আমি তোমাকেই বলে দেব, কি যে একা দীর্ঘ রাত আমি হেটে গেছি বিরান পথে! আমি তোমাকেই বলে দেব, সেই ভুলে ভরা গল্প; কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়!
[ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকসান অথবা রহস্য উপন্যাস]
পাগল বিজ্ঞানী - ১ম পর্ব
পাগল বিজ্ঞানী - ২য় পর্ব
পাগল বিজ্ঞানী - ৩য় পর্ব
পাগল বিজ্ঞানী - ৪র্থ পর্ব
পাগল বিজ্ঞানী - ৫ম পর্ব
৬
লাশ গুলো সরিয়ে নিয়ে বোট নিয়ে বের হল ওরা তিন জন। ওরা রওনা হবার আধা ঘন্টা পর ওদের ট্র্যাক ধরে রওনা হবে কমান্ডো বাহিনি। একটি ছোট্ট জেটি দেখতে পেয়ে বোট থেকে নামল ওরা। রক একটি গাছে উঠে চোখে দূরবীণ লাগালো, তারপর নেমে এসে জানালো পশ্চিমে একটি গাড়ি দাড়িয়ে আছে। তাতে দুইজন বসে অপেৰা করছে।
হঠাৎ এসে ওদের গ্রেফতার করে গোয়েন্দারা। একজনকে শক্ত করে জাছের সাথে বেঁধে রাখল, কমান্ডো বাহিনিকে এই লোক পথ দেখাবে, আর অপর জনকে বন্ধুকের সামনে রেখে নিয়ে চলল। ড্রাইভার একটা পাথরের সামনে এসে গাড়ি থামালো। এখানে ড্রাইভারকে বেধে রেখে, আগের মত ওরা গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করল, একটি গ্যারেজ। গ্যারেজের ভেতর দিয়ে আরেকটি দরজা।
দরজাটা ভেতর থেকে লক করা। নক করতেই একজন দরজাটা খুলে দিল। যে লোকটি দরজা খুলেছে সে প্রিন্সদের দেখে পুরো অবাক হয়ে যায়। প্রিন্স ওর পিস্তলটা সারাসরি দারোয়ানের কপালে ঠেকায়, দারোয়ান কোন কথা না বলে নিরবে দরজা ছেড়ে দেয়। দারোয়ানের পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে জ্যাকসনের কাছে নিয়ে যেতে বলে।
দারোয়ান একটা দরজার সামনে আসলে, ওর মাথার পেছনে ছোট্ট একটা আঘাত করে তাকে অজ্ঞান করে দেয়। দরজাটা অল্প একটু ফাঁকা করে ভেতরে উকি দেয় নিয়াজ, ভেতরে বেশ কিছু বিজ্ঞানীর সাথে জ্যাকসন কাজ করছে। তারপর হঠাৎ করে পুরো দরজা খুলে ওরা তিনজন ভেতরে প্রবেশ করে। প্রিন্স শান্ত কন্ঠে বলে, “আশা করি আপনি পরিস্থিতিটা বুঝতে পারছেন। ”
জ্যাকসন দেখল তিন জনের হাতেই ভারি অস্ত্র।
একটু পিছনে সরলেন তিনি, নিজের হাতের দিকে তাকালেন। হাতে একটা কনিক্যাল ফ্ল্যাঙ, তাতে কিছু এসিড। তাই তিনি ধিরে ধিরে পেছাতে শুর্ব করলেন, আর ওরা এগুচ্ছে। তিন জনই দেখল জ্যাকসনের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। হঠাৎ করে দেয়ালের ঐ যায়গাট তে একটা সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হল।
জ্যাকসন হাতের কনিক্যাল ফ্ল্যাঙটা নিয়জের দিকে ছুড়ে দিলেন, নিয়াজ আর প্রিন্স লাফ দিয়ে সরে গেল। রক দ্র্বত দৌড়ে গিয়ে সুড়ঙ্গের মাঝে ঢুকে গেল, সুড়ঙ্গের ওপাসে একজন প্রহরী ছিল সে রককে আঘাত করলে রক জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেল। প্রিন্স সাথে সাথে প্রহরীকে গুলি করল। নিয়াজ বসে পড়ে রককে পরীৰা করল, না কেটে যায় নি, শুধু জ্ঞান হারিয়েছে।
জ্যাকসন দৌড়ে গিয়ে একটি আকাশ যানে উঠে গেল।
আশ্চর্য হয়ে ওরা দেখল, প্রায় সাথে সাথে আকাশযানটি উড়াল দিল। প্রিন্স অবাক হয়ে আকাশযানটির দিকে তাকিয়ে থাকল, এমন সময় ম্যাক ডোনাল্ড দরজার কাছে এসে দাড়ালো। বললেন, “ও পালিয়ে যাচ্ছে, ওকে ধর। পাশের মহাকাশযানটা তোমরা ব্যাবহার করতে পার। এটা সাধারণ পেৱনের মতই।
” ওরা দুইজনেই পেৱন চালাতে জানে তাই ম্যাকের কথা শুনে নিয়াজ আর প্রিন্স দৌড়ে গিয়ে পাশে রাখা মহাকাশযানটাতে উঠে গেল। আসলেই তাই, ককপিটটা সাধারন পেৱনের মতই, কিন্তু থ্রটলটা টেনে ধরতেই আকাশযানটা আকাশে উড়াল দিল। প্রিন্সরা যখন আকাশে, তখন দেখতে পেল দূর খেকে কিছু হেলিকপ্টার আসছে ওদের হেল্প করতে।
৭
হঠাৎ খড় খড় করে প্রিন্সদের রেডিওটা বেজে উঠল
@ “চোর পুলিশ খেলাটা খুব মজার কি বল?” হেসে বলল জ্যাকসন।
+ “হ্যাঁ ঠিক বলেছেন, কিন্তু খেলা শেষে চোর ঠিকই ধরা পড়ে।
” প্রিন্সও হেসে ইত্তর দেয়
@ “কিন্তু তোমরা আমাকে ধরতে পারবে না। নাগালই পাবে না। ”
+ “তাই কেন শুনি। ”
@ “তোমরা দেখ আমি ঠিক পালিয়ে যাব। ”
+ “পৃথিবীর যে কোনাতেই লুকান না কেন, ঠিক খুজে বের করব।
”
@ “কিন্তু আমি যদি তোমাদের এই নোংরা পৃথিবীতেই না থাকি তবে!?”
অবাক হয়ে প্রিন্স নিয়াজের দিকে তাকায়। তারপর বলে, “মানে?”
@ “তোমরা কি দেখছ না আমি পৃথিবীর এটমোস্ফিয়ার ছেড়ে বের হয়ে যাচ্ছি।
+ “আপনি কি আত্মহত্যার কথা ভাবছেন!?”
@ ”আমার মাথা এতটা খারাপ না যে আমি আত্মহত্যা করব। আমি দ্বিতীয় পৃথিবীতে যাচ্ছি। ”
+= “দ্বিতীয় পৃথিবী!!! সেটা আবার কোথায়?” অবাক হয়ে দুইজনই জানতে চায়।
@ “আছে, এন্ড্রোমিডা ছায়াপথেই আছে। আর সেখানে আছে পর্যাপ্ত অঙিজেন, নাইট্রোজেন; আছে গাছ, পশু পাখি। ”
= “মানুষ নেই?” নিয়াজ জানতে চায়
@ “না। তবে মানর প্রজাতি আছে। ”
+ “মানর!! সেটা আবার কি?”
@ “মানুষ আর বানরের মধ্যবর্তী পর্যায়।
আমি নাম দিয়েছি, মানর; সুন্দর না। ”
= “অদভূত!!”
@ “আমি সেখানে গিয়ে মানর থেকে মানুষের সৃষ্টি করব। তারা আমার অপমানের প্রতিশোধ নেবে। ”
+ “মানে সেই গ্রহটাও বিষাক্ত করে তুলবেন, পৃথিবীর মত অস্ত্র দিয়ে!”
@ “সেটা তোমাদের ভাববার বিষয় নয়। ”
+ “তাহলে আমাদের কি ভাবতে বলছেন?”
@ “তোমরা ফিরে যাও।
”
= “হয় আপনাকে নিয়ে অথবা আপনাকে ধংশ করেই ফিরে যাব। ”
+ “আপনার মত বিজ্ঞানী, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ উভয় পৃথিবীর জন্য ৰতিকর। ”
@ “বোকামি করছ তোমরা। ”
এমন সময় নিয়াজ একটা সুইচ দেখালো, ”এটা দেখ, এটা ফায়ার করার সুইচ না। ”
+ “তাইতো!” প্রিন্স সু্চটা অন করতেই মনিটরে একটা টার্গেট ফুটে উঠল, টার্গেট লক করে পাসের লাল সুইচটা অন করতেই টার্গেটটা লেজার রশ্মিতে ধংশ হয়ে গেল।
নিয়াজ লাফিয়ে উঠল, “এবার জ্যাকসনের আকাশযানকে টার্গেট কর!”
+ “তার যান টার্গেট এরিয়ার বাইরে আছে। ”
= “আমাদের যানের গতি বৃদ্ধি কর। ”
প্রিন্স তাদের যানের গতি বাড়াতে থাকে, সংগে সংগে জ্যাকসনও তার যানের গতি বাড়াতে থাকে। একসময় রেডিওটা আবার শব্দ করে উঠে। আহত কন্ঠে জ্যাকসন বলে, “বলেছিলাম না, তোমরা আমাকে ধরতে পারবে না।
তোমাদের সামনেই আমি মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ব, তোমরা কিছুই করতে পারবে না। ”
+ “মানে! কি বলছেন আপনি। ”
@ “ঠিকই বলছি। আমার যানে আগুন লেগে গেছে, এটা এখন আমি ধংশ করে দেব; ছড়িয়ে পড়ব মহাকাশে। ”
+ “এমনটি করার কোন মানে হয় না, আপনি চাইলে পৃথিবীকে অনেক কিছু দিতে পারেন”
প্রিন্সের কথা বোধহয় শুনতেই পায়নি জ্যাকসন।
বিকট শব্দে ধংশ হয়ে যায়, জ্যাকসনের যান। বায়ুশূন্য স্থানে ওরা শুধু ধংশ হবার দৃশ্যটা দেখতে পেল, শব্দ শুনতে পেল না কিন্তু কিছুৰন পর একটা শকওয়েভ টের পেল।
নিয়াজ কিছুৰন অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে বলল, “পৃথিবী আরো একজন মহান বিজ্ঞানীকে হারালো। পাগল বিজ্ঞানী!”
(গল্পটা শেষ করার পর মনে হচ্ছে নামটা পলাতক ঠিক হয়নি; এর চেয়ে ‘পাগল বিজ্ঞানী’ ভাল হত। আপনারা কি বলেন?)
আমার অন্যান্য সায়েন্স ফিকসান
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।