আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাত্রলীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়াবাড়ি সরকারের কেয়ামত ডেকে আনছে

ইমানের পরীক্ষা হয় সংকট কালে। ইমানের পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত থাকুন।

ছাত্র লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়াবাড়ি বিপদ ডেকে আনছে। বেকায়দায় পড়ছে সরকার। প্রতিনিয়তই পুলিশ, R rআইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নতুন নতুন ঘটনার জন্ম দিচ্ছে।

ইতোপূর্বে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মানুষ অতিষ্ঠ। এ কোন দেশ! সর্বশেষ বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ার চাপ সামলে উঠতে না উঠতেই মুন্সীগঞ্জে পুলিশের গুলিতে যুবক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া কমিশনার নিখোঁজ হওয়াসহ শুক্রবার পুলিশের হেফাজতে আসামির মৃত্যুর ঘটনায় আবার তোলপাড় শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে ডুব দিয়ে থাকা বিএনপি-জামায়াত জোটের ভূতরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলে চাপে রাখতে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের ঘটনার জন্ম দিচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

চলতি বছরের প্রথম দিকে রমনা থানা পুলিশের হেফাজতে এক আসামির মৃতু্যর ঘটনা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় হয়। এর রেশ কাটতে না কাটতেই এর কিছু দিন পরেই শাহবাগ থানা পুলিশের হেফাজতে এক বিএনপি নেতার মৃতু্যর অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া যুবলীগ নেতা লিয়াকত হোসেনকে র্যাবের গোয়েন্দা পরিচয়ে কয়েক মাস আগে একদল সাদা পোশাকধারী লোক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। লিয়াকতের স্ত্রী একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে তাঁর স্বামীকে খুঁজে বের করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

কোন লাভ হয়নি। আজও লিয়াকতের সন্ধান মেলেনি। সম্প্রতি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত ওয়ার্ড কমিশনার ও ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমকে র্যাবের গোয়েন্দা পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী একদল লোক রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে চৌধুরী আলম নিখোঁজ। সপ্তাহ ঘুরে গেলেও তাঁর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বিএনপির সিনিয়র নেতা সাদেক হোসেন খোকাসহ বিএনপির নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে চৌধুরী আলমের নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে সরকারকে পদৰেপ নিতে অনুরোধ করেন। বিএনপি নেতৃবৃন্দসহ অনেকেই বিষয়টির তদন্ত দাবি করেছেন। পাশাপাশি চৌধুরী আলমকে খুঁজে বের করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি বার বার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু চৌধুরী আলমের বিষয়ে কোন অগ্রগতি হয়নি। সর্বশেষ এ ব্যাপারে একটি অপহরণ মামলা রেকর্ড হয়েছে বলে ডিএমপির মিডিয়া সেল সূত্র জানায়।

এ ছাড়া গত ২৭ জুন বিএনপি সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে। হরতালের সময় সরকারী কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপির ছাত্রবিয়ষক সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ মান্নান, শমসের মবিন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সদস্য এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাই ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু এবং তিন মহিলা ওয়ার্ড কমিশনার রাজিয়া হালিম, সুরাইয়া বেগম ও পেয়ারা মোসত্মফাসহ সারাদেশে দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অধ্যাপক এমএ মান্নান ও এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খানকে জামিনে মুক্তি দেয় আদালত। পরবর্তীতে আটককৃতদের মধ্যে অনেককেই ছেড়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু বেশিরভাগকেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

তবে শমসের মবিন চৌধুরীসহ বিএনপির বেশ কয়েক সিনিয়র নেতাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে হরতালের দিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাসকে শাহজাহানপুরের বাসা থেকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে হরতালের আগের রাতে নয়াপল্টন মোড়ে গাড়ি পোড়ানো মামলায় মির্জা আব্বাসকে আসামি দেখানো হয়। পরে তাঁকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে পাঠানো হয়। মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতারের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মির্জা আব্বাসের বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও নির্মমভাবে বাড়ির আবালবৃদ্ধবনিতাকে নির্যাতন করেছে বলে মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস অভিযোগ করেন।

পরে মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস বাসায় এক সংবাদ সম্মেলন করে তাঁর বাসায় র্যাব ও স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে অনত্মত ৪০ জনকে আহত এবং বাড়িঘরের জিনিসপত্র তছনছ ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, সকাল থেকেই পুলিশ বাড়িটি ঘিরে রেখেছিল। কিন্তু বাড়ির ভেতরে ঢোকেনি পুলিশ। মিছিল নিয়ে শহীদবাগ মসজিদের কাছে গেলে পুলিশ মির্জা আব্বাসসহ অনত্মত ২০/২৫ জনকে গ্রেফতার করে। এরপর র্যাব ও স্থানীয় যুবলীগসহ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মির্জা আব্বাসের বাড়ির ভেতরে ঢুকে তা-ব চালায়।

তারা অস্ত্র হাতে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। বাড়ির সবাইকে মারধর করতে থাকে। এতে মির্জা আব্বাসের মা কমলা বেগমসহ বাড়ির ভেতরে থাকা অনত্মত ৪০ জন আহত হন। মির্জা আব্বাসের মেয়ে বর্ষা অভিযোগ করেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বাড়িতে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু বাড়িতে ঢুকে এমন হামলা বা খারাপ ব্যবহারের ঘটনা ঘটেনি।

বুধবার মুন্সীগঞ্জে বাসচাপায় ছাত্র মারা যায়। বৃহস্পতিবার এলাকাবাসী ঢাকা-মাওয়া সড়ক অবরোধ করে বিৰোভ করলে পুলিশ তাতে লাঠিচার্জ ও গুলি ছোড়ে। এতে মোসলেম নামে এক যুবক নিহত ও অনত্মত ১৬ জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে মুন্সীগঞ্জে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা পুলিশের এ ধরনের আচরণ মেনে নিতে পারেনি।

তারা দোষী পুলিশ সদস্যদের শাসত্মি দাবি করেছেন। শুক্রবার রাজধানীর দারম্নস সালাম থানা পুলিশের হেফাজতে মজিবর রহমান নামে পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তির মৃতু্যর অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে নিহতের পিতা ইব্রাহিম বাদি হয়ে দারম্নস সালাম থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ মহিবুর রহমান ও কাজল নামে দু'ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। নিহতের বাড়ি দারম্নস সালাম থানার বাজারপাড়ার ২২৩/১ নম্বরে।

তবে দারম্নস সালাম থানার ওসি আব্দুল মালেক দাবি করেছেন, পুলিশের হেফাজতে মজিবর রহমানের মৃতু্য হয়নি। মজিবর রহমানকে পুলিশ তুরাগ নদীর বাগবাড়ি এলাকা থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন বাড়াবাড়িতে দিন দিন সরকার বেকায়দায় পড়ছে। একটি দেশে যে কত বাজে চলতে পারে এখন তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। সামনে যে কি হবে কেউ জানে না।

কেয়ামতের বুঝি আর বাকি নাই। ( কপি-পেস্ট: দৈনিক জনকণ্ঠ ৩রা জুলাই ২০১০)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.