ামী লীগ নেত্রী। শুক্রবার ছিল আওয়ামী লীগের নারী আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। বাকি দলগুলোও শীঘ্রই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।

এ ব্যাপারে ফরম জমা ও বিক্রির কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, রাজনীতির মাঠে যারা সক্রিয় এবং যাদের ইমেজ পরিষ্কার তারাই নারী আসনের জন্য মনোনীত হবেন।

অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী এরই মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত আছেন। শমী কায়সারের মা পান্না কায়সারও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। ক্রিকেটার নাফিসের স্ত্রী ঈশিতার বাবা আবদুল মান্নান পাঠান গাজীপুর জেলা আওয়ামী সহ-সভাপতি। এ ব্যাপারে ঈশিতা জানান, রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হওয়ায় তিনি আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু ও তার দল আওয়ামী লীগের প্রতি আকৃষ্ট। তিনি আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ার মাধ্যমে জনসেবা করতে আগ্রহী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সংসদের ৫০ সংরক্ষিত আসনের ৪২টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনীত হবেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ৬, ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের এক জন করে সংরক্ষিত আসনের এমপি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জানা যায়, আওয়ামী লীগের ফরম বিক্রি এবং জমাদান প্রক্রিয়ার দায়িত্ব পালন করছেন দলের যুগ্ম-সম্পাদক, যুগ্ম-দফতর সম্পাদক আবদুল মান্নান খান ও উপ-দফতর সম্পাদক মৃণালকান্তি দাস।

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আজ সাক্ষাৎকার : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যের নাম চূড়ান্ত প্রক্রিয়া কাল-পরশুর মধ্যেই সম্পন্ন করে রাখবে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলেই দলের প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করা হবে। আজ বিকালে গণভবনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। আগামীকাল দলের সংসদীয় বোর্ডের সভায় চূড়ান্ত করা হতে পারে। তবে তা এখনই প্রকাশ করা হচ্ছে না। দলটির নীতিনির্ধারক এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া যায়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে আবারও একই পদে ফেরাতে তাকে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য বানাতে দ্রুত এ প্রক্রিয়া সম্পন্নের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু ২৯ জানুয়ারি দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরুর আগে এ প্রক্রিয়া সম্পন্নে নির্বাচন কমিশনের সময়গত জটিলতার কথা আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিকে জানানো হয়েছে।

সে চিন্তার ধারাবাহিকতায় সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন পেছাতে পারে।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, বরাবরের মতো এবারও এ প্রক্রিয়ায় বেশিরভাগ আসনে জেলা পর্যায়ের নেত্রীদের মনোনীত করা হবে। গতবার যেসব জেলা থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল এবার সেসব জেলা বাদ দিয়ে অন্য অন্তত ২০টি জেলা থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। এ ছাড়া কেন্দ্র থেকে দলে যাদের অবদান আছে, রাজপথে সক্রিয় ছিলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন এবং সরকার ও দলকে যারা সেবা দিতে পারবেন এমন ব্যক্তিদের মনোনীত করা হবে।

সূত্র জানায়, এক্ষেত্রে দলীয় সভানেত্রী বিভিন্ন সূত্রে তথ্য সংগ্রহ করে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবেন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে অন্য নেতাদের সুপারিশ আমলে নেবেন না। তবে, পুরনোদের মধ্যেও টিকে যেতে পারেন কয়েকজন। সরাসরি রাজনীতি করেন না এমন দু-একজনকেও মহিলা এমপি হিসেবে দেখা যেতে পারে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা যাদের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জনসহ তদবির-বাণিজ্যের অভিযোগ আছে তাদের বাদ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। শিক্ষিত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নারীদের বিবেচনায় নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ফরম কেনা ও জমাদান প্রক্রিয়া চলে। এবার মোট ৮২২ জন ফরম কেনেন ও জমা দেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.