আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।
আজকের টক্ অফ দা টাউন, মাহমুদুরের পক্ষে মুক্তির দাবীতে বিবৃতি দিয়েছেন ১৫টি মুদ্রিত পত্রিকার এবং একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের মাননীয় সম্পাদক।
মাহমুদুরের পক্ষে সাফাই গেয়েছে; ১৫ টি প্রিন্ট মিডিয়া এবং একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদক।
[১] ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট সম্পাদক মাহবুবুল আলম
[২] সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার
[৩] প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান
[৪] ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম
[৫] ডেইলি টুডে সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ
[৬] কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন
[৭] দৈনিক সংবাদ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুনীরুজ্জামান
[৮] মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
[৯] নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবীর
[১০] দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন
[১১] নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন
[১২] ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক এ এইচ এম মোয়াজ্জেম হোসেন
[১৩] বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম
[১৪] নিউ নেশন সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার
[১৫] যুগান্তর নির্বাহী সম্পাদক সাইফুল আলম
[১৬] বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন।
উল্লেখিত ১৬ জনের মধ্যে চিহ্নিত কয়েক জন বাদে সকলেই মুক্তমনা, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এবং মুক্তি যুদ্ধের পক্ষ্য শক্তি হিসাবে সমাজে সর্বজন গৃহীত ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি।
সকলে আজ হতবাক হয়ে গেছে তাদের এই বক্তব্যে। নাগরিক সমাজে একটি কথাই ঘুরে ফিরে আসছে "দেশের এই রাজনৈতিক অস্থিরতায়, মৌলবাদ উস্কানিদাতা মাহমুদুর রহমানের পক্ষে বরেন্য সম্পাদকদের এধরনের বিবৃতি, কতটা যৌক্তিক ও গ্রহন যোগ্য?" সকলেই কেন যেন এই বিবৃতি ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না।
মাহমুদুর রহমানকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার একজন উপদেষ্টা, তিনি একজন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হলেও সাংবাদিকতায় অনার কোনো পূর্ব অভিঞ্জতা নেই। তিনি একজন ‘বাইচান্স এডিটর’।
তিনি ‘বুয়েট’-এর একজন ইঞ্জিনিয়ার ও বেক্সিমকোর একজন সাবেক কর্মকর্তা।
পরে খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় টার্মে বিশেষ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও জ্বালানি উপদেষ্টাও হন। তার পরিকল্পনায়ই ১৪ই নভেম্বর ২০০৬ সালে উত্তরা ষড়যন্ত্র সংঘঠিত হয় যার মূল কারিগর ছিলেন তিনি।
তার গুনের কোনো সীমা নাই, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের রায়ে তিনি একজন ‘ক্রিমিনাল’; ফৌজদারি অপরাধে কারাদন্ড ভোগী ‘ক্রিমিনাল’। তিনি আমেরিকান ভিসা-প্রত্যাখ্যাত কালো তালিকাভুক্ত দের একজন।
এর কারন হিসাবে মৌলবাদের সাথে সম্পৃক্ততা দায়ী বলে অনেকে মনে করেন।
দৈনিক আমার দেশ বলতে অনেক ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যান। তারা গলা ফুলিয়ে বলেন, দৈনিক আমার দেশ নাকি সত্যের অপর নাম। অথচ বাস্তবতা বলে, তারা মিথ্যাচার ছাড়া সংবাদ প্রকাশই করে না। তারা সংবাদকে ফুলিয়ে ফালিয়ে এমনভাবে প্রকাশ করে যাতে করে পাঠক বিভ্রান্ত হয়, উত্তেজিত হয় এবং বিপন্ন বোধ করে।
দৈনিক আমার দেশের মালিকানায় আছে জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক তাসনীম আলম। যখন দৈনিক সংগ্রাম এবং দৈনিক নয়া দিগন্ত প্রকাশ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় নি, তখনই বিএনপি জামাত সম্মিলিত এই প্রোডাকশন দৈনিক আমার দেশ। মূলত বিএনপিতে প্রভাব বিস্তার করার জন্যই এই পত্রিকা সৃষ্টি করেছে জামায়াতে ইসলামী।
যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য তারা কাবা শরীফের নামে মিথ্যা সংবাদ ছাপাতে পিছ পা হয় না। এই গর্হিত কাজ করার পরও দৈনিক আমার দেশের ধর্মান্ধ পাঠক গোষ্ঠী তারপরও বলে যায়, পত্রিকাটি নাকি সত্যের ঝাণ্ডা তুলে রেখেছে।
অথচ এই একটা কাজের জন্য প্রচলিত আইনে এবং ধর্মীয় আইনে তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেয়া উচিত এবং সম্ভব। তারাই ধর্মান্ধ মানুষকে উষ্কে দিতে ধর্ম নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। তারাই ধর্ম নিয়ে মিথ্যাচার করে কবীরা গুণাহ করেছে।
অন্য কোন পত্রিকা এই রকম কাজ করলে সারা বাংলায় আগুন জ্বালিয়ে দিত ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী। সম্পাদককে জবাই করার হুমকি দিত।
বরং এই জঘন্য কাজ করার পরও তারা এই পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে দহরম মহরম সম্পর্ক বজায় রেখেছে। তাদের ভাবভঙ্গি এমন, ধর্ম গোল্লায় যাক, মাহমুদুর রহমান টিকে থাক।
যেহেতু তাদের নিজের পত্রিকা তাই এই কাবা শরীফের মর্যাদা হানি হলেও দৈনিক আমার দেশের ধর্মপ্রাণ পাঠকবৃন্দ নিশ্চুপ থাকবে এবং থেকেছে। তখন তাদের ধর্মানুভূতিতে কোন সুরসুরি লাগে না। ধর্মানুভূতি বিশেষ কোন গোষ্ঠীর ইশারায় চালিত হলে এবং নিজের বিবেক কারো কাছে বন্ধক রেখে এলে এরকমই হওয়ার কথা।
তারা গায়ের জোর এবং মিথ্যাচার দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আসলে তো ইসলাম প্রতিষ্ঠা মূল উদ্দেশ্য নয়, তাদের মূল উদ্দেশ্য যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানো।
অন্য দিকে, দৈনিক আমার দেশ তথা জামাতী মিডিয়া সেলের উদ্দেশ্য হল, ধর্মকে ব্যবহার করে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে ধর্মভীরু মানুষকে উত্তেজিত করে তোলা এবং ধর্মভীরু মানুষদের ভোট ব্যাংক নিজেদের সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা। তারা এই কাজটা চমৎকারভাবে করতে পেরেছে। তারা দৈনিক আমার দেশ ব্যবহার করে যে কোন ব্যক্তির চরিত্র হনন করতে পিছ পা হয় না।
আর তাদের ধর্মান্ধ পাঠককুল ওই মিথ্যা সংবাদ নিয়েই লম্ফঝম্ফ শুরু করে। তাদের চোখে কোরানের পরে সত্য দৈনিক আমার দেশ।
আসলে কী তাই ?
কাবা শরীফ নিয়ে তাদের জঘন্য মিথ্যাচার : এসব প্রকান্ড মিথ্যাচার কি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা? কতিপয় বিপথগামী শিবির কর্মীর দুষ্টুমী? না, তারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই লালন করে এহেন মিথ্যাচারী মনোভাব। এদের রাজনীতির মুল অস্ত্র মিথ্য রটানো, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কুৎসা প্রচার করা। কুৎসাকারী না হলে কোন ইসলামপ্রেমী মুসলমান কাবা শরীফ নিয়ে মিথ্যা কথা বলে?
আমার দেশ পত্রিকায় ৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি খবরের শিরনাম ছিল, "আলমদের নির্যাতনের প্রতিবাদে কাবায় মানব ব্ন্ধন।
"
একই দিনে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় একই খবর আসে আসে একই শিরনামে "আলমদের নির্যাতনের প্রতিবাদে কাবায় মানব ব্ন্ধন। "
যে ব্যবহার হয়েছে সেই ছবির উৎস, ১৮ অক্টোবর ২০১২ তে প্রকাশিত কাবার গিলাফ পরানোর সময় তোলা ছবি।
একটি আরবি সাইট থেকে নিয়ে বাংলাদেশের রাজাকারদের বাঁচাতে মানববন্ধন নাম দেয়া হয়েছে দেশের দুইটা জাতীয় দৈনিকে। কাকতালীয়?
এবার এই ছবির উৎস দেখুন, ১৮ অক্টোবর ২০১২ তে প্রকাশিত কাবার গিলাফ পরানোর সময় তোলা ছবিটিকে একটি আরবি সাইট থেকে নিয়ে বাংলাদেশের রাজাকারদের বাঁচাতে মানববন্ধন নাম দেয়া হয়েছে দেশের দুইটা জাতীয় দৈনিকে।
এ খবরের একটা বিষয় খেয়াল করার মতো।
দুটি সংবাদের রিপোর্টার একজনই - আবুল কালাম আজাদ, সৌদি আরব। এই দুটি পত্রিকা যে একই মালিকানার এবং একই ব্যক্তির ইশারায় পরিচালিত তার প্রমাণ এই দুটি পত্রিকায় একই সাংবাদিকের পাঠানো সংবাদ প্রকাশ। একই ব্যক্তি দুই পত্রিকাতেই চাকুরি করছে। তার মানে হল, দৈনিক সংগ্রাম এবং দৈনিক আমার দেশ একই চক্রের মিডিয়া। সেই চক্র হল জামায়াতে ইসলামী।
মাহমুদুর রহমান, দিগন্ত ও নয়াদিগন্ত বাংলাদেশের প্রভূত পরিমাণ ক্ষতি করেছে। তারা মক্কা শরিফ, ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী ইত্যাদি বিষয়ে মিথ্যা ছবি ও খবর ছাপিয়ে জনমনে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করেছে, দাঙ্গা বাধিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, মাহমুদুর তিন চারজনের একটি গ্রুপ করেছিলেন যারা ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ইন্টারনেটেও নিয়মিত তথ্য বিকৃতি বা সাইবার ক্রাইম করত। তার অফিসে টাকা আদান-প্রদান সম্পর্কেও প্রতিবেদন বেরিয়েছে। এগুলো গুজব হলেও, যেহেতু ব্যক্তিটি মাহমুদুর রহমান তাই সব গুজব নাও হতে পারে।
দিগন্ত টেলিভিশন ৫-৬ মে অসত্য ব্যাখ্যা শুধু নয়, তথ্য বিকৃতি ঘটিয়ে দাঙ্গা লাগাবার উপক্রম করেছিল। বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার প্রশ্রয়ে তারা আজ বিত্তবান ক্ষমতাশালী। পত্রিকা মারফত জানা যায় হেফাজতের মিশনে মাহমুদুর রহমান ৪০ হাজার ডলার এই এস এই এর কাছ থেকে নিয়েছেন।
যে সব পত্রিকা/টিভি, পত্রিকা বা টিভির মতো ব্যবহার করে না, দাঙ্গায় প্ররোচনা দেয় তাদের শুধু বন্ধ নয়, ডিক্লারেশন বাতিল করতে হবে। শিশুর হাতে আগুন দিলে সমূহ বিপদ, তেমনি যারা দায়িত্ববান নয় তাদের টিভি/পত্রিকার লাইসেন্স দেয়া বিধেয় নয়।
এইসব সাইবার ক্রাইম দমনে শক্তিশালী একটি বিভাগ খোলা উচিত যেখানে ভিন্ন বেতন স্কেলে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগ করা উচিত। এ পরিপ্রেক্ষিতে বলা উচিত, ইন্টারনেট অপব্যবহার চিহ্নিত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে তদন্ত কমিটি করেছে সেখানে মৌলবাদের দুজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে; কিন্তু এর বিপরীতে মোস্তাফা জব্বার বা জাফর ইকবালের মতো কাউকে রাখা হয়নি। এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।
যেই মাহামুদুর; স্বদর্পে বলে বেড়ায়; এই দেশে কোন রাজাকার নেই, শাহবাগ চত্বর বাজে; সেই মাহমুদুরের পক্ষে; সাফাই দিয়ে আজ যারা; নিজেদের অবস্থান কে বিতর্কিত ও প্রশ্ন বিদ্ধ করল। তাতে জাতি আজ স্তব্ধ।
এতো কিছুর পরও কি করে কোন দ্বায়িত্ববান দেশ প্রেমীক তার পক্ষে সাফাই গাইতে পারে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।