প্রশ্নাতীত দেশপ্রেম, সততা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর দুর্লভ দুঃসাহসই বোধহয় তার অপরাধ। না হলে কেন কারাবন্দি থাকতে হবে? কেন দীর্ঘদিন রিমান্ডের নামে লাঞ্ছনা-নির্যাতনের শিকার হতে হবে? কেন প্রায় অর্ধশত মামলায় ক্ষতবিক্ষত-জর্জরিত হতে হবে? মাহমুদুর রহমান এই সময়ের বিবেক। অসত্য, অনাচারের বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন। তার কণ্ঠ ও কলম দুই-ই সোচ্চার অন্যায়-বৈষম্য, অসঙ্গতি-অত্যাচারের বিরুদ্ধে। তিনি আপসহীন মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে।
প্রতিক্রিয়াশীলদের সেসব পছন্দ হবে কেন? কোনো কালে কোনো সময়ে সেটা ঘটেনি। হালফিল বাংলাদেশেইবা ঘটবে কেন?
গড্ডলিকা স্রোতের বিপরীতে তার সুদৃঢ় অবস্থান। ভাঙবেন, তবু মচকাবেন না। সেজন্যই এমন চড়া মাশুল গুনতে হচ্ছে তাকে। এটি কেবল ব্যক্তি মাহমুদুর রহমানের ওপরই কি নির্যাতন? গণতন্ত্রের ওপরও কি নয়? শুধু তার মাতৃভূমি বাংলাদেশের গণ্ডিতেই নয়, সংবাদপত্রের ওপর এই নিপীড়ন, সম্পাদককে তার দফতর থেকে রাতের আঁধারে ধরে নিয়ে গিয়ে অকথ্য শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহের ঘটনা বিশ্বমিডিয়ায়ও তোলপাড় তুলেছে।
আমরা জানি না, দুঃখিনী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি এতে কতটা উজ্জ্বল হয়েছে? দুর্নীতিতে আমরা চ্যাম্পিয়ন, গণতন্ত্র দলনে কি? সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। অবাধ তথ্যপ্রবাহের বুলি শুনতে শুনতে আমাদের কান ঝালাপালা। বাস্তবে ‘আমার দেশ’ প্রশাসনের রক্তচক্ষুর শিকার হয়ে দীর্ঘ দু’মাস ছিল অনিশ্চয়তার আঁধারে নিপতিত। মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের যুগান্তকারী রায়ের বদৌলতে দৈনিক আমার দেশ আবার আলোর মুখ দেখতে পেয়েছে। এস্টাবলিশমেন্টবিরোধী সংবাদপত্রটি এখন পাঠক পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ওয়ান-এর সম্প্রচার এখনও বন্ধ, যমুনা টিভির সাংবাদিক-কর্মীরাও রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই হলো আমাদের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চর্চার নমুনা। এই হলো আমাদের পরমতসহিষ্ণুতার প্রকৃষ্ট নজির। এসব ভেবে আমরা নিশ্চয়ই আত্মপ্রসাদ লাভ করতে পারি। কিন্তু এই গণতন্ত্রকে কেউ যদি প্রতিবন্ধী গণতন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেন, তাকে আমরা দোষ দিতে পারি কি?
বর্তমান ক্লীব সময়ে চারপাশে যখন অন্ধ স্তাবকতা, পশ্চাত্মুখিতা, মিথ্যে আশ্বাসের ফুলঝুরি, অমেরুদণ্ডী মানুষের আস্ফাালন—সেখানে বিরুদ্ধ মতপ্রকাশ নিশ্চয়ই গুরুতর অপরাধ! এখন সুশীল সমাজের মুখে রা’টি নেই।
হায়রে দলবাজি! হায়রে সুবিধাবাদ! এক-এগারোর কালো চ্যাপ্টার শুরু হওয়ার পর আমাদের সুশীল (!) সমাজের অনেকের সমর্থনও আমরা দেখেছি। লজ্জিত হয়েছে, সবার অবরুদ্ধ মনে প্রশ্ন আঁকুপাঁকু করেছে—কবে শেষ হবে এই গ্রহণের কাল? সেই কলঙ্কিত সময়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে স্বল্পসংখ্যক মানুষ প্রতিবাদের ঝাণ্ডা ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছেন। সেসব দুঃসাহসী সান অব দ্য সয়েল যারা, তাদের মধ্যে মাহমুদুর রহমান অন্যতম অগ্রণী। পেশায় তিনি সফল প্রকৌশলী, বাংলাদেশের সিরামিক শিল্পকে বিশ্বদরবারে উজ্জ্বল উপস্থাপনার ক্ষেত্রে অসামান্য কৃতিত্�
লেখক : হাসান হাফিজ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।