চৈতালী বেলা শেষে-
ধূলো ওড়া এলোকেশে,
আজ নতুন গানে নতুন বানে
মেতেছে বাংলাদেশ।
নব হর্ষের বাহারে নব বর্ষের জোয়ারে
জাত-মত নির্বিশেষ।
আজ রিকসাওয়ালা মজুর কুলির দল
নিত্য অভাব অভিযোগ ভুলে তুলেছে শোরগোল
সেলাই দিদিমনিরা আমার আজকে দলে দলে
হাসি গানের তুফান উড়িয়ে
বৈশাখী মেলায় চলে।
শ্রমজীবী লাখ বাঙালী আজ ভুলেছে
চাল ডাল তেলের মূল্য কত?
ভুলেছে অক্ষমতা,প্রিয় মুখে অন্ন না দিতে পারার ক্ষত!
ন্যায্য মূল্যের দোকানে লাইনে চাতক পাখির মত
যারা দাড়ায় নির্বিকার,আজ তারাও এসেছে শত।
ক্ষমতায় বসে যারা চড়ে বড় বড় গাড়ি
তারাও এসেছে আজ রাজপথে মঙ্গল শোভাযাত্রা ধরি!
এ.সি. ছাড়া যাদের প্রাণ যায় হা-হুতাসে
হায় অদ্ভুত বিচিত্র এ দেশ
আজকে তারাই চরম তৃপ্ত তালের পাখার বাতাসে!
সরু চাল আর কোরমা কাবাবে উদর যাদের ভরা
আজ সানকিতে দুটো পান্তাভাত নিয়ে
রাস্তায় বসেছে তারা!
শাহবাগের মোড়ে পথশিশুরা
হেসে খায় লুটোপুটি
বিধি একি তব লীলাখেলা?
উচু তলার ওই ব্রাক্ষ্মনেরা ফকির একবেলা!
সরল চাষীর বেরসিক কোন কলেজ পড়ুয়া ছেলে
টি.এস.সি. িকংবা চারুকলা গিয়ে থতমত
সংকর দেশে খাটি বাঙালী আজ অবিরত।
দিনরাত চায়নিজে যারা যাওয়া আসায় অস্থির
সানকি হাতে পান্তা খেতে তারাই করেছে ভিড়!
সুপ্রীম কোর্টের বাবুর দল যারা বাংলায় করেনাক কাজ
মঙ্গল যাত্রার অগ্রপথে তারাও জুটেছে আজ!
ইউরোপীয় ভারতীয় পোশাকি আদিখ্যেতায়-
যাদের নিত্য ছলকলা,
আজকে তারাই মুখোশপরা বাঙালী একবেলা!
মুখে-মুখে যাদের ইংরেজী বুলি,হিন্দী গানের কথা
বাংলা তিহ্যে তারাই জুড়েছে আজ বাঙালী বারতা
হায় বাঙালী হায়-
মোঘল আকবরের পরে কত পানি বয়ে গেছে
পদ্মা মেঘনা যমুনায়।
অহর্নিশ অন্যের সংস্কৃতি ধার করে চলা
অন্যের কথা অনুসরণ করে বলা,
বর্ষব্যাপী ভিনদেশী মোরা
আজ একটি দিনের তরে-
বাংলা নববর্ষ দিল সবারে বাঙালী করে!
যা কিছু মোদের তাই ফেলি ছুড়ে,পরকে জড়ায়ে বুকে
সঙ-বাহারী মুখোশ পড়েছি সমস্ত বাঙালী মুখে!
---সোহেলুর রহমান
রাজবাড়ী,১২.০৮.২০০৮।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।