আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বপ্ন… এক গ্রাম্যবালকের মতো কুড়িয়ে যাওয়া লাগামহীন ঘুড়িগুলো

সামনে একটাই পথ। সে পথের নাম জয়।

প্রতিটা শৈশব -ই একটা নিজস্ব উত্কর্ষতার জায়গা নিয়ে বেড়ে ওঠা ; নিশ্চিত আর পরিরিকল্পনা মাফিক তো নয় ই বরং আপনার নিজের রংটি খুঁজে পেতে অক্লান্ত খেটে যাওয়া , পুরোটাই স্বেচ্ছায় ও পারিশ্রমিক ব্যতীত | অনেকটা নিজের অজান্তেই নিজেকে সবচেয়ে নিখুঁতভাবে আবিষ্কারের এক নেশা বলা যায় . . . . কেউবা খুজতেই থাকে নিজেকে অবাধ্য হারিয়ে যাওয়া . . প্রকৃতির কোলে, গাছের ছায়ায় , ছায়াহীন মানুষের কলকাকলীতে; শহর ছেড়ে সবসময় পালিয়ে বেড়ানোটাই একটা স্বভাবে পরিণত হয়ে ওঠে | আর ছয়জনের মতো পাঠ্যপুস্তকের বুক চিড়ে সে খুঁজে বেড়ায়না পৃথিবীর ইতিহাস, অথবা পরিসীমা মানচিত্রের অথবা কোনো সুশৃঙ্খল ব্যকরণের মারপ্যাচ; ভাবখানা এমন যেনো পিথাগোরাস, ওমর খৈয়াম,গ্যালিলিও, আইনস্টাইন আর যত সভ্যতার উপকরণ লিখিয়েদের বিন্দুমাত্র পাত্তা দেয়ার অবকাশ-ই নেই এতটুকু | বরং খুঁজে পাওয়া ধানকাটা আর নবান্ন উত্সব, শীতের দিনে গ্রাম্য চাদরে ঢাকা মানুষের চোখগুলো আর সাথে টিনের চালের নিচে লেপমুড়ি দিয়ে ঘুম বা তার অত্যানন্দ, অথবা শরতের উজ্জল আকাশের নিচে কোনো এক গ্রাম্যবালিকার হাতধরে বড়রাস্তা ধরে দ্বিধাহীন ছুটে যাওয়া বহুদূর আর বহু -দূরের কোনো অচেনা গন্তব্য, কখনো বা নিজেকে ভাবতে থাকা এক রাখাল ছেলে বা তাদের সঙ্গী অথবা আপনার বর্তমান পরিচয় ভুলে মিশে যাওয়া গেয়ো ঐ ছেলেপুলেদের দলে আর হারিয়ে যাওয়া দূর থেকে দূরের শাপলা-শালুকের বিল, কৈ মাছের ঝিল, পদ্যফোটা সবুজ বন | কখনো সখনো ওদের দলে মিশে ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে ছুটে যাওয়া কদমতলীর হাট অথবা বাবুই পাখীর বনে গিয়ে ওদের ছানাগুলিকে গাছের মগডাল হতে ধরে নিয়ে আসার অপচেষ্টা আর একাকী পুরুষ ও পারিবারিক স্ত্রী বাবুই এর বাসার পার্থক্য খুঁজে বেড়ানো এবং কখনো ছুটে যাওয়া ওদের বন্ধুদের দূরবর্তী নাম না জানা কোন গায়, বিকাল অবধি কাটিয়ে দেয়া মাছ ধরার বাশের তৈরী সুউচ্চ চাঙ এ আর ফেরার সময় তুলে নিয়ে ফিরে আসা এক নাওবোঝাই সাদা শাপলা | বিনিময়ে ওদেরকে দিতে পেরেছিলাম বোধহয় খানিকটা আন্তরিকতা – শিখিয়েছিলাম আমার ঢাকার বন্ধুদের সাথের যত খেলা, ক্রিকেটের দূর্বোধ্য নিয়মকানুন . . . স্পিন ও পেস বোলিংয়ের ভিন্নতা ও কৌশল, স্ট্রেইট ও ক্রস ব্যাটিং আর পীচের দূরত্ব ও বাউন্ডারির সীমানা . . . .হা ! হা !, কী যে পাগলামি ছিলো ওদের কাছে এগুলো ; তার চেয়ে বরং ওদের আগ্রহ অধিকতর খুঁজে পেতাম বিল –ফুটবল , দাড়িয়াবান্ধা আর গোল্লাছুটে এবং লোহার রিং নিয়ে গ্রাম থেকে গ্রাম চষে বেড়ানোতে অথবা বর্ষার পানির উপর দলীয় নৌকার রেস এ | যখন ফিরে আসতাম আমার নিজের শহর ঢাকায় . . . . যেনো মনেপ্রাণে চাইতাম ফিরে যেতে আবার বারংবার ; বাংলা গদ্য বইয়ের পৃষ্ঠাজুড়ে খুজতাম একপ্রস্থ গ্রামীন জমিন, একটা বড় গৃহস্থ্যবাড়ি, নিজেদের পুকুর, প্রশস্থ উঠোন, ছোটখাটো গোয়ালঘর , মাচার উপর চালকুমড়োর সৌন্ধর্যবিলাস, পাশে কলাগাছে ঝুলন্ত কলার থোর আর বাড়ির পাশে দিয়ে বয়ে যাওয়া গায়ের ছোট নদী যেখানে নিত্য ভেসে চলে মালবোঝাই পালতোলা নৌকা আর কখনো সখনো দেখা যায় দূরের কোনো গায়ের বড়নৌকায় করে উত্সবরত বিয়ের যাত্রীদল . . . . . নানা কাজের ফাঁকে চোখের সামনে যেনো ভেসে ওঠে অতিপরিচিত সেই দুরন্ন্ত গ্রাম্য মেয়ের ছবি আর আমার গ্রাম্য বন্ধুদের মতো ভরদুপুর অবধি দলবেধে সাতার কেটে বেড়ানো ছেলেপুলেদের একটি দল |

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.