আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাকফুল ✿ ( পড়লে কমেন্ট বাধ্যতামূলক,হে হে)

নির্বোধের সঙ্গে তর্কে যেয়ো না। সে তোমাকে নিজের পর্যায়ে নামিয়ে আনবে এবং নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে তোমাকে হারিয়ে দেবে। ১ “আমার না ছোট থেকেই নাকফুল জিনিসটা পছন্দ না। “ নিলিমার পাশে দিয়ে হেঁটে গেল দুইজন তরুণী। তাদের একজন নাকফুল পরা।

সেটা দেখেই নিলিমা কথাটা বর্ষণকে বলল। বর্ষণ তখন আনমনে। লেকের টলমল পানিগুলোর দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে। নিলিমার কথায় চেতনা ফিরে পেল। “ কিন্তু ইদানীং কেন যেন অনেক ভাললাগে।

“ বর্ষণ তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, “ কি বল!নাকফুল ভাললাগে? আমার তো একটুও ভাল লাগেনা। কি যে করেনা মেয়েরা। গয়না পরার জন্য নাক ছিদ্র করে গয়না পরে! কি ভয়ঙ্কর!” বর্ষণের এমন কথা শুনে নিলিমা একদম চুপসে গেল। ভেবেছিল মাত্র বলবে যে আমি নাক পিয়ারস করাতে চাই, কিন্তু এখন কিভাবে বলবে। নাহ আমি নাকফুল পরবই।

দেখি রাজি করাতে পারি কিনা। “কিন্তু আমার খুব ভাল লাগে। আমি নাক পিয়ারস করাই? ” এক রকম আবদার-ই করলো ও। বর্ষণ অবাক “কি বলছ! তুমি নাকে ছিদ্র করাবে? না না! এত সুন্দর নাকটা নষ্ট করোনা। না না।

“ “ কোথায় আমার নাক একদম সুন্দর না। আর নাকফুল পরলে দেখবা সুন্দর লাগবে। আমার অনেক ইচ্ছে। প্লিজ করিনা? প্লিজ” “ হুম ঠিক আছে কর। ভাললাগে যেহেতু কর।

কিন্তু আমার বাসায় এটা কেও পছন্দ করেনা। মা ও কখনো নাকফুল পরেনি” “অ্যান্টি ও নাকফুল পরেনা! আর তোমার নানি, উনি তো পরে?” অবাক জিজ্ঞাসা নিলিমার। “না উনি ও পরেনা। আমার কোন সমস্যা নেই। তোমার ভাললাগলে তুমি করে ফেলো।

“ বর্ষণের উত্তর। নিলিমা ভাল ভাবেই বুঝল বর্ষণ জিনিসটা একদম পছন্দ করছেনা। অন্য কোনকিছু হলে সে অবশ্যই বাদ দিতো কিন্তু নাকফুল পরার সিদ্ধান্ত ভেস্তে দিতে মন চাচ্ছেনা। থাক করেই ফেলি। ও নাকফুল পরা অবস্থায় আমাকে দেখলে নিশ্চয়ই বলবে ভালই তো লাগছে, বিশ্বাস নিলিমার।

২ ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে নিলিমা। হঠাৎ ঠুস...... উফ হাল্কা বেথা পেল নাকে বুঝতে পারল নাকফুল পরা শেষ। শক্ত করে হাত ধরে আছে বান্ধবী নাবিলা। কিরে বেথা পেয়েছিস- প্রশ্ন তার। প্রশ্নের উত্তর না দিলে চোখ খুলে আয়নাতে তাকাল।

অবাক হয়ে তাকিয়ে প্রশ্ন “ দোস্ত আমাকে কি বেশি উদ্ভট লাগছে? ইস দূর কেমন লাগছে!” নিলিমাকে থামানোর জন্য নাবিলা বলে “নাহ। অনেক ভাল লাগতেসেরে। “ কিন্তু তাতেও শান্ত হতে পারেনা ও। ফোনটা বেজে উঠলো। “হ্যালো?” “এই কি অবস্থা? নাক ছিদ্র করেছো? ব্যাথা পেয়েছ? কষ্ট হচ্ছে? রেস্ট নাও তো।

“ ফোনে বর্ষণের উদ্বিগ্ন কণ্ঠ। “ ইস এমন ভাবে বলছ যেন আমার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে!হে হে। আর নাক ছিদ্র কি আবার ? বল পিয়ারস আমি ঠিক আছি। কিন্তু আমাকে খুব বাজে লাগতেসে দেখতে! উহু উহু আমার কি হবে। “ “ দেখলে? আমি মানা করেছিলাম।

এখন বুঝো। যাক তুমি অপেক্ষা করো আমি আসতেছি। “ বর্ষণের কথা শুনে খুব মন খারাপ হয় নিলিমার। নাহ কেন এই কাজ করলাম। কথা শোনা উচিৎ ছিল।

ইশ কেমন লাগতেসে দেখতে। এই অবস্থায় আমাকে দেখলে ও অনেক রাগ করবে। হাসতেও পারে। ধ্যাত লজ্জায় নিলিমা মাথা নিচু করে মুখ ঢেকে রইল। ৩ একঘণ্টা পর.................... “দেখিতো আমার বউটাকে কেমন লাগছে, দেখি।

মাথাটা উঁচু করো দেখিনা?” হঠাৎ বর্ষণের কথায় চমকে উঠলো নিলিমা। “হুম ভালই তো লাগছে দেখি। এই নাও এটা তোমার জন্য। “ বলে বর্ষণ একটা নাকফুল এগিয়ে দিল। ঝিলিক দাওয়া লাল স্টোনের।

“ থাঙ্ক ইয়উ । কিন্তু লাল! আমাকে তো লাল মানবেনা। ইশ” নিজেকে কেমন লাগছে না লাগছে এইসব ভাবতে ভাবতে মুখ ফসকে কথাটা বলে ফেলল ও। বর্ষণের মুখটা সাথে সাথে কাল হয়ে গেল। কি ভেবেছিল নিলিমা অনেক খুশি হবে।

কেন যেন খুব খারাপ লাগতে লাগলো । নিলিমা কথাটা বলেই ভুল বুঝতে পারলো। এ কি করলাম। যে কিনা নাকফুল পছন্দ করেনা, যার কিনা রাগ হওয়ার কথা সে কিনা নাকফুল নিয়ে এসেছে শুধুমাত্র আমার জন্য!আর আমি কিনা এই প্রতিদান দিলাম। সাথে সাথে বর্ষণের হাতটা জাপটে ধরে ও।

টলটলে চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকে, মনে মনে বলে আমি বুঝতে পারিনি। আমাকে মাফ করে দাও বর্ষণ। তুমি আমাকে এত ভালোবাসো ?...... কিন্তু কথাগুলো মুখে বলতে পারেনা। বর্ষণ ও তার মনের ভাষাটা যেন বুঝে নিয়ে ওর হাতটা আর জোরে চেপে ধরল আর মনে মনে যেন বলল হ্যাঁ তোমাকে অনেক ভালোবাসি। .................................................................. শাবানা জামান গল্পটা বলা শেষ হতেই তার ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া নাতি চিৎকার করে উঠলো।

“ অসাধারণ দাদী। অসাধারণ। তুমি কিভাবে এত সুন্দর করে গল্প বানাও বলতো ? এটাই আমি ছোট গল্প লিখার প্রতিযোগীটায় পাঠাবো। দারুন প্লট দিয়েছ গল্পের। আমি একটু গুছিয়ে সাজিয়ে পাঠিয়ে দিব।

কেমন? আচ্ছা দিস বলে শাবানা জামানের মুখে হাসি। আয়নাটাতে তাকালেন। চোখে মোটা কাল পুরু কাঁচের ফ্রেম। চুলগুলো কাশফুলের মত সাদা। মুখে-চোখে বয়সের ছাপ।

কিন্তু নাকের নাকফুলটি এখনো উজ্জ্বল। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।