দেশে শিশুশ্রম অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। ওয়েলডিং, অটোমোবাইল, পরিবহন, ব্যাটারি রিচার্জিংসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের কাজ করতে দেখা যায়। এসব কাজ করতে গিয়ে তাদের স্বাস্থ্যের মারাÍক ক্ষতি হয়। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ অবশ্যই আমাদের মেনে চলতে হবে। কিন্তু শিশুশ্রমের নামে দেশে যা চলছে তা জাতিসংঘের শিশু সনদের চরম লঙ্ঘন।
ওই সনদ অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সীদের শিশু বলা হয়েছে। তাদের দিয়ে যে কোন ধরনের শ্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি শিশুর বেঁচে থাকার ও উন্নয়নের অধিকার রাষ্ট্রকেই নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সনদের ১৮ নম্বর অনুচ্ছেদে আছে, ‘শিশুর লালন পালন ও বিকাশে বাবা-মায়ের উভয়ের দায়িত্ব সক্রিয় করতে রাষ্ট্র উদ্যোগী হবে। ’
২০০২-০৩ সালের জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৭৯ লাখ।
যাদের বয়সসীমা ৫-১৭ বছর। এদের মধ্যে বালক ৭৩.৫ শতাংশ এবং বালিকা ২৬.৫ শতাংশ। ওই জরিপ অনুযায়ী ৫-১৪ বছর বয়সী শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪৯ লাখ। এসব শিশুর ৯৩.৩ শতাংশ কাজ করে অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে। প্রায় ২০ লাখ শিশু কাজ করে সেবা খাতে, ১৪ লাখ শিল্পকারখানায় আর সাড়ে ৪ লাখ কৃষি কাজে নিয়োজিত আছে।
প্রায় ১৩ লাখ শিশু সপ্তাহে ৪৩ ঘণ্টার বেশি কাজ করে।
জরিপ অনুযায়ী শিশুশ্রমের কারণগুলো হল দারিদ্র্য, দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বয়স্ক বেকারত্ব, বিশৃঙ্খল কর্ম পরিবেশ, শ্রমিক শোষণ, নীচু মানের জীবনযাপন ও শিক্ষা, উপযুক্ত আইন, আইন প্রয়োগ ও বিধিবিধানের অভাব, লিঙ্গবৈষম্য, শিশুশ্রমের পক্ষে প্রচলিত যুক্তি।
ভাবতে অবাক লাগে, শিশুদের যৌন সংক্রমণ হতে পারে এমন কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে এইডস রোগীর সংখ্যা। এ কারণে অনেক শিশুকে প্রাণ দিতে হচ্ছে।
আমরা মে দিবসে শ্রমিকদের নিয়ে কত কিছু চিন্তা করি। এই চিন্তাগুলোর মধ্যে শিশুশ্রম নিয়েও ভাবা উচিত। শিশুরাই হচ্ছে জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে শিশুশ্রম।
মোঃ মাকসুদুর রহমান লিটন
ধানমণ্ডি, ঢাকা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।