আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুগল্পঃ লা ঙ্গ ল হা তে জে স মি ন

♠ ব্লগার ইমন জুবায়ের ♠ মেঘের আড়ালে থাকা একটি নক্ষত্রের নাম

০১. বইয়ের পাতা গুলান এহনো আমারে ডাহে ! আমি চুপ থাহি হাত বাড়ায়ে ধরতে যাই পারিনা। কেন,যে মানুষ গরীব অয় !!! দীর্ঘশ্বাসের বোঝা নিয়ে জেসমিন ক্লান্ত অবসন্ন। টেবিলে রাখা বই গুলোকে পরম যত্নে বুকের কাছে টেনে নেয়। হাত বুলায়...... পড়ালেখা করবে সে; বাবার সংসারে রোজগারের একা ব্যাক্তি; পাঁচ পেটের সংসারে হিমশিম খায় রফিকুল ইসলাম। ভাগ্যটা করুণ থেকে আরো করুণে পরিনত হয়; যখন সর্পদংশনে তার জীবনটা খোয়া যায় তার।

০২. তের বছরের নরম পা দেবে যায় কাঁদায়। কখনোবা কাদাপানি লাগে চোখে মুখে তবুও থামেনা জেসমিন; লাঙ্গল চালায়। কখনোবা এবড়ো থেবড়ো মাটিতে পা পড়ে, ফোসকা ফুটে তবু থামেনা সে। কারো বাড়িতে ঝি গিরি করার চেয়ে জমি চাষ করা ভালো দু,বেলা দুটো ভাত তো জুটবে ছোট ভাইবোন গুলোর মুখে। বাবার দায়ভার কাধে নিয়ে হাটে জেসমিন এ জমির এ প্রান্ত থেকে ও জমির ও প্রান্ত পর্যন্ত।

০৩. কূয়াশা ঘেরা সকালে সহপাঠিরা স্কুলে যাবার পথে যেতে যেত জিজ্ঞেস করে; কি , রে জেসমিন ইস্কুলে যাবিনা? মাথা নিচু করে জেসমিন বলে নাহ্ । ইস্কুল করলে তো পেটে ভাত জুটবো না। টানাটানির সংসারে পড়ালেখা করতে মন চায়; কিন্তু পারিনা বলে থেমে যায় জেসমিন !!! গোল্লাছুট কিংবা বউ চি খেলা এখন শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা; কাদা মাখা হাতে সে এখন ধানের চারা কিংবা আলুর পাতা কুড়ায় !! ০৪. যখন দূয়ারে দূয়ারে ঘুড়ে মেলেনি বিধবা ভাতার কার্ড। তখন জেসমিনের মা চোখে আধার দেখেন। যেখানে আলো নেই আছে হতাশা !! কতো আর না খেয়ে থাকবে ।

শেষে নরম হাতে তুলে নেয় কাস্তে, কোদাল কিংবা লাঙ্গল। চষে বেড়ায় তার স্বপ্নগুলো লাঙ্গলের ফাকে মাটিতে মিশে অদ্ভুত হয়। হাটু কাঁদা মাখামাখি। কষ্ট যেন তার হয়েছে পাকাপাকি। নোনা জলে ঘামে, কিছু কথা টানে।

ফিরে যায় মনটা কখনো স্কুল কিংবা গোল্লাছুটের মাঠে। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে শেষে লাঙ্গল হাতে জেসমিন। এভাবেই কাটে জেসমিনের দিনরাত্রি........... ফোস্কা পড়া হাতে মার আঁচল ধরে বলে, মা ডারাস কেন তুই!! আমি তোর মাইয়্যা না; আমি তোর পোলা হেয় বাইচ্চা থাকতে তোর চক্ষে পানি মানায় না। _______________________এটা গল্প হলোনা শুধু চেষ্টা করেছি মাত্র_ সম্প্রতি খবরের কাগজে প্রকাশিত কিশোরী জেসমিন বই খাতা ফেলে অভাবের তাড়নায় লাঙ্গল হাতে মাঠে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।