আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রোপাগান্ডা , ফ্যাসিবাদ ও বাঙ্গালীর চিন্তা।।

আমি অতি সাধারন ধ্রুব। নিজেকে মানুষ ভাবতে ভালবাসি। ভালবাসি কবিতাকে। কবিতা মূলত আমার নেশা , পেশা ও প্রতিশোধ গ্রহনের হিরন্ময় হাতিয়ার। যেখানে অবলীলায় অবরুদ্ধ আমার বাস্তবতা, সেখানে উপাসনায় জাগ্রত সদাই আমার কবিতা।

বেঁচে থাকতে চাই একটি পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে। ভাল বর্তমানে দুটি বিশেষ শব্দ আমাদের শিয়রে শিয়রে আর্তনাদ করছেঃ ১। প্রোপাগান্ডা। ২। ফ্যাসিবাদ।

আমরা সকলেই এখন এই দুটি বহুল প্রচলিত শব্দের সাথে অদ্ভুত ভাবে পরিচিত। যে যাকে পারছে - নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য - প্রোপাগান্ডার শিকড় কিংবা ফ্যাসিবাদী বলে গালাগাল দিচ্ছে। প্রশ্ন হোল আমরা কি আসলেই প্রোপাগান্ডা কিংবা ফ্যাসিবাদ সম্পর্কে কিছু জানি? আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি , ১৬ কোটি বাঙ্গালীর মধ্যে ২ লক্ষ বাঙ্গালীই জানে নাহ- কোনটা প্রোপাগান্ডা আর কোনটা ফ্যাসিবাদ। এ সংসয় দূর করার মহৎ কিংবা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আমার এই পোস্ট। ।

প্রশ্নঃ প্রোপাগান্ডা কি? উত্তরঃ প্রোপাগান্ডা একটি সুনির্ধারিত সার্বিক প্রক্রিয়া। প্রোপাগান্ডা বা অপ-প্রচারনায় নিযুক্ত ব্যাক্তি বা স্বত্তা প্রাপ্তিসাধ্য সকল প্রযুক্তিগত সুবিধা অর্থাৎ প্রেস, টিভি, রেডিও, সিনেমা, পোস্টার, মিটিং, ব্যাক্তিগত ক্যানভাসিং, ইন্টারনেট, সেলফোন, টেক্সটিং, টুইটার, ইউ’টিউব, ব্লগ, মাইক্রো-ব্লগ, সকল প্রকার সামাজিক ও কর্পোরেট যোগাযোগ সাইট, অনলাইন রেডিও, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন ইত্যাদি কাজে লাগান। যখন কোন একক ব্যাক্তিস্বত্তা বিচ্ছিন্নভাবে এবং যত্রতত্র একটা আর্টিকেল বা পোস্টার ছাপায়, টিভি/রেডিও-কথন করে, দু’চারটা লেকচার দেয়, সভা-সেমিনার করে কিংবা কিছু শ্লোগান ব্যাবহার করে তখন কিন্তু তা প্রোপাগান্ডার আওতায় পড়েনা। প্রোপাগান্ডা অবশ্যই সমগ্র-সমষ্টি-নির্দিষ্ট হতে হবে। প্রোপাগান্ডা সমগ্র সমাজকে সকল সম্ভাব্য উপায়ে নিজের সাথে জড়িয়ে নেবে, সচেতন বা অবচেতন সকল উপায়ে, অনুভুতি ও বুদ্ধিকে সম্পৃক্ত করে, ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে নেতিবাচক প্রবাহে পরিচালিত করতে এবং তার আপন উপলক্ষ্য বা উদ্দেশ্যকে চরিতার্থ করতে।

এটা তাকে জীবনের সকল আঙ্গিক ব্যাখ্যা করার একটি পরিপূর্ণ ব্যবস্থার যোগান দেবে। সাথে থাকবে কর্মযোগে নগদপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা। উদাহরনঃ নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন - উত্তর পেয়ে যাবেন! আমি একটু হিন্টস দিয়ে দেই, কারা Basher Kella - বাঁশের কেল্লা পেইজের মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে ভাবুন, ভাবুন কারা "আমার দেশ" নামক পত্রিকার সাহায্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপপ্রচার করছে, কারা সংখ্যালগুদের বাড়ি - ঘর পুড়িয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে- এবং কারা হরতাল নামক অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে জনজীবন কে প্রতিনিয়ত হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে - ভাবুন - উদাহরন নিজেই পেয়ে যাবেন। । প্রশ্নঃ ফ্যাসিবাদ কি? উত্তরঃ ফ্যাসিবাদের ব্যাখ্যা প্রদানে আমরা সুনির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্টের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারি।

যেমন - উগ্র জাতীয়তাবাদ, মানবাধিকারের প্রতি অবজ্ঞা , একটা কমন শত্রু থাকা, মিলিটারিকে প্রাধান্য ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান, লিঙ্গ বৈষম্য সর্বব্যাপী বিরাজমান, নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে আহাজারি, ধর্ম আর রাষ্ট্রের মাখামাখি, কর্পোরেটদের নিরাপত্তা, শ্রমিকদের ক্ষমতা সীমিতকরন, বুদ্ধিজিবিতা ও শিল্প কর্মের প্রতি অবজ্ঞা, অপরাধ ও শাস্তি নিয়ে মাত্রাধিক আগ্রহ, অবাধ স্বজন প্রীতি ও দুর্নীতি এবং নির্বাচনে কারচুপি। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে সরকার জনগন উভয়েই জাতীয়তা বাদী, শ্লোগান, চিহ্ন ও গান নিয়ে মুখর হয়ে থাকে- হিটলারের জার্মানিতে তা স্পষ্ট দেখা গেছে। এই অবস্থায় সরকার ও জনগনের মধ্যে মানবাধিকার নিয়ে এক ধরনের অবজ্ঞার সৃষ্টি হয়। দেশের সব সমস্যার জন্য একটা কমন শত্রু তথা বলির পাঠার সৃষ্টি হয়। দেশের দুর্যোগের মুহূর্তে সরকারী তহবিলের মোটা অংশটা মিলিটারির ভাগ্যে জুটে।

ফ্যাসিবাদী সরকার প্রায় সার্বিক ভাবে পুরুষতান্ত্রিক , তাই মহিলারা প্রতি পদক্ষেপে লাঞ্ছনার শিকার হয়। গন মাধ্যম সরকারের আওতায় থাকে। জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ভয় কে সরকার ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করে। ধর্ম কে ব্যাবহার করে সরকার নিজেদের সুফি প্রমান করতে চায়! শ্রমিকদের ক্ষমতা হারিয়ে যায়। বুদ্ধিজিবি দের উপর অত্যাচার করা হয়, প্রচুর দুর্নীতি করে ক্ষমতায় বহাল তবিয়তে থাকার আপ্রান প্রচেষ্টায় সরকার সদা ব্যাস্ত থাকে।

উদাহরনঃ হিটলার, মুসোলিনি। সারকথাঃ নিজের বিবেকের কাছে একবার প্রশ্ন করে দেখুন , কে কিংবা কারা ফ্যাসিবাদী, কারা প্রোপাগান্ডার আশ্রয় নিয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের স্বাভাবিক জীবনরথ থামিয়ে দিচ্ছে- কে বা কারা বাংলাদেশের স্বাধিনতাকে অবজ্ঞা করছে এবং জনমনে বিভ্রান্তির জন্ম দিচ্ছে। একটা কথা মাথায় রাখবেন আমরা সকলেই বাঙ্গালী- আমাদের স্বাধীনতা আমাদের অহংকার। যারা আমাদের এই অহংকারের গায়ে কালিমা লেপে দিবে তাদের বাংলার মাটিতে কোন জায়গা নেই। ফ্যাসিবাদ ও প্রোপাগান্ডা চিনুন- নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে স্বাধীনতা বিরোধী সকল অপশক্তি কে রুখে দিন।

জয় আমাদের হবেই। সকল যুদ্ধাপরাধীদের অবিলম্বে ফাঁসিতে ঝুলানো হোক। । জয় বাংলা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.