আমি তোমাকেই বলে দেব, কি যে একা দীর্ঘ রাত আমি হেটে গেছি বিরান পথে! আমি তোমাকেই বলে দেব, সেই ভুলে ভরা গল্প; কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়!
[ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকসান অথবা রহস্য উপন্যাস]
ফোন করে দ্রুত পুলিশ স্টেশন ছুটল নিয়াজ আর প্রিন্স। পুলিশ ইন্সপেক্টরের টেবিলে গিয়ে বলল, “কি ব্যাপার শ্যারনকে এখনও গ্রেফতার করা হয় নি?”
”ওকি আর নিজে থেকে ধরা দেবে? হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় রিলিজ হয়েগেছে। বিশ্বগোয়েন্দা সংস্থার একজন গোয়েন্দা আছে এয়ারপোর্টে ওর কাছে খবর পেলাম শ্যারন প্লেনে উঠার চেস্টা করছে। আমার এসিসটেন্টকে পাঠিয়েছি, ওকে এখানে নিয়ে আসতে। ঐতো কথা বলতে বলতে চলেও এসেছে।
কি খবর এত দেরি হল যে?”
“ স্যার এয়ারপোর্টে একটা ঝামেলা হয়েগেছে, এই ব্যাটা এই গান দিয়ে বিশ্বগোয়েন্দা সংস্থার গোয়েন্দাটিকে গুলি করেছে। লোকটি মারা গেছে স্যার। ” ইন্সপেক্টরের দিকে ছোট্ট একটা অস্ত্র বাড়িয়ে দিল এসিসটেন্ট। ভ্রু কুচকে অস্ত্রটা দেখল ইন্সপেক্টর, “আশ্চর্য এতো দেখি নতুন টাইপের কোন অস্ত্র, এর আগে এমন কোন অস্ত্র দেখি নি। গার্ড এরে সার্চ কর আরো কিছু পাওয়া যায় নাকি দেখ।
”
গার্ড সার্চ করে বুক পকেট থেকে একটা কালো বক্স বের করল, ইন্সপেক্টর জানতে চাইলেন, “এটা কি?”
শ্যারন বিষ দৃষ্টিতে প্রিন্সের দিকে তাকিয়ে বলল, “আমার লয়ার ছাড়া আমি কোন কথা বলব না। ”
ইন্সপেক্টর নিয়াজের দিকে একবার তাকালো, “তাতো অবস্যই, আমনার একজন লয়ার লাগবে। কিন্তু এই জিনিসটি কি? এটা জানার জন্য নিশ্চয় লয়ার লাগবেনা। কি বলেন?”
শ্যারন নিচু গলাই বলল, ”আসলে আমি জানি না, এটা কি? শুধু জানি সকল সদস্যকে এটা বহন করতে হবে। ”
নিয়াজ বলল, “এটা নিশ্চয় ট্রান্সমিটার জাতীয় কিছু।
সার্ভার থেকে দেখার জন্য, কোন সদস্য কোথায় আছে। ”
প্রিন্স জিনিসটা হাতে নিয়ে বলল, “হতে পারে। এখানে দেখি একটা সুইচ আছে; কিন্তু অন হচ্ছেনা কেন? কিভাবে এটা অন করে। ”
শ্যারন বলল, “ওটায় একটা স্ক্যানার আছে, ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যান করে কাজ করে। ”
প্রিন্স জিনিসটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “প্লিজ এটা কি একটু খুলে দিবেন, নাকি তার জন্যও লয়ার লাগবে? ”
শ্যারন জিনিসটা হাতে নিল, মনে মনে সে খুশি।
কারন এটা অন করলে সার্ভারে খবর চলে যাবে সে বিপদে পড়েছে। সুইচটা অন করলে স্ক্রিনে ছোট্ট একটি ম্যাসেজ ভেষে উঠল; প্রিন্স, নিয়াজ কিছু বুঝে উঠার আগেই শ্যারন আরো একটি সুইচ টিপে দিল। মান সার্ভারে খবর পাঠালো তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাথে সাথে একটা লাল লাইট জ্বলে উঠল; তারপর কাটা কলা গাছের মত শ্যারন ধুপ করে পড়ে গেল। ব্যাপারটাই সবাই এতটাই অবাক হয়েছে যে বেশ কিছুক্ষন লাগল কি ঘটেছে বুঝ উঠতে।
প্রথমে প্রিন্স ছুটে গেল শ্যারনের কাছে, চোখ দুটো উল্টে আছে, নাকের নিচে এক ফোটা রক্ত ধিরে ধিরে জমা হচ্ছে। প্রিন্স নিয়াজের দিকে তাকিয়ে ধিরে ধিরে বলল, “ডেড। ”
পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে পাওয়া গেল সায়ানাইট বিষ মৃত্যুর কারণ। আর বক্সটা পরীক্ষা করে পাওয়া গেল, ওটা আগে থোকই প্রোগ্রাম করা ছিল, শ্যারন পুলিশের কাছে ধরা পড়লে; তার কাছে কোন সাহায্য পাঠানো হবে না। তাকে মেরে ফেলা তবে।
শ্যারনের মৃত্যুর পর সব কিছু কেমন যে এলোমেলো হয়ে গেল। কিডন্যাপ হওয়া বিজ্ঞানীরা যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। সাক্ষি আর প্রমানের অভাবে যখন কেসটা একেবারে আলোচনার বাইরে চলে যাচ্ছিল, এমন সময় বিশ্ব গোয়েন্দা সংস্থা বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করে। এই নতুন ধরনের অস্ত্র দিয়েই সেই সব পুলিশকে মারা হয় যারা ঐ দিন বিজ্ঞানী এ.ডি.জ্যাকসনের বাড়ি পাহারা দিচ্ছিল। এই সব অস্ত্রের মাঝে সব চেয়ে বিপদজনক হচ্ছে এসিড গান।
কোন এক টেকনোলোজির মাধ্যমে তরল এসিডকে কঠিনে রূপান্তর করা হয়েছে, তারপর সেটা দিয়ে বুলেট তৈরি করা হয়েছে। এই বুলেট কোন প্রাণীর শরীরে প্রবেসের পর, দেহের তাপমাত্রায় তা গলে যায় এবং দেহের অভ্যান্তরীণ অঙ্গ পুড়ে যায়। এই সমস্ত অস্ত্র নিয়ে একটা সংবাদ সম্মেলনের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। প্রিন্স এই সংবাদ সম্মেলনে এসে দেখে সবাই কেমন যেন অস্থির হয়ে আছে। সংবাদ সম্মেলনের নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও যখন সংবাদ সম্মেলন শুরু হল না তখন প্রিন্স ব্যাপারটার খোজ নিতে গেল।
একজন জানালো যারা সংবাদ সম্মেলন করবে তারা নিঁখোজ। প্রিন্স বেশ অবাক হল, এই ব্যাপারে যারাই নাক গলাচ্ছে তারাই নিখোজ হয়ে যাচ্ছে বা মারা যাচ্ছে! বিজ্ঞানী এ.ডি. জ্যাকসনের পেছনে নিশ্চয় বিশাল কোন শক্তি কাজ করছে। এত কিছু চিন্তা করতে করতে, প্রিন্স ছাদে উঠে এল। রহস্যের খোজে গোয়েন্দা সংস্থার নিজস্ব একটা কমিউনিকেশন কিট আছে, সেটা দিয়ে নিয়াজকে রিপোর্ট করে জানালো। তারপর ছাদ থেকে নেমে আসার জন্য যেই ঘুরেছে, অম্নি দেখতে পেল একটা গোলাকার আকাশ যান, নি:শব্দে নেমে আসছে।
প্রিন্স তাড়াতাড়ি একটা পিলারের আড়ালে চলে গেল। দেখল চারটা রোবট আকাশযানটা থেকে দুইটা কফিন নিয়ে নামল। তারপর ছোট্ট একটি বক্স রেখে চলে গেল। আকাশযানটা যখন নি:শব্দে উড়ে যাচ্ছিল প্রিন্স তার পকেট থেকে একটা বাগ বের করে আকাশযানটায় ছুড়ে দিল। যানটা সম্পুর্ণ অদৃশ্য হয়ে যাবার পর প্রিন্স কফিনগুলোর দিকে এগিয়ে গেল।
এমন সময় কফিনের ওপর রাখা বক্সটাতে বিষ্ফোরণ ঘটল বিকট শব্দে। প্রিন্সের মনে হল কেউ যেন ওর কানে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। নিচ থেকে সবাই ছাদে ছুটে এসে প্রিন্সকে নানা প্রশ্ন করতে লাগল। কিন্তু প্রিন্স কিছুই শুনতে পাচ্ছিল না। শুধু দেখল কফিনের ওপর একটা কাগজ লাগানো আছে, তাতে লিখা, “এখনো আমাদের ব্যাপারে নাক গলানো হচ্ছে।
এটা আমরা মেনে নেব না। ”
পাগল বিজ্ঞানী-১
পাগল বিজ্ঞানী-২
পাগল বিজ্ঞানী-৩
পাগল বিজ্ঞানী-৫
পাগল বিজ্ঞানী-৬/শেষ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।