কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! ১
মার্ক জুকারবার্গ একটা ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন দেখছেন।
একটা বালতিতে অনেকগুলো কাঁকড়া। কাঁকড়াগুলো বালতির গা বেয়ে উপরে ওঠার চেষ্টা করছে। কিন্তু যেই না একটা কাঁকড়া বেশ খানিকটা উপরে উঠে গেছে, ওমনি আরেকটা কাঁকড়া খপ করে তার পা কামড়ে ধরে তাকে নামিয়ে নিয়ে আসছে। তারপর সেই কাঁকড়াটার মাথা ছিঁড়ে টপাটপ খেয়ে ফেলছে ওটা।
হঠাৎ একটা কাঁকড়া বড় একটা হা করে জুকারবার্গের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। ব্যাকগ্রাউন্ডে কোথায় যেন হু হু হা হা টাইপ একটা শব্দ হতে লাগল। জুকারবার্গ ভয়াবহ আতঙ্কে চিৎকার দিয়ে উঠলেন।
ঘুম থেকে উঠে জুকারবার্গ আবিষ্কার করলেন, সেই বাচ্চাকালের মত তার প্যান্ট ভিজে গেছে। বাজে গন্ধ আসছে।
পাশে তার এশিয়ান বউ ঘুমের মধ্যেই নাক কুঁচকে পাশ ফিরছে।
২
মার্ক জুকারবার্গ বউয়ের সাথে এশিয়া ভ্রমণে বের হয়েছেন।
চীন জাপান আরব মঙ্গোলিয়া ইরান ইরাক থাইল্যান্ড ভারত পাকিস্তান ইত্যাদি ভ্রমণ শেষে তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের মগবাজারে অবস্থিত হোটেল আল-বারাকায় অবস্থান করছেন। হোটেলে চেক ইন করার আগেই তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। রিসিপশনিস্ট তার কানে ফিসফিস করে বলেছে, "মাইয়ালোক লাগব? খাসা জিনিস।
সস্তায় পাবেন"।
বউয়ের অনুরোধে ভ্রমণকালে তিনি একবারও ফেসবুকে লগিন করেন নি। অনেকদিন লগিন না করে তার হৃদয়ের মধ্যে কেমন যেন আকুপাকু করছে। অগণিত মেয়ে ফ্যানদের সাথে চ্যাট করতে ইচ্ছা করছে।
এই অতৃপ্তি নিয়ে প্রথম রাতে ঘুমাতে গেলেন জুকারবার্গ।
তার বেরসিক বউ আগেই ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু ঘুমিয়ে শান্তি পেলেন না তিনি। কাঁকড়া জনিত দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠলেন মাঝরাতে।
"এ স্বপ্ন আমি কেন দেখলাম?" ভাবলেন তিনি।
নিজের প্যান্ট ধুতে ধুতে জুকারবার্গ ভাবলেন, নাহ, একজন সাইকিয়াট্রিস্টের সাথে কথা না বললেই নয়।
৩
স্কাইপিতে চ্যাট করছেন জুকারবার্গ ও বিখ্যাত সাইকিয়াট্রিস্ট সালেহ তিয়াস। জুকারবার্গ নিজেকে পোকারবার্গ বলে পরিচয় দিয়েছেন। নাহলে সাইকিয়াট্রিস্ট ব্যাটা এতক্ষণে উত্তেজনায় অজ্ঞান হয়ে যেত। হাজার হোক, খ্যাতির বিড়ম্বনা বলে একটা ব্যাপার আছে না?
সালেহ তিয়াসঃ জনাব, আপনার সমস্যা আমি ধরতে পেরেছি। আপনি কি জানেন এই কাঁকড়াগুলোর মিল দুনিয়ার কোন জাতির সাথে আছে?
জুকাঃ কোন জাতি?
সালেহঃ বাঙালি জাতি।
এরা একটা আজিব জাতি। এরা কখনই অন্যের ভালো সহ্য করতে পারে না। নিজেদের মধ্যে কেউ শাইন করা শুরু করলেই তাকে টেনে এনে খাঁদে ফেলে দেয়।
জুকাঃ ওহ!
সালেহঃ এদের মধ্যে একটা রোগ আছে, হাউকাউফিলিয়া। এরা সবসময় একটা হাউকাউ বাধিয়ে রাখতে পছন্দ করে।
ইস্যু পেলে তো কথাই নাই, ইস্যু ছাড়াও মাঝে মাঝে এরা হাউকাউ বাধিয়ে রাখে। হাউকাউই এদের জীবন যৌবন।
জুকাঃ (ঢোক গিলে) ওহ!
সালেহঃ সম্প্রতি এরা যেটা শুরু করেছে সেটা হচ্ছে ফেসবুক আইডি খাওয়াখাওয়ি। এরা নির্দ্বিধায় অন্য মতের লোকজনের আইডি খেয়ে দিচ্ছে, অন্য মতের আইডি খেয়ে শেষ হয়ে গেলে নিজের মতাবলম্বীদের আইডি খেয়ে দিচ্ছে। তাও শেষ হয়ে গেলে নিজের আইডি নিজেই খেয়ে ফেলছে।
আপনার ফেসবুক আইডি নেই তো?
জুকাঃ (ভয়াবহ আতঙ্কে) ন্নন্না...না!
সালেহঃ ভালো। ফেসবুকে বেশি সময় নষ্ট করবেন না। ফেসবুক খুব খারাপ। আর বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছেন ভালো কথা, তাড়াতাড়ি জান হাতে ফিরে যান। নাহলে দেখবেন কবে এই খাওয়াখাওয়ি ইস্যুকে কেন্দ্র করে লোকজন রাস্তায় নেমে এসে একে অপরকে খাওয়া শুরু করেছে।
আপনাকেও খেয়ে ফেলতে পারে, বলা যায় না।
জুকাঃ (আতঙ্কে প্রায় অজ্ঞান অবস্থায়) আচ্ছা!
অতঃপর জুকারবার্গ ল্যাপি বন্ধ করে তার বউয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, "জানটুস, চল ভাগি"।
জুকারবার্গের এশিয়ান বউ মুখ ঝামটা দিয়ে বলল, "মোস্ট ওয়েলকাম ছবির অনন্ত জলিল ভাইয়াকে না দেখে আমি যাবোই না! আই লাভ অনন্ত!"
জুকারবার্গ ভয়াবহ আতঙ্কে তার বউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকলেন।
৪
বউ আশেপাশে নাই। খাবার হোটেলের টয়লেটে গেছে।
এই তো সুযোগ।
জুকারবার্গ ল্যাপিতে ফেসবুকে ঢুকলেন। নিজের আইডি আর পাসওয়ার্ড দিলেন।
একটু পরে বড় করে একটা মেসেজ এল, Your account has been permanently disabled due to posting of harassing contents...blah blah blah
"না-আ-আ-আ-আ-আ-আ-আ" বলে চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলেন মার্ক জুকারবার্গ। তার অজ্ঞান অবস্থার ছবিটা তুলে ফেসবুকে দিতে গিয়ে জনৈক আধুনিক ওয়েটার করিম মিয়ার মনে পড়ল, তার আইডি Robert Korim Pattinson গতকাল কে বা কারা রিপোর্ট করে বন্ধ করে দিয়েছে! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।