আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রিমান্ডের নামে পুলিশের রমরমা ব্যবসা

দূর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার, লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশিথে যাত্রিরা হুশিয়ার।

রিমান্ড... যেখানে অপরাধীকে স্বীকার করানো হয় তার অপরাধের কথা। বের করা হয় অনেক অজানা তথ্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে রিমান্ডের নামে দেশে এসব কি চলছে?? আমি মনে করি রিমান্ড হল আসামী আর পুলিশের মধ্যে টাকার বিনিময়ে একটা সমঝোতার বৈঠক মাত্র। অপরাধ যাই হোক এখানে আর্থিক লেনদেনের কথা থাকবেই।

এখানে পুলিশ আসামীকে মানসিকভাবে দূবর্ল কারার জন্য শুরুতে মা-বাবাকে জড়িয়ে 'চ' বর্গিয় কিছু গালি ব্যবহার করবে। সাথে থাকে আরো ৫-৬ জন। মনে হয় কয়েকটা ক্ষুধার্থ নেড়ি কুত্তা গোল হয়ে চেয়ে আছে খাদ্যের দিকে। পাইসি আজকে। একই প্রশ্ন বার বার, হাজার বার।

পুলিশ কিন্তু ভালো করেই জানে কে অপরাধী, কে নির্দোষ। এরা মানুষের চেহারা পড়তে পারে, এটা তাদের বিশেষ গুণ। কিন্তু তবুও তারা তেনা পেচায়, ইচ্ছে করে। আসামীও বোঝে, পুলিশ জানে সে নির্দোষী। কিন্তু তবুও টর্চার চলছে।

এই চুুুুপোলা আর কি কি জানস ক? কিচ্ছু জানি না। সব জানস। জলদি স্বীকার কর। যেটা জানিনা সেটা স্বীকার কেমনে করবো। সব জানবি, কারেন্টের সর্ট দিলে সব জানবি।

বিলিভ মি আই এ্যম নট দেট কাইন্ড। ইংরেজী কম চুুুুুু। পাশাপাশি পুলিশ কিন্তু আসামীর চেয়ারা পড়ছে। দে কেন রিড দা ফেইস। ফিল করছে, আসামী নির্দোষ।

তবুও চলে হুমকি ধমকি। সে চুরির আসামী হোক আর ৯ খুনের আসামী হোক, চলে একই কায়দায়। ইচ্ছে করলে তোর জীবন এখানেই শেষ করে দিতে পারি। তরে ক্রয়ফায়ারে ফালামু। চিনস তুই কার হাতে পরছস।

চেহারা সুরত তো ভালো। তর বাপ কি করে?? শুরু হলো আসল কথা। যে উদ্দেশ্যে এত হয়রানি, ক্ষমতার অপপ্রয়োগ। আকারে ইঙ্গিতে বোঝানো হয় তারা ক্ষুদার্থ। হালুয়া রুটি ছাড়া কাজ হবে না।

খুনের আসামী থেকে দশ হাজার আর চুরির আসামী থেকে লাখ টাকাও দাবি করতে পারে আসামীর চেহারা দেখে। এরা চেহারা দেখেই বলে দিতে পারে কার থেকে কত আদায় করা সম্ভব। এদের কত্ত গুণ। এখানে আসামী অসহায়, হোক সে কোটিপতি। রিমান্ডের খেলা একছেটিয়া।

এখানে জয় পুলিশের। এই খেলা পাতানো। এখানে পুলিশ যা চায় তাই হতে বাধ্য। এক হাজার টকার বিনিময়ে সে আসামির পক্ষে লিখতে পারে আবার দশ লাখ পাওয়ার পরও আসামীর বিপক্ষে লিখতে পারে। জেলখানায় অনেককে দেখেছি যারা চুক্তি অনুযায়ী লাখ টাকা দিয়েও নিজের অনুকূলে রিপোর্ট লেখাতে পারনি।

উপরন্তু পুলিশ অস্বীকার করে। নাহ! কোন টাকাতো কেউ দেয় নাই। টাকা দিলেতো মামলা হালকা করে দিতাম। এখন দেখি কি করা যায়। আবারো চেহারায় হালুয়া রুটির কামনা।

এরা আরো চায়। এই লেনদেনের কোন হিসাব নেই। নেই কোন দলিল। মামলা ঝুলিয়ে রেখে তেনা পেচাতে থাকে। আবারো রিমান্ডের আবেদন করা হয়।

অনেকটা বাধ্য হয়ে মাসখানের পর একটা ফাইনাল চার্জশীট দেয়া হয়। ভাগ্য ভালো থাকলে তা আসামীর অনুকুলে যায়। কোর্টে পি.পি আসামির বিপক্ষে শক্ত অবস্থানে থাকলে জজ বা মেজিট্রেট জাবিন দিতে পারে না ( তবে এখানে পি.পি কেও হালুয়া রুটি খাওয়ানোর একটা অপশন থাকে)। অন্য দিকে এই কয়েক মাস আসামী জেলে পঁচতে থাকে। পুলিশকে কোন প্রভাবশালী লোক দ্বারা আসামীর পক্ষে ততবির করানো হলে আরেক বিপদ।

এতেকরে পুলিশকে হালুয়া-রুটি দিয়ে কোন মতে জান ছুটানোর যে অপশনটা থাকে সেটি মূলত বন্ধ হয়ে যায়। নাহ! টেকা পয়শা দিয়া কাজ হবে না, আমি কি ঘুষখোর নাকিরে? এতে আসামীর প্রতি পুলিশের ক্ষোভ আরো বেড়ে যেতে পারে। তবে রিমান্ডে সমযোতা না হলে চলে অমানুষিক নির্যাতন। জেলে একজনকে দেখলাম খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছে। অপরাধ, তার পকেটে গাজা পাওয়া গিয়েছিল।

রিমান্ডে ত্রিশ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছিল। দিতে না পারায় তার এই হাল করেছে। এতেই পুলিশ শান্ত হয়নি, সাথে ইয়াবা যোগ করে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছে। অথচ থানায় আমার চোখের সামনে একজনকে দেখেছি বেরিয়ে যেতে যার গাড়ি থেকে এক কার্টুন বিদেশী মদের বোতল উদ্ধার করেছে পুলিশ। সবই টাকার খেলা।

রিমান্ড আর সিদ্ধা ডিম। ছোট বেলা থেকে শুনে এসেছি রিমান্ড কক্ষে আর কিছু থাক বা না থাক সিদ্ধ ডিম নাকি থাকেই। রিমান্ডের কথা উঠলে বন্ধুরা সিদ্ধ ডিমের কথা মনে করিয়ে দেয়। আমার আগের পোষ্টে একজন প্রশ্ন করেছিল আমকে ডিম অফার করা হয়েছিল কিনা (হাসতে হাসেত শেষ)। না, আমাকে ডিম অফার করা হয়নি।

রিমান্ড কক্ষেও নেয়া হয়নি। তাই রিমান্ড কক্ষে সিদ্ধ ডিম থাকে কি থাকেনা তা দেখারও সৌভাগ্য আমার হয়নি। ২৫ তারিখ রাত এক টায় এই আই এর অফিস কক্ষে নেওয়া হয়েছিল ১৫ মিনিটের জন্য। অবশ্য থানায় নেয়ার পর রিমান্ডে নেয়ার আগে বেশ কয়েকবার অফিস কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। রিমান্ডের আগেই মোটামুটি একটা সমঝোতায় আসা সম্ভব হয়েছিল।

.......................................................................................... বর্তমান সরকার ডিবি পুলিশকে যে এক্সট্রিম পাওয়ার দিয়ে রেখেছে, এতে এরা কুত্তা পাগল হয়ে গেছে। এরা যে কি হারে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে তা লিখে শেষ করবার মত নয়। যে কাউকেই এরা সন্দেহ করে গ্রেফতার করতে পারে। যে কারো বিরুদ্ধে মামলা দিতে পারে। ইচ্ছেমত চার্জশীট দিতে পারে।

এগুলা যাচাই বাছাইয়ের কোন সুযোগ নেই। লড়াই হয় আদালতে। তবে ফাইনাল চার্জশীট যদি আসামীর বিপক্ষে যায় তবে উকিলের পক্ষে তেমন কিছু করা সম্ভব হয় না। তাই ফাইনাল চার্জশীটের আগেই পুলিশের সাথে একটা সমঝোতায় আসতেই হয়। আর এই সমঝোতার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পুলিশ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.