আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আম্মার হাতের রান্না



মায়ের হাতের রান্না নিয়ে নতুন করে তো বলার কিছু নেই, সবার কাছেই তার মায়ের হাতের রান্না খুব প্রিয়। আমি শুধু কয়েকটা খাবারের কথা বলব, যেগুলো আমার আম্মার রান্না আমার খুব বেশি ভালো লাগে, আর ঐ স্বাদ অন্য কারুর রান্নায় পাই না। কোনটা দিয়ে যে শুরু করি। আচ্ছা নিরামিষ দিয়েই করা যাক। আম্মার হাতের পালং শাক ভাজি অনেক বেশি মজা লাগে।

আমি বানালে যে কেন এরকম মজা হয় না সেটাই বুঝি না। আম্মা ভুনা খিচুরী আমার এত পছন্দ যে আমি বাসায় গেলে প্রায়ই আম্মা চট করে একটু খিচুরী বসিয়ে দেন চুলায়। আম্মার পোলাও রান্নাও আমার খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে যদি পোলাওতে একটু জাফরান দেন, তখনতো বারবার নিয়ে শুধু খেতে থাকি, পেট ভরলেও মন ভরতে চায় না। ছোটবেলায় এই জাফরান দেয়া পোলাওকে আমি বলতাম, লাল পোলাও।

আম্মাকে বলতাম লাল পোলাও বানাতে। ইদানিং আর এই পোলাও রান্না করেন না আম্মা। অনেকদিন পর সেদিন করেছিলেন। খেয়ে ভাগ্নে বলে, নানী তুমি এখন থেকে সব সময় এই রকম পোলাও বানাবা। মনে হল যেন আবার সেই ছোটকালে ফিরে গেছি আর আমার কথাগুলো ভাগ্নে বলে দিচ্ছে।

আম্মার হাতের পাটিসাপটা পিঠা আর ভাপা পিঠার কোন তুলনাই হয় না। অনেক জায়গায় অনেক এক্সপার্ট রাঁধুনির বানানো পিঠা খেয়েছি, কিন্তু সবার পিঠা আম্মার পিঠার কাছে ফেল। আর নারকেল দিয়ে একটা পিঠা বানায় আম্মা, চেগা পিঠা বলে। ঐ পিঠাও আম্মার চেয়ে মজা করে কেউ বানাতে পারে না। ছোট ভাই এই পিঠার নাম দিয়েছিল চেক পিঠা।

আম্মা অনেক রকম আচার বানান। এর মধ্যে সবচেয়ে মজার হয় বড়ইয়ের মিষ্টি আচার। বাসায় কখনও আচার বানালে সেটা বয়ামে একদিনের বেশিও থাকত না। সবাই মিলে খেয়ে সাবাড় করে দিতাম। পরে আম্মা বয়ামে আচার রাখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

আচার বানিয়ে কড়াইটা টেবিলের উপর রেখে ডাক দিতেন যে বানানো হয়ে গেছে। সবাই হুমড়ি খেয়ে কড়াইয়ের সব আচার একদিনে শেষ করে দিতাম। আচার বয়ামে ঢুকানোর কষ্ট থেকে আম্মাকে মুক্তি দিতাম। বলতে শুরু করলে আসলে অনেক খাবারের নাম মনে আসে। কোনটা রেখে কোনটা বলব।

শেষ করি আমার একটা অতি প্রিয় খাবার দিয়ে, যেটার কথা গত কয়েক দিন ধরে খুব মনে পড়ছে। ভাবছি আম্মাকে বলব বানিয়ে রাখতে, যেন বাড়ি গেলে খেতে পারি। সেটা হল খেজুরের গুড় দিয়ে বানানো মুড়ির মোয়া। এই জিনিস আম্মার মত মজা করে কেউ কি বানাতে পারে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।