মানুষ ৩ রকম, ১। আগুনে পুড়ে যায়, ২। আগুনে গলে যায়, ৩। আগুনে ঋদ্ধ হয়
ঘরটা খুব সুন্দর করে সাজানো। বিছানা টান টান।
মাথার কাছে কিছু ফুল। জানলাটা খোলা। আয়নার পাশে কিছু প্রাসাধন। মাত্রই সাজগোজ হয়েছে। নতুন চাদর।
নতুন পর্দা। চুল ছড়িয়ে শুয়ে আছে সে। মুখে মিষ্টি হাসি। ঠোটের পাশে একটু রক্ত।
-“বেশ কিছুদিন ধরে ঘর থেকে বের হত না”
-“একটু যেন চুপচাপ হয়ে গিয়েছিল”
-“কি যেন বাবা! আমার সাথে তো সেদিনও দেখা হল বেশ তো হাসি মুখে কথা বলল।
আমার মেঝ মেয়ের বাচ্চাটার সাথে খুনসুটি করল। কিছু তো মনে হয় নি”
-“এত হাসিখুশি মানুষ!! কি কষ্ট ছিল ওর?”
মা তার একপাশ দিয়ে বসে আছে। কিছুক্ষন পর ওকে নিয়ে যাবে। ঘর তন্নতন্ন করে কোন সুইসাইড নোট পাওয়া যায় নি।
ফেইসবুকের শেষ স্ট্যাটস, “সুন্দরের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই” তবে কি ওর জীবন থেকে সব সুন্দর ফুরিয়ে গিয়েছিল?
ওর হয়তো কিছু বলার ছিল।
অনেক কিছু খোঁজা হচ্ছে, অনেক কিছু। বন্ধুরা বিহ্ববলভাবে বসে আছে। কি বলার ছিল ওর? কি বলতে চেয়েছিল? কি বলতে না পারার দুঃখে চলে গেল?
পাশ দিয়ে সেও দাঁড়িয়ে আছে। কেউ তাকে দেখতে পাচ্ছে না। নিজের ঘন কালো চুলগুলো দেখছে।
নামটা শুধু শুধু কুন্তলা রাখা হয় নি। কুন্তলার যাবার সময় হয়ে গেছে। আচ্ছা কেউ একটু স্পর্শ করছে না কেন? এত সুন্দর লাগছে তবু কেউ স্পর্শ করছে না কেন? ব্যাথায় না হয় কেউ হাত না বুলাল। চুলে একটু হাত রাখত। যে কেউ! মা, নাহয় কোন বন্ধু!
যাবার সময় হয়ে গেছে কুন্তলার।
ডাক এসে পড়েছে। তবু কুন্তলা বার বার ফিরে চাইছে। কেউ একজন মাথায় একটু হাত রাখুক। ডোমের নির্মম হাত পরার আগে কেউ স্নেহের হাত রাখুক। আগুনে ভস্মীভূত হবার আগে কেউ মমতার পরশ দিক।
ফিরে চাইছে কুন্তলা, দৃষ্টিতে কোন ক্ষোভ নেই, কোন হতাশা নেই, শুধু একটা চাওয়া কেউ একবার হাত রাখুক চুলে অথবা তপ্ত হৃদয়ে……………..
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।