আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের নীলনকশা বাস্তবায়নে নিয়োজিত হাসিনা সরকারের তাঁবেদারী ও ফ্যাসিবাদী তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন!

আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে।

জনগণের দুর্দশা লাঘবের জন্য সংগ্রাম বেগবান করুন! সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের নীলনকশা বাস্তবায়নে নিয়োজিত হাসিনা সরকারের তাঁবেদারী ও ফ্যাসিবাদী তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন! নিপীড়িত জনতা সীমাহীন দুর্দশা আজ জনতাকে বিদ্রোহী করে তুলেছে। কিন্তু সরকার এ জনদুর্ভোগ লাঘবে সম্পূর্ণ উদাসীন। তারা জনবিদ্রোহ দমনেই বেশি সক্রিয়। চলছে সরকার ও বিরোধী দলের ফায়দা তোলার রাজনীতি।

তার আড়ালে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী নীলনকশা বাস্তবায়নের কাজ। আর এভাবে উপনিবেশিক শক্তি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিক, সাংস্কৃতিকসহ সর্বক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যন্ত গ্রাস করছে। এ পরিস্থিতিতে রুখে দাঁড়ানো ছাড়া এ জাতি ও জনগণের মুক্তির আর কোন পথ খোলা নেই। জনদুর্ভোগ লাঘবে উদাসীন সরকার মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের কারণে দ্রব্যমূল্য লাগামহীনভাবে বাড়ছে। সাম্রাজ্যবাদের নির্দেশ পালনের কারণে বাড়ছে গ্যাস-বিদ্যুৎ, শিক্ষা, চিকিৎসা, পরবিহন ইত্যাদির ব্যয়।

অন্যদিকে ১৯৬৯ সালের তুলনায় মেহনতি মানুষের প্রকৃত আয় নেমেছে অর্ধেকের নীচে। ফলে ব্যাপক জনগণ জীবনধারণের ন্যুনতম প্রয়োজন মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। বেকারত্ব, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস সংকট, যানজট, বন্যা, জলাবদ্ধতা, নদীভাঙ্গনসহ নানা সংকটে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। আলু, পাট, দুধ, মুরগী নিয়ে উৎপাদকদের দুরাবস্থা চরমে উঠেছে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে বন্ধ হচ্ছে কারখানা।

সরকার দলীয় গুণ্ডাবাহিনী সর্বত্র দুর্নীতি, দখলদারী, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ ইত্যাদিতে লিপ্ত হয়েছে। এই লুটের ভাগ নিয়ে চলছে কলহ, খুনোখুনি। দোর্দণ্ড ক্ষমতার জোরে তারা চরম জননির্যাতকে পরিণত হয়েছে। আর নারীরাই তাদের উচ্ছৃঙ্খলতার জঘন্যতম শিকার হচ্ছে। সাধারণ লোকেরাও আজ ক্রসফায়ার, গুপ্তহত্যার শিকার হচ্ছে।

জনগণকে জিম্মি করা হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে এ ‘ক্রসফায়ার’। কিন্তু, এসব দেখার সময় তাঁবেদার সরকারের নেই। সরকার বিদেশী প্রভুদের নীলনকশা বাস্তবায়নে অতিব্যস্ত আজ এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদ তাদের নীলনকশা বাস্তবায়নের স্বার্থেই প্রথমে ফখরুদ্দিন সরকার এবং পরে হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। উল্লেখ্য, সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বায়ন আর বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পেতে সাম্রাজ্যবাদ দেশে দেশে, অঞ্চলে সার্বিক পুনর্বিন্যাস ঘটাচ্ছে। তারা সমাজ-অর্থনীতি, রাষ্ট্র-রাজনীতি, শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যন্ত এ তৎপরতা বিস্তৃত করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় এ পুনর্বিন্যাস ও নীলনকশা বাস্তবায়নে মার্কিনের নেতৃত্বে সাম্রাজ্যবাদের প্রধান ঘাঁটি হলো ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ। অর্থনৈতিক নীলনকশার বাস্তবায়ন: সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদ তাদের ‘কাঙ্খিত খাত’গুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার যে কোন অঞ্চলে বিনিয়োগ, পরবিহন ও বাজার নিশ্চিত করতে চায়। এ কাঙ্খিত খাতের মধ্যে রয়েছে তেল, গ্যাস, কয়লা, বিদ্যুৎ, বন্দর, পরিবহন, আসিটি, কৃষি, ইপিজেড, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ইত্যাদি। এ লক্ষ্যে তারা দক্ষিণ এশীয় গ্যাস পাইপ লাইন ও বিদ্যুৎ গ্রীড নির্মাণ, এশিয়ান হাইওয়ে, রেলপথ নির্মাণ, তার সাথে নদী ও সমূদ্র বন্দরগুলোকে যুক্ত করা, গভীর সমূদ্র বন্দর নির্মাণ, ট্রানজিট সুবিধা চালু, মহা নদী সংযোগ প্রকল্প, টেলি কমিউনিকেশন হার্ব নির্মাণ ইত্যাদির মাধ্যমে গোটা দক্ষিণ এশিয়াকে একটি একক অবকাঠামোর অধীনে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। এ জন্যই সার্ক বর্তমান দশককে ঘোষণা করেছে ‘কানেকটিভিটির দশক’ হিসাবে।

এভাবে ভবিষ্যতে অভিন্ন মূদ্রা চালুসহ দক্ষিণ এশীয় ইউনিয়ন গঠনের পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই বৈদেশিক শক্তি নিজ চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন দেশের সমগ্র অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করছে। ফখরুদ্দিনের পর হাসিনা সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উপরোক্ত অর্থনৈতিক পুনর্বিন্যাস দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছে। তারা ক্ষমতায় এসেই সমূদ্রের ফখুরদ্দিনের তৈরী মডেল চুক্তির ভিত্তিতে সমুদ্রের গ্যাসক্ষেত্র ইজারা দিয়েছে। বহুজাতিক কোম্পানী শেভরনকে সিলেটের দেশী গ্যাসক্ষেত্র তুলে দিয়েছে।

তারা গোপনে ভারতমূখী অতিমোটা গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণের কাজও এগিয়ে নিচ্ছে। জনমত উপেক্ষা করে বিদেশীদের পানির দরে ফুলবাড়ি উন্মুক্ত খনি প্রকল্পের অনুমোদন দিতে চলেছে। তারা এখন পার্বতীপুর কয়লা খনিকেও এর সাথে যুক্ত করেছে। বিদেশী স্বার্থে প্রনয়ণ করছে জাতীয় কয়লা নীতি। সরকার গোপনে মার্কিনের সাথে টিফা চুক্তির কাজ প্রায় সম্পন্ন করেছে।

এর ফলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ উপরোক্ত ‘কাঙ্খিত খাতগুলো’তে সুদুরপ্রসারী অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম হবে। এ চুক্তির ফলে মেধাসত্ত্ব আইনের আওতায় তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন পণ্যের জন্য বাংলাদেশকে বিপুল অর্থ পরিশোধ করতে হবে। সরকার কৃত্রিম বিদ্যুৎ সংকট সৃষ্টি করে এই খাতকে দেশি-বিদেশী লুটেরাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। তারা হাসিনা-মনমোহন চুক্তির আওতায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। সেইসাথে বিদ্যুৎ আমদানীর নামে ভারী বিদ্যুৎগ্রীড নির্মাণ করছে যাতে পরে ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানি করা যায়।

ভারতকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার ও ট্রানজিটের অনুমতি দেয়া হয়েছে। আশুগঞ্জ দিয়ে শুধুমাত্র একবার ব্যবহারের নামে ভারী পরবিহনযোগ্য সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের সাথে ভারতমূখী ভারী সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। চলছে ভারতমূখী রেলপথ যোগাযোগ উন্নয়ন ও ট্রেন ক্রয়। ভারতের সাথে নৌপথ উন্নয়নের জন্য কয়েকটি নদীতে ড্রেজিং কাজ করা হচ্ছে।

ভারত থেকে আসছে ড্রেজার, রেলওয়ে সরঞ্জাম ইত্যাদি। ভারত সরকার এসব অবকাঠামো নির্মাণে কঠিন শর্তে ঋণ দিচ্ছে। আর এসবই সম্পাদিত হচ্ছে হাসিনা-মনমোহন চুক্তির আওতায়। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগানের আড়ালে সরকার আসলে সাম্রাজ্যবাদ ও স¤প্রসারণবাদের স্বার্থে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসার বিকাশ ঘটানোর পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন করছে। ইতিমধ্যে সরকার অনুমোদন করেছে জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ নীতি।

বাংলাদেশে ভারতীয় কোম্পানীর ব্যবহারের জন্য টেলিহার্ব নির্মাণের কাজ চলছে। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা ফোন কোম্পানী কিনে নিয়েছে। ভারতের টাটাকে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার তৈরীর কাজ। ফখরুদ্দিনের করা ‘বিনিয়োগ প্রসার ও সুরক্ষা চুক্তি’র অধীনে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে দেশী ব্যবসায়ীর অধিকার ভোগ করছে। এই সুবাদে সম্প্রতি ভারতীয় বাণিজ্য প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে ঘুরে গেছে।

তারা জ্বলানী ও বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশের পাওয়া কোটা সুবিধা ভোগ করা জন্য ভারতীয়রা গার্মেন্ট কারখানা কিনে নিচ্ছে। তারা এই ব্যবসার ৪০% শতাংশ দখল করেছে। সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা এসইজেড প্রতিষ্ঠা করছে। এতে সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয়দের বিনিয়োগের জন্য সরকার আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।

এদিকে হাইব্রীড ও জিএম বীজসহ কৃষি বাণিজ্যে নিয়োজিত বহুজাতিক কোম্পানি মনসান্টো ভারতীয় শাখার অধীনে বাংলাদেশে উপশাখা খুলেছে। বিদেশী কোম্পানি ও তাদের দেশী এজেন্টদের বন্ধ্যা বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতি আর অবিক্রীত সার কৃষককে গছাতে এ সরকার ভর্তুকী দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই সরকার নরসিংদী, রংপুর, দিনাজপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় রপ্তানীমুখী কৃষি উৎপাদন এলাকা বা কৃষি ইপিজেড প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য প্রণয়ন করা হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ নির্দেশিত জাতীয় কৃষি নীতি, জীব প্রযুক্তি নীতি ইত্যাদি। শিক্ষা-সংস্কৃতি-স্বাস্থ্যসহ সর্বব্যাপী পুনর্বিন্যাস উপনিবেশিক শক্তি সহায়ক হসাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী, জনসংখ্যা, ধর্ম, সড়ক ও নগর সকল কিছুরই নীতি ও পরিকল্পনা নির্ধারণ করছে।

সেই অনুসারে চলছে সমাজের পুনর্বিন্যাস। বর্তমান তাঁবেদার সরকার সাম্রাজ্যবাদ নির্দেশিত জাতীয় শিক্ষানীতি অনুমোদন করেছে। এতে আইটি শিক্ষিত শ্রমিক তৈরীকে প্রধান গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। উচ্চ শিক্ষার ২০ বছর মেয়াদী কৌশল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ইত্যাদির অনুমোদন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষাকে নতুন পুনর্বিন্যস্ত অর্থনীতির স্বার্থে উপযোগী করে ঢেলে সাজানো হয়েছে।

এসব নীতিতে সাম্রাজ্যবাদ নির্দেশিত বেসরকারিকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ, ভর্তুকী প্রত্যাহার নীতির কারণে শিক্ষা উচ্চমূল্যের পণ্যে পরিণত হয়েছে। এজন্য বাজেটে বেসকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর বসানো হয়েছে ভ্যাট। একইভাবে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি অনুমোদনের ফলে সরকারি হাসপাতালে নানা ধরণের ফি আরোপ করে চিকিৎসা সেবাকে আরো দুর্লভ করে তোলা হয়েছে। ভারত সমর্থিত মুজিব সরকার উৎখাতের পর সৌদি-পাকিস্তান মদদপুষ্ট বিএনপি-জামাত জোট রাজনৈতিক স্বার্থে শিক্ষা, সংস্কৃতি, সংবিধান ও রাষ্ট্রের ইসলামীকরণ করেছিল। হাসিনা সরকার ভারতীয় স¤প্রসারণবাদ ও দলীয় আদর্শগত আধিপত্য সৃষ্টির লক্ষ্যেই শিক্ষা, সংস্কৃতি, সংবিধান ও রাষ্ট্রে তথাকথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করছে।

সে অনুসারেই শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সামরিক পুনর্বিন্যাস চলছে যেভাবে সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদ তাদের বিনিয়োগ ও স্বার্থের নিরাপত্তার জন্য আঞ্চলিক সামরিক ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজাচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা হুমকি হলো একদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তি এবং অপরদিকে দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের বিপ্লব ও বিদ্রোহ। ইতিমধ্যে সাম্রাজ্যবাদ জাতিসংঘ শান্তি মিশনের আওতায় জাতীয় সামরিক বাহিনীকে অধীনস্ত করেছে। সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের নামে এবং সোফা, হানা, কারিগরিসহায়তা ইত্যাদি নানা চুক্তির মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদ দক্ষিণ এশিয়ায় অবাধ সামরিক হস্তক্ষেপ ও অনুপ্রবেশের অধিকারভোগ করছে।

‘সন্ত্রাসবাদ বিরোধী দক্ষিণ এশীয় যৌথ টাস্ক ফোর্স’ গঠন, অবৈধ মাদক ও সংগঠিত অপরাধ দমন ও বন্দী বিনিময় চুক্তি এসবই হলো সামরিক পুনর্বিন্যাস নীলনকশার অংশ। স¤প্রতি হাসিনা-মনমোহন চুক্তির মাধ্যমে এসব বিষয় চূড়ান্ত করা হয়েছে। কিন্তু চুক্তির আগেই আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি ভঙ্গ করে তাঁবেদার সরকার বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী আসামের জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের নেতাদের ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে। এভাবে তারা বাংলাদেশকে ভারতের নিপীড়িত জাতিগুলোর সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রাম দমনের যুদ্ধে অংশীদার বানিয়েছে। এ সরকার ক্ষমতায় এসেই ভারত ও মার্কিনের সাথে বেশ কয়েকটি যৌথ সামরিক মহড়া করেছে।

মার্কিনীরা আমাদের সমূদ্রসীমাসহ সীমান্ত জরীপ করেছে এবং ব্যবস্থাপনায় অনুপ্রবেশ করেছে। এ সরকার বিডিআরকে দুর্বল করেছে। তারা ভারতের সাথে যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এভাবে সীমান্তকে ভারতীয়দের নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। নতজানু এ সরকারের আমলে সীমান্তে ৭৫জন বাংলাদেশী নিহত হলেও হাসিনা-মনমোহন সমঝোতায় এ হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা এবং বন্ধের কোন সুস্পষ্ট নির্দেশ নেই।

বরং স¤প্রতি বিএসএফ-এর সমর্থন ভারতীয় খাসিয়ারা সিলেটের জৈন্তাপুরে প্রবেশ করে দিনের পর দিন চাষবাস করলেও সরকারের নির্দেশে বিডিআর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। জলবায়ু, পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার নামে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মার্কিন ও ভারতের সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাষ্ট্রের ফ্যাসিকরণ পুনর্বিন্যাসের অন্যতম কর্মসূচী জনগণের বিপ্লব ও বিদ্রোহ দমনের জন্য সামরিক তৎপরতার পাশাপাশি রাষ্ট্র ও সরকারের ফ্যাসিকরণ করা হলো এ সাম্রাজ্যবাদী-স¤প্রসারণবাদী পুনর্বিন্যাসের অন্যতম কর্মসূচী। দেশে দেশে জরুরী অবস্থা জারি, সন্ত্রাস দমন আইন তৈরী, সন্ত্রাস দমনের নামে ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার, সামরিক অভিযান পরিচালনা করা, গণমাধ্যম, সভা-সমাবেশ ও সংগঠনের উপর নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণের প্রতিরোধকে দমন করা হচ্ছে। এভাবে রাষ্ট্র ও সরকারগুলো হয়ে উঠছে ফ্যাসিবাদী।

স¤প্রতি হাসিনা সরকার বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, পত্রিকা ও অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারের নির্দেশে শ্রমিক ও ছাত্রদের আন্দোলনসহ বিভিন্ন প্রতিবাদী সভা-সমাবেশে পুলিশ ব্যাপক হামলা, বাধা প্রদান ও মামলা করছে। অভিনব ঘটনা হলো পুলিশ ও প্রশাসন আগেই শ্রমিক, ছাত্র ও পাহাড়ি জনগণের আন্দোলন কর্মসূচির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। ক্রসফায়ার অব্যহত রয়েছে এবং তার পক্ষে সরকারের ওকালতি করছে। তারা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে।

গণবিক্ষোভ দমনের জন্য মার্কিনীরা পুলিশকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তারা অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যায়ে ছাত্রদের সংগঠন ও প্রতিবাদী কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং কঠোর শৃঙ্খলাবিধি তৈরী করেছে। রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপনিবেশিক পুনর্বিন্যাস সাম্রাজ্যবাদী-সম্প্রসারণবাদ পুনর্বিন্যাস কর্মসূচী বাস্তবায়নের পথে দেশগুলোর দুর্নীতিগ্রস্ত, দুর্বৃত্ত রাজনীতি এবং রাষ্ট্রের আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা হলো অন্যতম প্রতিবন্ধক। এই প্রতিবন্ধকতা দুর করতে ‘গণতন্ত্র ও সুশাসন’-এর নামে রাজনৈতিক ব্যবস্থা, রাষ্ট্রের আইন, সংবিধান ইত্যাদি সংস্কার করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে ভাড়াখাটা এনজিও-মিডিয়ার দুর্নীতি বিরোধী প্রচারণা, ১/১১ পরবর্তী দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের শায়েস্তা করা, দুর্নীতিদমন কমিশন গঠন, দিন বদলের রাজনীতি নির্বাচনী সংস্কার ইত্যাদি ছিল একই সূত্রে গাঁথা।

সরকার ’৭২ সংবিধান পুনঃপ্রবর্তনের নামে আদতে সাম্রাজ্যবাদ-সম্প্রসারণবাদ নির্দেশিত রাষ্ট্রীয় সংস্কারই বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী-সম্প্রসারণবাদ নীলনকশা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দেশে দেশে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশীয় স্টেট ডিপার্টমেন্ট, টুইসডে গ্রুপ, ডিএইট, জাতিসংঘ, সিআইএ, র ইত্যাদি সংস্থা নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখছে। নীলনকশা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করতে সার্ক, বিমসটেক ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় শীর্ষ বৈঠকগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে। সম্প্রতি হাসিনা-মনমোহন স্মারক চুক্তিতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় ভারতকে পূর্ণ সমর্থনের অঙ্গীকার করা হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ভারতের অধীন হয়ে পড়বে।

এ সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ভারতকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ লাভে সমর্থন করবে বাংলাদেশ। সম্প্রসারণবাদী চরিত্রের কারণে এমনিতেই বৃহৎ রাষ্ট্র ভারত দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জন্য নিরাপত্তা হুমকি হিসাবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের ত্রিসীমানা ভারত বেষ্টিত হওয়ায় তা নিরাপত্তা সংকটে রূপ নিয়েছে। অথচ সেই ভারতকে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ প্রাপ্তির জন্য সহায়তা করার মধ্যে ভারতের কোলে আশ্রয় নেয়া এক প্রতিরক্ষানীতির প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সহায়ক সাংস্কৃতিক ও মতাদর্শগত তৎপরতা একদিকে সাম্রাজ্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদ তার পুনর্বিন্যাস কর্মসূচীর সমর্থনে বুদ্ধিবৃত্তিক, সাংস্কৃতিক, গণমাধ্যমগত প্রতিষ্ঠান ও তৎপরতা গড়ে তুলছে।

বাংলাদেশে এ ধরণে কর্মকাণ্ডেরর জন্য সিপিডি, টিআইবি, সুজন, প্রথম আলো, ডেইলী স্টার খ্যাতি অর্জন করেছে। হাসিনা-মনমোহন সমঝোতা অনুসারে রবীন্দ্রনাথের ১৫০তম জন্ম বার্ষিকী ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে পালন করা হবে। এটা ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের আদর্শগত প্রভাবের কাছে আত্মসমর্পনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও স্মারক। জনদুর্ভোগ হতে জনবিদ্রোহ জননদুর্ভোগের পাশাপাশি সরকারের তাঁবেদারি ও ফ্যাসিবাদী তৎপরতা দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্রমেই ক্ষুব্ধ করে তুলছে। সরকারের তাঁবেদারি বিষয়ে এখনও জনগণ যথেষ্ট সচেতন না হলেও কোন কোন পদক্ষেপে জনগণ সরাসরি ভুক্তভোগী হচ্ছে।

সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কারণে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, চিকিৎসা সেবা, টিউশন ফি ইত্যাদি বৃদ্ধির কারণে ছাত্র-জনতার মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। উন্মুক্ত কয়লা খনির কারণে বসতি উচ্ছেদ, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড, বিডিআর ঘটনা ইত্যাদি জন মনে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। অপরদিকে, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ ও দমন-নিপীড়নের জন্য শ্রমিক, ছাত্র, সাংবাদিক, পাহাড়ি জাতিসমূহ এবং গণতান্ত্রিক ব্যক্তি ও সংগঠনসহ আপামর জনগণ ক্ষুব্ধ হচ্ছে। অপরদিকে সার্বিক পরিস্থিতি এতটাই দুর্বিসহ পর্যায়ে গেছে যে, বিক্ষুব্ধ জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে নেমে আসছে। গত বছর আমরা বিডিআর বিদ্রোহ দেখেছি।

সা¤প্রতিককালে গার্মেন্ট, টেক্সটাইল, নৌযান, তাঁত, খনিসহ বিভিন্ন শ্রমিকদের আন্দোলন দেখেছি। দেখেছি আলু চাষী, পোল্ট্রী ও ডেইরী খামারিদের বিক্ষোভ। শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। সারাদেশে অব্যহত রয়েছে বিদ্যুত-পানি-গ্যাসের দাবীতে বিক্ষোভ। নারী নির্যাতন, ক্রসফায়ার এবং পাহাড়ি জনগণের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে উঠছে।

বেগবান হচ্ছে জাতীয় সম্পদ ও কয়লা খনি রক্ষার আন্দোলন। ক্রমশঃ সরকারের তাঁবেদারী ও ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলনও দানা বাঁধতে শুরু করেছে। এক কথায় জনদুর্ভোগ হতে দেশব্যাপী এক জনবিদ্রোহের ঢেউ জেগে উঠছে। শাসকশ্রেণীর তাঁবেদারী ও ফ্যাসিবাদী রাজনীতির তরঙ্গ এমন এক পরিস্থিতিতে জনগণের ক্ষোভকে পুঁজি করে নিজেদের হারানো অবস্থান ফিরে পেতে চেষ্টা করছে বিএনপি। এজন্য তারা লোক দেখানো আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছে।

আ.লীগের মত সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদী নীলনকশা বাস্তবায়নের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেই বিএপি গত নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। বিনিময়ে বিএনপি পেয়েছে তারেক, কোকোসহ দুর্নীতিদায়গ্রস্ত বিএনপি নেতাসহ দলের বিপর্যয় থেকে সুরক্ষা আর আ.লীগ পেয়েছে ক্ষমতা। তাই সরকারের তাঁবেদারীর লোক দেখানো বিরোধীতা করা ছাড়া আপাততঃ বিএনপি বেশি কিছু করতে সক্ষম নয়। অপরদিকে আওয়ামীলীগ একাত্তরের গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের জনপ্রিয় দাবীকে সরকারের তাঁবেদারীকে আড়াল করা এবং জনগণের উপর ফ্যাসিবাদী আক্রমণের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। তারা দলীয় ও অঙ্গসংগঠনগুলোকে এই ইস্যুতে এমনভাবে মাঠে নামিয়েছে যেন জনগণের সামনে এর চেয়ে বড় কোন ইস্যু নেই।

জনগণের যে কোন ন্যায্য আন্দোলন, প্রতিবাদকে নির্বিচারে ‘যুদ্ধপারধীদের বিচারকে বাধাগ্রস্ত করা’র জন্য চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাদের যুদ্ধাপরাধীদের সহযোগী লেভেল এঁটে দেয়া হচ্ছে। তাদের উপর যে কোন দমন-পীড়ন ন্যায্য বলে দাবী করা হচ্ছে। এভাবে গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তিসহ জনগণের উপর তীব্র রাজনেতিক ও শারিরীক আক্রমণ পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু, ১৯৭২ সালের আ.লীগের করা সিমলা চুক্তির কারণে পাকিস্তানী সামরিক ও রাজনৈতিক যুদ্ধপরাধী ও গণহত্যাকারীদের বিচার তার পক্ষে করা সম্ভব নয়।

যে কারণে ’৯৩-এ ‘ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র আন্দোলনে পেছন থেকে ছুরি মোরে ৯৬-এ ‘গোলাম আজমের দোয়া’ নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া আ.লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য কিছু করে নি। তবে ২০০৫ সালে মার্কিনের কৌশলগত মিত্রে পরিণত হয়ে একক আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ। ফলে আওয়ামীলীগ এই সময়ে ভারতের স্বার্থে তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি-পাকিস্তান অক্ষ সমর্থিত জামাতকে পর্যদুস্ত করার এক মোক্ষম সুযোগ পেয়েছে। তাই তারা এই সুযোগে যুদ্ধাপরাধ নয়, ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’-এর দায়ে কয়েকজন চিহ্নিত রাজাকার-আলবদরদের শাস্তির ব্যবস্থা করছে। আবার এ আশঙ্কাও থাকছে যে, জামাতের আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং শ্রেণী ঐক্যের কারণে আওয়ামীলীগ তাদের বৃহৎ অংশকেই ভিন্নভাবে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ করে দেবে, যেমনটা তারা আগেও দিয়েছিল।

সুতরাং আ.লীগ প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধপরাধীদের বিচার করতে রাজনৈতিকভাবে অক্ষম। কিন্তু সাধারণতঃ ফ্যাসিবাদ যা করে থাকে, ঠিক তেমনি এই জনপ্রিয় ইস্যুকে আ.লীগ সরকার জনগণের দুর্দশা ও তাঁবেদারীকে আড়াল করে জনগণের উপর দমনপীড়ন চালানোর রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। লক্ষণীয় হলো দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও বুদ্ধিজীবীরা এই দুই দলের প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি করছে। মুক্তিকামী জাতি ও জনগণের নতুন রাজনীতির পতাকা তলে সমবেত হোন! বিপ্লবী সংগ্রাম বেগবান করুন! এ অবস্থায় আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, কোন সংস্কার, সরকার পরিবর্তন কিংবা দাবী-দাওয়া আদায় করে বাংলাদেশের জনগণের মুক্তি আসতে পারে না। সাম্রাজ্যবাদ ও স¤প্রসারণবাদের উপনিবেশিক শোষণ নিপীড়ন হতে জাতীয় মুক্তি ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অর্জন করতে হলে চাই বিপ্লব।

আর এদেশের উপনিবেশিক শক্তির দালাল বড় বুর্জোয়া ও সামন্ত শাসকশ্রেণীকে উৎখাত করে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের গণতান্ত্রিক সংবিধান, রাষ্ট্র ও সরকার কায়েম করা ছাড়া এ বিপ্লব সম্পন্ন হতে পারে না। সুতরাং, মুক্তিকামী জাতি ও জনগণের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই; সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ ও তার দালাল শাসকশ্রেণীকে উৎখাত করে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে, আসুন, #. জনগণের দুর্দশা লাঘবের জন্য সংগ্রাম গড়ে তুলি! #. সাম্রজ্যবাদ ও ভারতীয় স¤প্রসারণবাদের নীলনকশা বাস্তবায়নে নিয়োজিত হাসিনা সরকারের তাঁবেদারী ও ফ্যাসিবাদী তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি! সোচ্চার কণ্ঠে আওয়াজ তুলি: যেখানে তাঁবেদারী সেখানেই প্রতিরোধ! ১. হাসিনা-মনমোহন তাঁবেদারী চুক্তি অবিলম্বে বাতিল কর! ২. রেলওয়ে, নদী ও সড়ক পথ, বন্দর, বিদ্যুৎগ্রীড, গ্যাস পাইপ লাইন, টেলিহার্ব ট্রানজিটসহ সাম্রাজ্যবাদ-স¤প্রসারণবাদী কানেকটিভিটি প্রকল্পসমূহ বন্ধ কর! ৩. মার্কিনের সাথে টিফা চুক্তি, ভারতের সাথে ‘বিনিয়োগ প্রসার ও সুরক্ষা চুক্তি’ বাতিল কর! ৪. কয়লানীতি ও মডেল পিএসসি বাতিলসহ বহুজাতিক কোম্পানির কাছে গ্যাসব্লক, কয়লা খনি বরাদ্দ দান বন্ধ কর! ৫. সোফা, হানা, বন্দী বিনিময়সহ গোপন ও প্রকাশ্য সকল সামরিক চুক্তি, যৌথ মহড়া বাতিলসহ সকল সাম্রাজ্যবাদী-স¤প্রসারণবাদী সামরিক তৎপরতা কর! ৬. শিক্ষা, সংস্কৃতি, সংবিধানের উপনিবেশিকীকরণ ও ফ্যাসিকরণ বন্ধ কর! ৭. উপনিবেশিক জাতীয় শিক্ষানীতি, ইউজিসি-র কৌশলপত্র বাতিল কর! স্বাস্থনীতিসহ সরকারি হাসপাতালের ইউজার ফি বাতিল কর! যেখানে ফ্যাসিবাদ সেখানেই প্রতিবাদ! ৮. ক্রসফায়ারবন্ধ কর! সন্ত্রাস দমন আইন, শ্রম আইনসহ সকল কালো আইন বাতিল কর! ৯. বাক স্বাধীনতা, সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার দিতে হবে! সভা-সমাবেশে হামলা, মামলা, নিষেধাজ্ঞা তুলে নাও! ১০. পাকিস্তানী গণহত্যাকারীসহ সকল যুদ্ধাপরাদীদের বিচার কর! যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে ফ্যাসিবাদী রাজনীতি ও দমনপীড়ন বন্ধ কর! যেখানে দুর্ভোগ সেখানেই সংগ্রাম! ১১. ন্যুনতম ৭হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণ কর! ১২. দ্রব্যমূল্যসহ তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম কমাও! রেশন চালু কর! ১৩. গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, বন্যা, নদীভাঙ্গন ও জলাবদ্ধতা সংকট নিরসন কর! ১৪. কৃষি উপকরণের দাম কমাও! কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত কর! কৃষিতে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বন্ধকর! ১৫. ছাত্রলীগ-যুবলীগের তৎপরতা তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ কর! জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ কর্তৃক প্রকাশিত লিফলেট। তারিখ: ৩রা আগষ্ট ২০১০

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.