মুহসিন আব্দুল্লাহ
মাহমুদুর রহমানের ঘাড় কোমর ও পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা
নয়া দিগন্ত, Fri 18 Jun 2010
দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ও সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমানকে কারা হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বিমানবন্দর থানার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চার দিনের রিমান্ডে নেয়ার জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গতকাল চাপাচাপি করলেও কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, এ মুহূর্তে তাকে রিমান্ডে নেয়ার মতো শারীরিক অবস্খায় তিনি নেই। প্রয়োজনে দু-তিন দিন পর রিমান্ডে নেয়া যেতে পারে।
কারা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সìধ্যার পর মাহমুদুর রহমানকে আদালতের গারদখানা থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক তাকে কারা হাসপাতালে নিয়ে যান।
একাধিক ডাক্তার তার শারীরিক অবস্খার খোঁজখবর নেন। সেখানে ডাক্তারদের তিনি তার ঘাড়, কোমর ও পায়ের হাড় দেখিয়ে বলেন, এসব স্খানে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে। পরে ডাক্তাররা পেইন কিলারসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দেন এবং বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডাক্তার মো: সামসুদ্দিনের সাথে গতকাল যোগাযোগ করলে তিনি এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি শুধু বলেন, তিনি (মাহমুদুর রহমান) বর্তমানে কারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ছাড়া গতকাল ঢাকা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন মো: গোলাম হায়দারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুল ইসলাম খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কারা হাসপাতালে মাহমুদুর রহমানের চিকিৎসা চলছে। এ ব্যাপারে সার্বিক তথ্য দিতে পারবেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার। জেল সুপার মো: তৌহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ দিকে বুধবার সìধ্যায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মাহমুদুর রহমানকে নেয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিমানবন্দর থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর মঞ্জু কারা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেন।
তিনি মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ডে নেয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে চাপ দেন। কিন্তু কারা অধিদফতর থেকে তাকে জানিয়ে দেয়া হয়, একটানা রিমান্ডে থাকায় তার শরীরের অবস্খা ভালো নেই। তাই এই মুহূর্তে তাকে রিমান্ডে নেয়া ঠিক হবে না। আগামী শনিবার পর্যন্ত তাকে কারা হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার পর সুস্খ হলে রোববার রিমান্ডে নেয়ার পরামর্শ দেন। তা ছাড়া কারাগারে মাহমুদুর রহমানকে সুচিকিৎসা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে আদালতের নির্দেশ রয়েছে এবং ডাক্তারের অনুমতিসাপেক্ষে তাকে রিমান্ডে নেয়া যেতে পারে বলেও ওই কর্মকর্তাকে জানানো হয়।
পরে কর্মকর্তা রোববার আসবেন বলে কারা কর্তৃপক্ষকে জানান।
এর আগে বুধবার দুপুরে মাহমুদুর রহমানকে উত্তরা থানায় দায়ের হওয়া হিজবুত তাহরীরের সাথে সম্পৃক্ততার মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। সে দিনও মাহমুদুর রহমানকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়। আদালতে সেদিন মাহমুদুর রহমান নিজে কোনো বক্তব্য দেননি। তবে তার আইনজীবীরা আদালতে অবহিত করেন, রিমান্ডের নামে মাহমুদুর রহমানের ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
তিনি একটি পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিক। কোনো সম্পাদককে একটানা ১২ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নজিরও নেই।
আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে মাহমুদুর রহমানকে জেলহাজতে প্রেরণের এবং কারা কর্তৃপক্ষকে তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে মাহমুদুর রহমানকে তার বাড়ি থেকে পাঠানো রান্না করা খাবার খেতে দেয়া হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।