শিক্ষা যেখানে অসম্পূর্ণ, জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।
ব্লগলাইফের শুরুতে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম বাধ্যতামূলক ধর্মশিক্ষা এবং আমার অসহায়ত্বকে তুলে ধরে। কিন্তু ব্লগের বেশিরভাগ বন্ধুরাই আমার উত্থাপিত সমস্যাটিকে গুরুত্ব না দিয়ে আমি কেন নাস্তিক, আমার ছেলেকে কেন ওদের মত (অন্ধ) বানাইনি, কেন তাকে শিশু বয়সেই নাস্তিকতা (আলো) শিখালাম, ইত্যাদি বিষয়ে বিশাল ক্যাচাল লাগিয়ে দিয়েছিল। অনেক বন্ধুই অবশ্য কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন এবং তাদের প্রেরণা পেয়েই আমি উৎসাহিত বোধ করছি। কিন্তু আমাদের এ বিষয়ে একটা কিছু করার সময় এসেছে বোধ হয়।
নাস্তিক্যবাদ বিষয়ে ভার্চুয়াল জগতেই যা কিছু মানুষের উপস্থিতি টের পাওয়া যায় তবে সংখ্যাটা বর্তমানে নেহায়েত কম নয়। কিন্তু আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই নাস্তিকদের সম্পর্কে খুব খারাপ ধারণা রয়েছে। সামুতে এমন কয়েকজন নাস্তিক রয়েছে যারা সামুর সবার কাছেই প্রিয়। তারা অবশ্য আস্তিকদের সাথে ক্যাচাল থেকে নিজেদের বিরত রাখেন।
আমাদের আস্তিক বন্ধুরা যে জিনিসটা চোখে দেখেও বিশ্বাস করে না তা হলো সমাজের জন্য কোন নাস্তিকই ক্ষতিকারক নয় বরং প্রতিটা নাস্তিকই তার মানবতাবাদী মন দিয়ে যার যার সামর্থ্যমত সমাজের উপকার করে যাচ্ছে।
তারা উল্টো অনেক না দেখা বস্তুতেই বিশ্বাস করবে এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকারক ধর্ম ধারক ও প্রচারকদের বাহবা দিবে।
আমাদের দেশে পরিবারের কর্তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধান সবাই-ই ধর্মকে নিজ নিজ সুবিধায় ব্যবহার করছে যা সাধারণ নাগরিকদের জন্য মোটেই সুখকর কিছু বয়ে আনছে না। কিন্তু আমাদের বেশিরভাগ ভুক্তভোগীরাই জানে না যে তাদের এ অবস্থার জন্য ধর্ম কতখানি দায়ী। ধর্ম তথা ধর্ম থেকে উদ্ভুত মানসিকতা আমাদের সমাজের নারীদের কর্মবিমুখ করে না রাখলে আমাদের জিডিপির পরিমাণ অনেক বাড়তে পারত।
আসল কথায় আসি।
আমার ছেলের ধর্মশিক্ষা বিষয়ে আমি যে সমস্যায় পড়েছি অনেকেই হয়তো এরকম সমস্যায় পড়বেন। হয়তো একভাবে চালিয়েও যাবেন। কিন্তু যে শিক্ষা একজন শিশুকে বাস্তব উপলব্ধি থেকে অবাস্তবের পথে, আলো থেকে অন্ধকারের পথে নিয়ে যায় তার অপ্রয়োজনিয়তাকে তুলে ধরে আমাদেরও কিছু করা দরকার।
ব্লগের অনেক বন্ধু-বান্ধব রয়েছেন যারা পত্রিকার সাথে সংযুক্ত। দু'একটা কলামও কি লেখা যায় না এ বিষয়ে? একটা সাত-আট বছরের শিশুর মধ্যে ধর্ম শিক্ষার যে কুপ্রভাব পড়ে তা তুলে ধরে এবং ধর্মহীন সেক্যুলারিজম শিক্ষা আমাদের শিশুদের কীভাবে মনোবিকাশ ঘটাতে পারে এ বিষয়টি তুলে ধরে পত্রিকায় লেখা যেতে পারে।
যারা গীতিকার তারা গান লিখতে পারেন। ভারতের ক্যাকটাস যখন গায় 'নাকি ভগবান পেয়েছেন কারণ মানুষের হাতে নিউক্লিয়ার উইপন' এবং সেসব গান জনপ্রিয়তাও পায় আমরা কেন লিখতে পারি না। এক্ষেত্রে প্রথমে ব্যান্ড সঙ্গীত দিয়েই শুরু করতে হবে। দু'চারটা গান হিট করাতে পারলে অনেক এগুনো যাবে।
আমাদের দেশের নাস্তিক্যবাদের অস্তিত্ব পাওয়া যায় কেবল প্রবন্ধ ও কবিতায় যা বেশিরভাগ মানুষই পড়ে না।
উপন্যাসের মাধ্যমেও তুলে ধরা যেতে পারে।
আরো কী কী পথে আমরা এগুতে পারি তা আপনাদের কাছ থেকে জানতে চাচ্ছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।