আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাগরিক জীবনের দুর্বিসহ যন্ত্রনার খন্ডচিত্র



আমি আমার কথাই বলি, অন্যের কথা না হয় বাদ-ই দিলাম। গতকাল অফিস থেকে বের হলাম সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। প্রায় আধাঘন্টা মতিঝিল শাপলা চত্তরে অপেক্ষার পর একটি বিকল্পের গাড়ি আসলো। শুরু হল শতাধিক লোকের সাথে শতমুখি যুদ্ধ, কে আগে বাসে উঠতে পারে। প্রায় পাঁচ-সাত মিনিট যুদ্ধ চলল।

যুদ্ধে আমি পরাজিত হলাম। বাসে উঠতে পারলাম না। আবার অপেক্ষার পালা। আরও প্রায় দশ মিনিট পর এলো একটি সিল্কসিটি গাড়ী। আবারো যুদ্ধ।

যাক, এবার জয়ী হলাম। বাসে কোনরকমে উঠতে পারলাম। একেবারে পেছনের সিটে কোন রকমে বসতে পারলাম। চাপাচাপি কোরে পাঁচজন। বাস চলা শুরু করলো, শেষ কখন হবে জানি না।

পল্টনে জ্যাম। প্রেস ক্লাবের সামনে জ্যাম, শাহবাগের জ্যাম। শাহবাগ থেকে ফার্মগেট পুরা রাস্তা জ্যাম। খামারবাড়ি এসে আর গাড়ি চলেই না, বিজয় সহনি পর্যন্ত জ্যাম। জ্যাম তো জ্যাম-ই,যেন শেষ হবার নয়।

অসহনীয় গরম। পাশের সিটে বসা লোকের শরীরে উদ্ভট গন্ধ। এদিকে আবার আমার পেট খারাপ হয়েছে, দুপুরে রেঁস্তোরায় খেয়ে। ছটফট করছি, যেন প্রাণটা বের হয়ে যাবে। যাহোক, অবশেষে মিরপুর-১০ এ পৌঁছালাম রাত সাড়ে দশটায়।

বাস থেকে নেমেই বাসার দিকে দৌড় দিলাম। বাসায় পৌঁছেই দেখি বিদ্যুৎ নাই। লিফট বন্ধ। সাত তালায় উঠলাম সিঁড়ি বেয়ে। বাসায় ঢুকেই ব্যাগটা রেখে বাথরুমে ঢুকলাম।

দ্রুত প্যান্টটা খুলে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিলাম। যাক, একটু শান্তি পেলাম। শৌচ করার জন্য পানি নিতে ট্যাপটা ছাড়লাম। এবার আমার চোখ উলটে গেল। পানি নাই।

বালটিতে দেখলাম, সেখানেও নাই। রিজার্ভ ট্যাংকিতে দেখলাম,সেখানেও নাই। এরপর কি করেছি সেটা বলা যাবে না। কোন রকমে বাথরুম থেকে বের হলাম। দেখি রান্না হয়নি, বুয়া আসেনি।

পাঁচজন ব্যাচেলর থাকি। এখন রান্না করতে হবে। পানি নাই, বিদ্যুৎ নাই। গ্যাস আছে কিনা সেটা এখন আর বললাম না। একটু জিরানোর জন্য ব্যালকনিতে গিয়ে বসলাম।

নিজেকে প্রশ্ন করলাম। আমরা কি কোন দিনও এই যানজট আর লোডশেডিং থেকে মুক্তি পাবোনা? আমাদের সরকার কি কোনদিনও এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে এগিয়ে আসবে না? আর আসবেই বা কি করে, সরকার এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ব্যস্ত। ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যাস্ত। সরকারের কি সে সময় আছে, সাধারণ মানুষের সমস্যা দেখার?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.