my country creat me a ginipig
জেলখানায় বন্দি সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহছানুল হক মিলনের কাছে তাঁর কিশোরী মেয়ের খোলা চিঠি-
বাবা,
জেলখানার দেয়াল, প্রিজন ভ্যান, আদালতের কাঠগড়া, পুলিশের রিমান্ড- এসব নিযে তুমি যে কেমন আছো তাতো জানিই। এই চিঠি তোমার কষ্ট আরও কয়েকগুণ বাড়াবে তাও জানি। তবুও লিখছি। কারণ, আমি আর সইতে পারছি না বাবা। ক’দিন ধরে আমার ’ও’ লেভেল পরীক্ষা চলছে।
পরীক্ষার হলে যাচ্ছি একাই , আসছিও একা। কারণ, মা দিনরাত ব্যস্ত শুধু তোমার মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে। কিভাবে তুমি জেল থেকে ছাড়া পাবে সেই চেষ্টায় মা নাওয়-খাওয়া ভুলে উদভ্রান্তের মতো এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করছে। উকিল-মোক্তার , দারোগা-পুলিশ আর জেলখানার কর্তাবাবুদের পেছনে শুধু দৌড়াচ্ছে। তোমাকে বহনকারী দুঃস্বপ্নের সেই প্রিজন ভ্যানের পিছু পিছু ঢাকা-চাঁদপুর-কুমিল্লা-রংপুর-সিলেট-ঢাকা ছুটতে ছুটতে মা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না। এখন আমি মাকে দেখবো? নাকি মা আমাকে দেখবে? ইচ্ছে হলেই তোমার সঙ্গেও দেখা করতে পারি না। বলো বাবা আমরা এখন কি করবো?
বাবা, এই বুঝি তোমার দেশপ্রেমের প্রতিদান? দেশের জন্য কাজ করবে বলে , দেশের মানুষের সেবা করবে বলে একদিন আমেরিকার নাগরিকত্ব, নিশ্চিত বিলাসী জীবন, আর আমার উন্নত লেখাপড়ার সুযোগ-সবকিছু তুচ্ছ করে ফিরে এসেছো দেশের মাটিতে। তারপর দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থাকে নকলমুক্ত করবে বলে রাতদিন পাগলের মতো ছুটে বেড়িয়েছো দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। এসব করতে গিয়ে কতবার তুমি মারাত্মক অসুস্থও হয়ে পড়েছিলে।
আর আজ তুমি কারাগারের চার দেয়ালে বন্দী হয়েছো একজন ছিনতাইকারী হিসাবে। ওরা তোমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে মোবাইল ফোন আর ভ্যানেটি ব্যাগ ছিনতাইয়ের অভিযোগে। বাবা, কোর্টের জজ সাহেবরাও কি বিশ্বাস করছেন এই অভিযোগ? তাহলে কেন তুমি ছাড়া পাচ্ছো না? কেন তোমাকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন মঞ্জুর করলেন বিচারক? দেশে কি বিচার বলতে কিছু নেই? আমি কেন তোমার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি? আমার কি অপরাধ, বলো বাবা? কি করবো, কিছুই বুঝতে পারছি না। পরীক্ষাটাও ভাল হচ্ছে না। সবকিছু কেমন যেন এলামেলো হয়ে যাচ্ছে।
দিনগুলো সত্যিই বদলে গেছে আমাদের জীবনে। জানি না এই দিন বদলের শেষ কোথায়। বাবা তুমি ভাল থাকো।
ইতি
(তানজিদা)
তোমার একমাত্র সন্তান
বিস্তারিত
১. Click This Link
২. Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।