আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় কমিটি

মানুষের সমাজে এক মুহূর্ত বাঁচতে চাই

ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় কমিটি পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঘাইছড়ি ও খাগড়াছড়িতে ফেব্র“য়ারি মাসে সংঘটিত হামলা অগ্নিসংযোগ লুটপাট ও হত্যার ঘটনাবলী বিষয়ে ‘বাঘাইছড়ি-খাগড়াছড়ি ঘটনাবলী গণতদন্ত কমিটি’র রিপোর্ট ৪ জুলাই, ২০১০ পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী জনগণের উপর রাষ্ট্রের বিভিন্ন মাত্রিক নির্যাতন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই জারি আছে। এ অঞ্চলের পৃথক ভৌগলিক ও নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বাধীনতার পরপরই এখানে বসবাসরত বিভিন্ন ক্ষুদ্্র জাতিসত্তা তাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষার জন্য দাবি উত্থাপন করেছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালীদের থেকে তাদের নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতার কারণে এ দাবির ন্যায্যতা সত্ত্বেও এ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন কোন সরকারই তা পূরণ করেনি। বরং জাতীয়তার পরিচয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভ্রান্ত ধারনা দ্বারা পরিচালিত হয়ে ১৯৭২ সালের সংবিধানে বাংলাদেশে বসবাসকারী সব মানুষ বাঙালী বলে ঘোষণা করে বাংলাদেশকে এক সমজাতীয় (যড়সড়মবহবড়ঁং) রাষ্ট্র হিসেবে গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় পাহাড়ে তৈরি হওয়া অসন্তোষের পটভূমিতে এ অঞ্চলের মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার সুরক্ষা করার দাবির ভিত্তিতে তৈরি হওয়া প্রতিরোধকে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক উপায়ে মোকাবিলা করার নীতি গ্রহণ করা হয়।

একদিকে সহিংস পন্থায় প্রতিরোধ মোকাবিলা করার জন্য সামরিক ও অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর বিপুল সমাবেশ করা হয়, অন্যদিকে পাহাড়ী জনগণকে তাদের পিতৃপুরুষের মাটিতে সংখ্যালঘিষ্ঠ জনগোষ্ঠীতে পরিণত করার জন্য সমতল থেকে দরিদ্র মানুষজনকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সেটেল বা বসত স্থাপন করানো হয়। পাহাড়ী জনগণ ঐতিহ্যগতভাবে ভূমির উপর যে মালিকানা ভোগ করে এসেছেন তা থেকে তাদের বঞ্চিত করার জন্য বাঙালীদের জন্য জমি বন্দোবস্ত দেওয়া, পাহাড়ীদের ভোগদখলকৃত জমি থেকে তাদের উৎখাত, সশস্ত্র বাহিনীর সাহায্যে তাদের উপর হামলা করা এক নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের ধারাবাহিকতার সর্বশেষ নজির হচ্ছে রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক ইউনিয়নে পাহাড়ী জনগণের উপর হামলা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও খুন। গত ১৯ ও ২০ ফেব্র“য়ারী ২০১০ এখানে সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতে সেটেলার বাঙালীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের উপর হামলা করে তাদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ ছাড়া গুলি করে দুজনকে হত্যা করা হয়।

সে সময় গণমাধ্যমে যেসব তথ্য প্রকাশ পায় তা থেকে পাহাড়ে সংঘটিত বর্বরতার কাহিনী দেশের মানুষ জানতে পেরেছিল। সাজেকের ঘটনার প্রতিবাদে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ-এর ডাকা অবরোধ কর্মসূচী চলাকালে ২৩ ফেব্র“য়ারী খাগড়াছড়ি শহরের দুটি পাড়া, মহাজন পাড়া ও সাতভাই পাড়ায় নতুন করে পাহাড়ী মানুষের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। এসব ঘটনা পরিপ্রেক্ষিতে ‘ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় কমিটি’ ফেব্র“য়ারি মাসে বাঘাইছড়ি ও খাগড়াছড়িতে সংঘটিত ঘটনাবলী তদন্ত ও তদন্ত রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করবার লক্ষ্যে ‘বাঘাইছড়ি-খাগড়াছড়ি ঘটনাবলী গণতদন্ত কমিটি’ গঠন করে। কমিটির গঠন নিম্নরূপ ছিল : ডঃ আকমল হোসেন (আহ্বায়ক), অনন্তবিহারী খীসা, অধ্যাপক জাহিদ হাসান মাহমুদ, ফয়জুল হাকিম, শিবলি কাইউম. মাসুদ খান ও এ্যাডভোকেট ভুলন ভৌমিক। গত ৭ জুন থেকে ৯ জুন গণতদন্ত কমিটির অনুসন্ধানী দল খাগড়াছড়ি সফর করে।

সফরের আগ মুহুর্তে ব্যক্তিগত কারণে অধ্যাপক জাহিদ, মাসুদ খান ও শিবলি কাইউম দলের সঙ্গে মিলিত হতে পারেননি। তবে বাঙলাদেশ লেখক শিবিরের প্রতিনিধি মুঈনুদ্দীন আহ্মদ এবং দৈনিক কালের কন্ঠের সাংবাদিক ও সংস্কৃতির নয়াসেতু নামের সংগঠনের প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান তুহিন দলের সঙ্গে খাগড়াছড়ি যান। এছাড়া খাগড়াছড়িতে অনন্তবিহারী খীসা ও চট্টগ্রাম থেকে এ্যাডভোকেট ভুলন ভৌমিক দলের সঙ্গে যোগ দেন। অনুসন্ধানী কার্যক্রম গণতদন্ত কমিটির অনুসন্ধান পদ্ধতির মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ এবং খাগড়াছড়ি শহরের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি কয়েকজন জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, আইনজীবীর কাছ থেকে হামলার বিবরণ, সরকারের গৃহীত প্রশাসনিক কার্যক্রম ও ত্রাণ বিতরণ সম্পর্কে অবহিত হওয়া এবং সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে মতামত গ্রহণ অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া সাজেকের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় যেয়ে স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে তাদের বিবরণও সংগ্রহ করা হয়।

এর বাইরে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ-এর স্থানীয় কয়েকজন নেতার কাছ থেকে বিদ্যমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত হয় কমিটি। জেলা প্রশাসনের অধিকর্তা হিসাবে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে সরকারী বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর ব্যস্ততার জন্য তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা যায়নি। মহাজন পাড়া ও সাতভাইয়া পাড়ার ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের বক্তব্য গণতদন্ত কমিটি ৭ জুন খাগড়াছড়ি শহরের মহাজন পাড়া ও সাতভাইয়া পাড়ার ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের সাথে কথা বলেন। তাদের বক্তব্যের সারাংশ নিম্ন প্রদান করা হলো।

২৩ ফেব্র“য়ারী দুপুরে সেটেলারদের অগ্নিসংযোগের সময় ঘটনাস্থলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তারা হামলাকারীদের বাধা দেয়নি। ঘটনার সময় খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। তার মধ্যে এ রকম ঘটনা কীভাবে ঘটে! ঘটনার দিন পুলিশ প্রথম গুলি করে পাহাড়ীদের এলাকা ছাড়া করে ও তারপর সেটেলার বাঙালীরা তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। ঘটনার সময় দমকল বাহিনীকে আগুন নেভানোর কাজে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।

আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর দমকল কর্মীদের আসতে দেখা গেছে। ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল তাদের আসামী করে মামলা হয়েছে। মহাজন পাড়ার ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এরকম একজন জানালেন যে তাকে ধরে নিয়ে ৫১ ও ৫৪ ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িত বলে চিহ্নিত অপরাধি বাঙালীদের কাউকে কাউকে আটক করা হলেও তাদের পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থদের দেওয়া ত্রাণ নিয়ে বৈষম্য করা হয়েছে। প্রতিশ্র“ত ৫ বান টিনের বদলে ৪ বান দেওয়া হয়েছে। নগদ ১৫,০০০ টাকা ও ৫০ কেজি চাল সবাইকে দেওয়া হয়নি। ক্ষতিগ্রস্থ ৬ পরিবার কিছুই পায়নি। মহাজন পাড়ায় বাড়ির মালিকরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন কিন্তু ভাড়াটেদের কোন ক্ষতিপূরণ করা হয়নি।

বাঙালী মালিকানাধীন কোন দোকানে হামলা হয়নি, অথচ পাহাড়ীদের ছোট ছোট দোকানের ক্ষতি করা হয়েছে। বিদেশি ত্রাণ সংস্থাকে ঘটনাস্থলে আসতে দেওয়া হয়নি। এনজিওরা সাহায্য করতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। ঘটনার পর থেকে খাগড়াছড়িতে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতদিন পরেও সামান্য কোন সমস্যা নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে মিছিল নিয়ে যাওয়া যায় না।

সাজেক এলাকা পরিদর্শন গণতদন্ত কমিটি ৮ জুন সকালে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থানার সাজেক ইউনিয়নের গঙ্গারামমুখ নামের একটি পাড়া পরিদর্শন করে। এটি ১৯-২০ ফেব্র“য়ারী সেটেলার ও প্রশাসনের যৌথ হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা যেখানে ব্যাপকভাবে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া এবং গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে বলে পাহাড়ীরা অভিযোগ করেছেন। গণতদন্ত কমিটি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে সামরিক বাহিনীর এক ক্যাম্পে বাধার সম্মুখীন হয়। কী উদ্দেশ্যে আসা হয়েছে, কোন গবেষণা করার জন্য কি না, কোন এনজিওর সঙ্গে যুক্ত কি না, এসব প্রশ্ন করা হয় তাদের। প্রায় আধ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়।

ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে রাস্তার দুদিকে আগুনে পোড়া বাড়িঘর দেখা গেছে। কোন কোনটি তখন পর্যন্ত পুনঃনির্মিত হয়নি। এমন একটি ঘরের পোড়া বাঁশের খুটি থেকে একটি পুড়ে যাওয়া হ্যারিকেন ঝুলতে দেখা গেছে। অন্যদিকে পুনঃনির্মিত বাড়িঘরগুলোকে পোড়া বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। নতুন টিনের সঙ্গে পুড়ে যাওয়া টিন দিয়ে কোন কোন বাড়ি পুনঃনির্মিত হয়েছে।

আগুনে পোড়া বিদেশি ত্রাণকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রাস্তার পাশে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলে একজনের বাড়িতে বসে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাদের মধ্যে একজনের স্বামী নিহত হয়েছেন, অন্যজনের স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এখানকার মানুষের বক্তব্যের প্রধান বিষয়গুলো হচ্ছে : প্রতিশ্র“ত সাহায্য নিয়ে প্রশ্ন আছে। ঘর তৈরির জন্য ৫ বান টিন ঠিক মত দেওয়া হয়নি।

কেউ ৪ বান পেয়েছেন, কেউ ১ বান পেয়েছে। ২০ কেজি চাল প্রথম ৩ মাস দেওয়া হলেও পরে আর দেওয়া হচ্ছে না। নিহতদের প্রতি পরিবারকে ১ লক্ষ করে টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু টাকার চেক পেতে অনেক ঘুরতে হচ্ছে, এখনও পাওয়া যায়নি। সাজেক এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে আছে।

এখানে বাইরের কাউকে আসতে দেওয়া হয় না। ঘটনার পরপর টঘউচ ঈড়ঁহঃৎু ঈযরবভ-কে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে। ইজঅঈ, টঘউচ, পদক্ষেপ-এর সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এনজিও পরিচালিত শিক্ষাদান কার্যক্রমও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। “পাহাড়ীরা তাদের নিজস্ব উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারছে না।

নিজস্ব উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী সেনা নিয়োজিত মজুর দিয়ে বহন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। তথাকথিত বাঙালী ছাত্রপরিষদ দিয়ে চাঁদাবাজি করানো হচ্ছে। ” ২০০৮ সালে আরো একবার এখানে হামলা-নির্যাতন করা হয়েছিল। বনায়নের নামে পাহাড়ীদের ভূমি দখল করার পাঁয়তারা হচ্ছে। তাছাড়া সাজেকের ভৌগলিক অবস্থান (গঙ্গারামমুখে একটি স্থল বন্দর করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে শোনা যায়) দখল চেষ্টার অন্যতম একটি কারণ।

সামরিক বাহিনী এক অদৃশ্য সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে আছে। নাগরিক সমাজের সঙ্গে মত বিনিময় ৮ জুন সন্ধায় খাগড়াছড়িতে পাহাড়ী জনগণের প্রতিনিধিস্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে গণতদন্ত কমিটি বুঝতে পেরেছে যে বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সম্পর্কে তাদের রয়েছে তীব্র অসন্তোষ। বিএনপি-জামায়াত যেভাবে সা¤প্রদায়িকতার চর্চা করে বলে ভাবা হোত এখন দেখা যায় আওয়ামী লীগও ভিন্ন কিছু নয়। “বিএনপির তুলনায় আওয়ামী লীগ আমলে যা হচ্ছে তা অনেক খারাপ। খাগড়াছড়ির অনেক আওয়ামী লীগার সমঅধিকার আন্দোলনের সমর্থক।

নূরন নবী চৌধূরী আওয়ামী লীগের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি হয়েও সমঅধিকার আন্দোলনের সভাপতি হিসাবে কাজ করেন। ” পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাহ আলম খাগড়াছড়ি এসে মন্তব্য করেছেন যে, ১৯৯৭ সালের শান্তি চুক্তি ‘কতগুলো উচ্ছৃঙ্খল লোকের সঙ্গে করা হয়েছিল’। পার্বত্য চট্ট্রগ্রাম ভূমি সংস্কার কমিশনের ব্যাপারেও নাগরিক সমাজের আপত্তি আছে। এছাড়া খাগড়াছড়িতে সভা-সমাবেশের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে তাদের মধ্যে অসন্তোষ লক্ষ করা গেছে। গণতদন্ত কমিটির সদস্য অনন্তবিহারী খীসা প্রণিত “‘খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সা¤প্রতিক আইনশৃংখলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও অবহিতকরণের জন্য’ গত ১৬ই মার্চ ২০১০ তারিখে টাউন হলে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভার মূল্যায়ন, বিচার বিশ্লেষণ”- শিরোনামের একটি ভাষ্য গণতদন্ত কমিটিকে দেয়া হয়েছে।

এতে তিনি যেসব প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তাতে প্রতীয়মান হয় যে, সভা আহ্বানকারী প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফেব্র“য়ারী মাসে সংঘটিত হামলা-নির্যাতন বিষয়ে কোন কার্যকর আলোচনা এবং এ জাতীয় ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধের কোন পথ বের করা সভার উদ্দেশ্য ছিল না। অনুসন্ধানী দলের পর্যবেক্ষণ ফেব্র“য়ারী মাসে বাঘাইছড়ি ও খাগড়াছড়িতে পাহাড়ী জনগণের উপর হামলা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও হত্যাকান্ডের যে ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। পাহাড়ী জনগণের ভূমি দখল করে সেখানে বহিরাগত বাঙালী সেটেলকরণের রাষ্ট্রীয় নীতির ধারাবাহিকতার একটি প্রকাশ হচ্ছে ফেব্র“য়ারীর ঘটনা। প্রশাসনÑ সিভিল ও মিলিটারিÑ তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখছে না। বিএনপি-জামায়তের মতো আওয়ামী লীগও তথাকথিক সমঅধিকারের নামে সা¤প্রদায়িক ও জাতিগত নিপীড়নের সঙ্গে যুক্ত থেকে নিজেদের চেহারা উন্মোচিত করছে।

১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিশেষ করে পাহাড়ী জনগণের ভূমি সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। বর্তমানে গঠিত ভূমি কমিশন এ সমস্যা সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। ১৯৯৭ সালের চুক্তির পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের বিরুদ্ধে নতুন করে যে প্রতিরোধ আন্দোলন বিকশিত হচ্ছে এ ধরনের হামলা এবং সভা-সমাবেশের উপর বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে তা সমূলে ধ্বংস করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। ৪ জুলাই ২০১০


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.