বড় ও ছোট পর্দায় এখনো সমান ব্যস্ততা, কিভাবে সম্ভব?
এর একমাত্র কারণ হলো, দর্শকের প্রচণ্ড ভালোবাসা। দর্শক যদি ভালোবেসে তাদের হৃদয়ে আমাকে ঠাঁই না দিত তা হলে তো আমি অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান হতে পারতাম না। বলতে পারেন দর্শকের ভালোবাসায় বেঁচে আছি।
প্রচুর প্রস্তাব পাওয়া সত্ত্বেও কাজের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে, কেন?
আগের মতো গল্প আর নির্মাতা কোথায়। যেনতেন কাজ করলে তো দর্শকের ভালোবাসা ধরে রাখা যাবে না।
দীর্ঘদিন পর ক'বছর আগে আজিজুর রহমানের 'ডাক্তার বাড়ি' এবং সালাউদ্দীন লাভলুর 'মোল্লা বাড়ির বউ' চলচ্চিত্রে কাজ করে মনে হয়েছিল যেন সোনালি অতীতে ফিরে গেছি। আসলে এ ধরনের গল্প না পেলে কাজ করে মজাও পাই না।
অভিনয় ছাড়া আর কি করছেন?
সময় পেলে পড়াশোনা ও লেখালেখির চেষ্টা করি। বিশেষ করে ফিল্ম নিয়ে এখনও প্রচুর পড়াশোনা করি। কারণ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত চর্চা ছাড়া কেউ পূর্ণতা পেতে পারে না।
বর্তমানে বড় ও ছোট পর্দায় ব্যস্ততা কেমন?
বর্তমানে 'সামারা' শিরোনামে একটি চলচ্চিত্রে কাজ করছি। সেপ্টেম্বরে আরেকটির কাজ শুরু করব। তাছাড়া ঈদুল আজহার জন্য বেশ কটি টিভি নাটকে অভিনয় করছি। আসছে অক্টোবরে হজে যাব, তাই এখন বেশি কাজ আর হাতে নিচ্ছি না।
এক সময় চলচ্চিত্র ও নাটকের জন্য প্রচুর গল্প লিখতেন, তাও এখন কমিয়ে দিয়েছেন, কেন?
ওই যে বললাম আগের মতো নির্মাতা নেই, চলচ্চিত্রও নির্মাণ হয় না, তাই ইচ্ছে হলেও লিখি না।
অথচ স্বাধীনতার আগে আমার পাণ্ডুলিপিতে তৈরি হাসমত পরিচালিত 'স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা' চলচ্চিত্রটি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, পরে এটি বলিউডে নকল করে 'বেজবান' নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০টি চলচ্চিত্রের গল্প লিখেছি। আগের মতো নির্মাণ এখন নেই। নাটকের ক্ষেত্রেও একই কথা তাই তেমন আর লিখছি না।
এবাদত শিরোনামে একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন, কিন্তু পরিচালনায়ও আর নিয়মিত হলেন না, কেন?
এ বিষয়টি এখনও আমাকে পীড়া দেয়।
কারণ নানা অজুহাতে সেন্সরবোর্ড 'এবাদত'-এর বারশত ফুট ফিল্ম কেটে বাদ দেয়। ফলে এতে আর কিছুই ছিল না। তাই গল্প বুঝতে না পারায় চলচ্চিত্রটি দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। সেন্সর বোর্ডের ভয়েই বলতে পারেন আর নির্মাণে যেতে পারছি না। কারণ বোর্ডের কারণে অর্থ লগি্নকারক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শিল্পীরা শেষ বয়সে এসে অসহায় হয়ে পড়ে, কেন?
আসলে বয়স হয়ে গেলে কাজের পরিমাণ কমে যায়। এতে তাদের মধ্যে হতাশা বাসা বাঁধে। এ হতাশা থেকে ধীরে ধীরে শিল্পীরা অসহায় ও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
খলনায়ক এবং কৌতুক অভিনেতা, দুই ক্ষেত্রেই সফল, কিভাবে সম্ভব?
চরিত্রকে পূর্ণভাবে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারলে যে কোনো চরিত্রে সফল হওয়া যায়। এর জন্য দরকার একাগ্রতা ও সাধনা।
এ দুটো জিনিস বজায় রেখেছি বলেই সব ক্ষেত্রে সফল হয়েছি।
অভিনয় জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি কি?
দর্শকের ভালোবাসা ও গ্রহণযোগ্যতা। যা আমি পেয়েছি। মজার কথা মনে পড়ল। খলনায়ক হিসেবে যখন তুঙ্গে তখন একবার এক গ্রামে শুটিং করতে গিয়েছি।
কাজের ফাঁকে পুকুর পাড়ে হাঁটছি। এক মহিলা কলসি ভরে পানি নিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ আমাকে দেখতেই চিৎকার করে উঠল, 'হায় আল্লা এই শয়তান বেডা এইখানে কি করে। ' বলেই কাঁখের কলস ফেলে ভোঁ দৌড়। প্রথমে হতচকিত হলাম।
পরে খুব হেসেছিলাম। আরেকবার আমার ছেলে টিভিতে আমার অভিনীত একটি ছবি দেখছিল। সেখানে নায়কের হাতে মার খেয়ে আমি মারা যাই। ওই দৃশ্য দেখে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠল সে। তারপর আমার ঘরে ছুটে এসে আমাকে ছুঁয়ে দেখছে, আমি বেঁচে আছি কিনা।
* আলাউদ্দীন মাজিদ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।