গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তিনদিন ব্যাপী এই কার্টুন প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। সকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন ‘যায়যায়দিন' খ্যাত সাংবাদিক শফিক রেহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রদর্শনী বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক কার্টুনিস্ট ইব্রাহীম মন্ডল, বিশিষ্ট কার্টুনিস্ট আসিকুল হুদা প্রমুখ। প্রধান অতিথি প্রখ্যাত সাংবাদিক-কলামিস্ট আতাউস সামাদ শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে না পারলেও প্রদর্শনীর সাফল্য কামনা করে তিনি নাতিদীর্ঘ লিখিত বক্তব্য পাঠান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শফিক রেহমান কার্টুন শিল্পের ইতিহাস, বাংলাদেশ প্রেক্ষিত ও সমকালীন কার্টুনিস্টদের করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
তিনি কার্টুনিস্টদের উদ্দেশ্যে বলেন, সমসাময়িক জ্ঞান ও অর্ন্তদৃষ্টি দিয়ে কার্টুনকে আরো পরিশীলিত করতে হবে। তিনি সাংবাদিক না হয়ে কার্টুনিস্ট হতে পারলে খূশি হতেন বলে উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তার বলেন, ১৮৮৬ সাল থেকে কার্টুন পত্র-পত্রিকায় আসতে শুরু করে। দশ পাতা লিখে যা স্পষ্ট করা যায় না, তা একটি কার্টুন দিয়ে বুঝানো যায়। শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবাই কার্টুন বুঝেন।
প্রদর্শনী উন্মুক্ত হওয়ার আগেই কৌতুহলী দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। অতিথিবৃন্দ ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রদর্শনীস্থল জনারণ্যে পরিণত হয়। প্রদর্শনীতে ১০৮টি কার্টুন ঠাঁই পেয়েছে। এগুলোর মাধ্যম ডিজিটাল প্রিন্ট ও জলরঙ। এগুলোতে সমাজের নানা অসঙ্গতি ও বিভিন্ন সমস্যার শৈল্পিক প্রতিফলন ঘটেছে।
কার্টুনগুলোর মূল উপজীব্য রাজনৈতিক অসঙ্গতি। আসিকুল হুদা ছাড়াও প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন দৈনিক আমাদের সময়ের শেখ তোফাজ্জল হোসেন তোফা, দৈনিক সংগ্রামের সিনিয়র আর্টিস্ট ইব্রাহিম মন্ডল, দৈনিক নয়া দিগন্তের জাহিদ হাসান বেনু, ইংরেজী দৈনিক নিউএজের মেহেদী হক, ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের ‘কিশোর নিউজ লেটার' পত্রিকার আর্টিস্ট মহিউদ্দিন আকবর, নয়া দিগন্তের জুনিয়র আর্টিস্ট আজিজুর রহমান তালুকদার নিয়ন ও কিশোর কার্টুন শিল্পী হাসান মাহমুদ।
জাতীয় দৈনিক ও অন্যান্য পত্রিকার সাথে সংশ্লিষ্ট কার্টুনিস্টদের কার্টুনগুলোতে বিপন্ন গণতন্ত্র, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নামে ধোঁকাবাজি, বিচার বিভাগ ও প্রশাসন দলীয়করণ, মন্ত্রী-এমপিসহ সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি, মানবাধিকার লংঘন, আইন-শৃক্মখলার চরম অবনতি, দ্রব্য অগ্নিমূল্য, সাংবাদিক নির্যাতন, গণমাধ্যম দলন, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংকট, ট্রানজিটসহ ভারতের সকল দাবি শেখ হাসিনা সরকারের মিটিয়ে দেয়া ইত্যাদি রাষ্ট্রীয়, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামাজিক বিষয় উঠে এসেছে। অন্যায়-অসঙ্গতির বিরুদ্ধে আট কার্টুনিস্টের শিল্পীত সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি দর্শনার্থী মাত্রকেই নবচেতনায় উজ্জীবিত করে, দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলে। ক'জন দর্শনার্থী জানান, প্রদর্শনীটি তাদের ভালো লেগেছে।
তাই তো ঘুরে ফিরে দেখছেন। এই প্রদর্শনী আগামীকাল বুধবার শেষ হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।