আমি বিকালে মনির সাথে বের হইনি। ও একাই মার্কেট গেল। মেহেদী পাতা তুলে বাটলাম। চা পাতি জ্বাল দিয়ে গাঢ় রং তৈরী করে অপেক্ষা করছিলাম। মা মাঝে মাঝে এসে এটা সেটা করার ফাঁকে আমাকে দেখে যায়।
ভাবখানা এরকম যে, তার মেয়ে কিছুই বুঝতে পাচ্ছে না।
সন্ধ্যার আগে আগে মনি মার্কেট থেকে ফিরল। সাথে অনেক বোচকা বাচকি। ও আমার জন্যে কাশমীরি গোলাপ গাছ নিয়ে এসেছে। আমি গোলাপ খুব পছন্দ করি।
দেশি বিদেশী মিলিয়ে সাত কালারের তেরটা গোলাপ গাছ আছে। শীতের ভেতর অনেক বড় বড় ফুল হয়। সে সময় পাড়াপড়শীরা এসে ভীড় করে। এ বছর নাইট কুইন লাগিয়েছি। দেখি কবে ফুল ফোটে।
মনি-আমি ছাদে গেলাম। বিকাল টা আজ খুব ভাল লাগছে। হাত পা রাঙ্গাব; মাথায় কোন টেনশন নাই। তার উপর মনির প্রেমিকের কথা শোনার জন্যে মনটা ছটফট করছে। ওর পার্টনারের মার্কেটে দোকান আছে।
কেনাকাটির ফাঁকে মনি যে ছেলেটির সাথে দেখা করবে তা কিন্তু আমাকে বলেনি। তবে আমি বুঝেছিলাম। ও সে জন্যেই আজ মার্কেটিঙের বায়না ধরেছিল। আমি কায়দা করে গেলাম না।
যা হোক,আমাকে প্রথমে চা রং দিতে নিল।
সাথে সাথে বকবকানি শুরু । একটা দু কথা বলছে আর খিল খিল করে হাসছে। হাসির তোড়ে আমার পায়ের ডিজাইন আঁকাবাঁকা হয়ে যাচ্ছে। সেদিকে কোন খেয়াল নেই। হাসির কথা না, তাও হাসছে।
মনে হচ্ছে কথাগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে হাস্যকর কৌতুক। এমন অবস্থা যে আমার নিজেরিই আফসোস হতে লাগল। আমার এরকম কোন গল্প নেই। কোন প্রেমিকও নেই।
আচ্ছা প্রেম করা, প্রেমিকের সাথে কথা বলা, কিংবা ঘুরতে যাওয়া; এসব কি অনেক মধুর ব্যাপার? অনেক মজার? মজার যদি না হত, তাহলে তো মনি এত খুশি হত না।
মনে মনে এসব ভাবছি। আর এর মধ্যে খেলাম একটা চিমটি। কি রে কাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিস? এ কথা বলেই আবারও হাসি। ওকে তো এসব জিজ্ঞেস করা যাবে না। খ্যাপাবে।
তখনই ভাবলাম এই চিন্তাটাই লিখে রাখব। দেখি, হয়ত কোন দিন নিজে নিজে উত্তর খুঁজে পাব।
(চলবে ৭)
২০০০ এর ডাইরী পর্ব ৮
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।