আট বছরের শিশু ধর্ষণের বিচার চেয়ে পথে পথে ঘুরছেন মা। ঘটনার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও নীরব পুলিশ। কারণ, ধর্ষকের ভাই এবং চাচা পুলিশে চাকরি করে। সমাজপতিদের চোখ রাঙানিও শিশুটির পরিবারের ওপর। থানায় অভিযোগ দিয়ে উল্টো হুমকির মুখে ধর্ষিতার পরিবার।
বোয়ালমারীর রূপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড় গ্রামে রেল রাস্তার পাশে ছাপরা ঘরে থাকেন রাসিনা বেগম। এ বাড়ি ও বাড়ি ঝি-এর কাজ করে সংসার চলে তার। স্বামী সলেমান মোল্লা মধুখালীতে একটি মুদি দোকানের কর্মচারী। দরিদ্র এ দম্পতি ৪ সন্তানের মধ্যে ছোট মেয়ে স্থানীয় সহস্রাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। গত ৪ঠা এপ্রিল দুপুরে মেয়েটির মায়ের চাচাতো ভাই কলেজ ছাত্র মনির (১৮) নির্জন স্থানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।
এ সময় সে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেললে তাকে খড়কুটো দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে যায় পাষণ্ড মনির। অসুস্থ শিশুটিকে নিয়ে অসহায় মা প্রথমে যান ধর্ষক মনিরের মায়ের কাছে বিচার চাইতে। তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয় সেখান থেকে। এরপর সে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে বিচার চাইলে সেখানেও কোন আশ্বাস পাননি। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বোয়ালমারী থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে ঘটনা খুলে বলার পর পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগটি গ্রহণ করে।
শিশুটির পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ- পুলিশ আসামির কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে দেবে আশ্বাস দিয়ে তাদের কাছ থেকে এ পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি টাকা নিয়েছে। কিন্তু ঘটনার তিন মাস পর এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি ধর্ষক মনির। উল্টো তার আত্মীয়স্বজন শিশুটির মা-বাবাকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। শিশুর মা অভিযোগ করেন, ঘটনার ১ মাস পরে এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেয়ার প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয় সে কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার এসআই বাদশা বলেন, ডাক্তারী পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত না পেলেও আমি তদন্ত করে ধর্ষণের চেষ্টার সত্যতা পেয়েছি। মনিরকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছি। তিনি শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে টাকা গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি উল্টো ওদের জন্য নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করেছি।
কারণ ওরা গরিব। তিনি বলেন, আসামি স্থানীয় প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হওয়ায় অনেকেই তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে চায় না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।