আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাগল বিজ্ঞানী - ২

আমি তোমাকেই বলে দেব, কি যে একা দীর্ঘ রাত আমি হেটে গেছি বিরান পথে! আমি তোমাকেই বলে দেব, সেই ভুলে ভরা গল্প; কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়!

টিভির সামনে বসে আছে নিয়াজ এবং প্রিন্স। আজ বিশ্ব গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট প্রদানের দিন। খবর পাঠিকা খবরে তদন্ত রিপোর্টের ব্যাপারে কিছু না বলে তাদের ব্যাক্তিগত তথ্য প্রদান করতে শুরু করল। “বিজ্ঞাণী এ.ডি, জ্যাকসন ও ম্যাক ডোনাল্ড একই সাথে মহাকাশ নিয়ে গবেষণার জন্য একটি গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করে। এই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন দেশ বিনিয়োগ করে।

গোপনে এই গবেষণাগারে বিভিন্ন মারনাস্ত্রের ওপর গবেষণা ও নতুন ধরনের অস্ত্র প্রস্তুত করা হত। কিন্তু কোন কারনে ম্যাক ও জ্যাকের মাঝের চুক্তি ভেঙ্গে যায় এবং প্রতিরক্ষমন্ত্রণালয়ে ম্যাক গবেষণাগারের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করে। ধারণা করা হচ্ছে এর ফলে ক্ষতিগ্রস্থ মাফিয়া সংস্থাগুলো জ্যাকসনকে পালাতে এবং ম্যাক ডোনাল্ডকে কিডন্যাপে সাহায্য করেছে। কিন্তু কোন কোন মাফিয়া সংগঠন এতে জড়িত আছে তা এখনও জানা যায়নি। বিশ্ব গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক ডেক ব্যারন একাধিক মাফিয়া সংস্থা জড়িত থাকার কথা বলেন, তবে এই ব্যাপারে প্রতিরক্ষমন্ত্রণালয় একেবারে নিশ্চুপ আছে।

এদিকে ম্যাক ডোনাল্ড কিডন্যাপ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থান থেকে অস্ত্র গবেষণাগারের বেশ ক’জন গবেষক কিডন্যাপ হয়েছেন বলে জানা গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এই কেসের দ্বায়িত্ব নতুন করে কোন এক গোয়েন্দা সংস্থাকে দেয়া হবে। কিন্তু কোন গোয়েন্দা সংস্থাকে এই কেসের দ্বায়িত্ব দেয়া হবে সে খবর আমাদের কাছে এখনও এসে পৌছায়নি। . .. ...” এরপর আরো খবর পাঠ করে সংবাদ পাঠিকা বিদায় নিল। = “কি মনে হয়? কেসটা কোন সংস্থা পাবে?” নিয়াজের প্রশ্ন + “কি জানি।

” চিন্তিত কন্ঠে জবাব দেয় প্রিন্স ”তবে আমরা পেলে অবাক হব না বরং খুশিই হব। কি বলিশ?” = “অবস্যই. .. ...” টেলিফোনের শব্দে ঘুরে তাকায় নিয়াজ। দ্বিতীয়বার বাজতই রিসিভারটা কানে ধরে। “হ্যালো নিয়াজ স্পিকিং। ” @ “আমি বিশ্ব গোয়েন্দা সংস্থার মহা পরিচালক ব্যারন বলছিলাম।

” = “জ্বি মি. ডেক ব্যারন; বলেন। ” @ “বিজ্ঞানী এ.ডি. জ্যাকসনের কেসের ব্যাপারে কতটুকু জান?” = “খবরে যতটা প্রচারিত হয়েছে। কেবলই আমরা খবর দেখছিলাম। ” @ “তাহলেতো তোমরা জান এই কেসটা নতুনভাবে কোন এক গোয়েন্দা সংস্থ কে দেয়া হবে। মিটিংএ তোমাদের গোয়েন্দা সংস্থা রহস্যের খোজে এর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে; তোমরা কি কেসটার ব্যাপারে আগ্রহী?” = “জ্বি কেসটা নিতে আমাদের কোন আপত্তি নেই।

আমরা কি আপন দের হেড কোয়ার্টারে আসব?” @ “ঠিক আছে আস, বিস্তারিত আলোচনা করব। ” রিসিভারটা নামিয়ে রেখে মুচকি হাসল নিয়াজ, “তোর ধারণাই ঠিক, আমরাই পেলাম কেসটা। ” + “তো বসে কেন চল, মাঠে নামি। ” প্রিন্সের গাড়িতে ওরা বিশ্ব গোয়েন্দা সংস্থার হেড কোয়ার্টারে এসে পৌছল। লম্বা করিডোর পেরিয়ে সোজা এসে ঢুকল ডেক ব্যারনের রুমে।

এর আগেও বেশ কিছু কেসে বিশ্ব গোয়েন্দা সংস্থা ওদের হেল্প নিয়েছে, তাই সব কিছু পরিচিত। কুশল বিনিময় করে, স্পট ভিডিও দেখতে চাইল প্রিন্স। একটা সি.ডি বাড়িয়ে দিল ব্যারন। তা নিয়ে কম্পিউটার রুমে এলো, ওরা। সি.ডি টা চালিয়ে দিল নিয়াজ।

একটা নীল গাড়ি উল্টো হয়ে পড়ে আছে, পাসের গাছটি ভেঙ্গে গেছে। একটি মাঝাড়ি সাইজের পাথর তাতে রক্ত লেগে আছে। ক্যামেরা কয়েকটি গাছের পাস দিয়ে ঘুরে আবার গাড়ির দিকে এল। গাড়ির জানালার কাঁচগুলো ভাঙ্গা। গাড়ির হুইলে রক্ত লেগে আছে।

পেছনের সিট বেল্ট-টা ধারালো কিছু দিয়ে কাটা হয়েছে। ভিডিওতে আর তেমন কিছু পাওয়া গেল না। শুধু বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে ভিডিও করা হয়েছে। প্রিন্স বলল, “চল..” = “এবার কোথায়?” + “স্পট-টা একবার দেখব, তারপর গ্যারেজে যাব। ” = “চল।

” ব্যারনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওরা সোজা চলে এল, ঘটনা স্থলে। কয়েকজন পুলিশ টহল দিচ্ছে, আর কয়েকজন শ্রমিক গাছ কাটছে। ঘটনা স্থলটা ঘুরে দেখে ওরা চলে এল। গ্যারেজের মালিক এগিয়ে এলেন, তারপর রক ডিয়েগো নামের একজন মেকানিককে ডাকলেন। রক লম্বা চওড়া এমেরিকান নিগ্রো।

মালিক চলে গেলে নিয়াজ, ওদের গোয়েন্দা সংস্থার কার্ড বের করে নিজেদের পরিচয় দিল। * “সত্যিই আপনারা গোয়েন্দা!?” অবাক হয়ে প্রশ্ন করে রক। + “তোমার কি মনে হয়?” হেসে বলে প্রিন্স। * “না. .. ... মানে . .. ...তা আপনাদের জন্য কি করতে পারি?” = “এই গাড়িটা সমন্ধে জানতে চাইছিলাম। ” গাড়ির নাম্বার দিয়ে জানতে চাইল নিয়াজ।

* “আসলে কোন গাড়ি এভাবে এক্সিডেন্ট করে না, এটাকে এক্সিডেন্ট করানো হয়েছে। বা ঘটনাটা সাজানোও হতে পারে। ” + “কেন? কোন অস্বাভাবিকতা?” জানতে চাইলো প্রিন্স। * “গাড়িটা নিচু একটা খাদে পড়ে গিয়েছিল বলে আমার ধারণা . .. ... (কিছুক্ষন বিরতি দিয়ে বলল) এবং উল্টো হয়ে। গাড়িতে অল্প তেল ছিল, তাই আগুর ধরে যায়নি।

= “এটাকি তোমার একান্তই অনুমান না কোন কিছুর উপর ভিত্তি করে বলছ। ” জানতে চাইলো নিয়াজ। * “আপনারা নিজেরাই দেকবেন আসেন। ” রকের পিছু পিছু একটা ওয়ার্কসপে এসে ঢুকল ওরা দুজন। কয়েকটি গাড়ির সাথে ম্যাকের গাড়িটাও আছে।

দেখুন . .. ... (বর্ণনা করছে রক) গাড়ির পেছনের দিকটা কিছুটা গোল হয়ে বেকিয়ে গেছে, মানে কোন গাছ বা পোলে আঘাত লেগেছিল। এটা সম্ভব গাড়ি নিচু কোন খাদে পড়ে গেলে। সামনের দিকেও আঘাতের চিহ্ন আছে, কিন্তু সেটা খুব একটা জোরালো না। মানে পার্কিং অবস্থায় গাড়িটিকে সামনে থেকে অন্য কোন গাড়ি দিয়ে আঘাত করে খাদে ফেলে দেয়। ” + “কিন্তু যদি পেছন থেকে আঘাত করা হয়?” প্রিন্স প্রশ্ন করে।

* “তাহলে আঘাতের চিহ্ন অন্য রকম হত। এরকম হত না। ” = “আচ্ছা তুমি কি গাড়ির ভেতরে কিছু পেয়েছ?” * “না গাড়িটা আগে আরেক জনের দ্বায়িত্বে ছিল, সে হঠাৎ এক্সিডেন্ট করায়, বর্তমানে গাড়িটা আমি দেখছি। ” নিয়াজ ও প্রিন্স পরস্পরের চোখের দিকে তাকায়। তারপর প্রিন্স বলে, “দেখ রক, তোমাদের মেকানিকের এক্সিডেন্টটা কাকতালিও হতে পারে, তবু তুমি একটু সাবধানে থেক।

এই কেসে এখন পর্যন্ত যারাই ইনভল্ব হয়েছে হয় মারা গেছে নয়ত কিডন্যাপ হয়েছে। আর আজ আমরা যাই, কিন্তু তোমাকে আবার বিরক্ত করতে হতে পারে। ” রক বিগলিত হাসি দিয়ে বলল, “অবস্যই অবস্যই। ” ওয়ার্কসপ থেকে বের হয়ে নিয়াজ পকেটের ছোট্ট রেকডারটা অফ করল। বলল, “ছেলেটার বিশ্লেষনি ক্ষমতা বেশ।

পরবর্তিতে কাজে আসতে পারে। কি বলিস?” + “হু. .. ...” অন্যমনস্ক ভাবে বলে প্রিন্স পাগল বিজ্ঞানী-১ > পাগল বিজ্ঞানী-৩ পাগল বিজ্ঞানী-৪ পাগল বিজ্ঞানী-৫ পাগল বিজ্ঞানী-৬/শেষ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.