timursblog@yahoo.com
'লাইফ অন দ্যা মিসিসিপি' হচ্ছে মার্ক টোয়েনের সেরা বইগুলোর একটা । নিঃসন্দেহে এটা তাঁর সেরা নন-ফিকশন কাজ । বইটার প্রথম পঁচিশ চ্যাপ্টারের (যেখানে তিনি তাঁর পাইলট জীবনের কথা বলেছেন) মান টোয়েনের এর লেখা যে কোনো বইয়ের থেকে ভাল । এর পরের লেখা মানে নদীতে ভ্রমনের অংশটাও ভাল তবে ততটা সুখপাঠ্য নয় । বইটা মার্ক টোয়েনের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন কাজ বলেই মনে করেন তাঁর সমালোচকরা ।
মিসিসিপি নদী আক্ষরিক অর্থেই আমেরিকার ক্রসরোড । কারন দেশটা পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত হলেও নদীটা গেছে উত্তর-দক্ষিন দিকে । সুতরাং এই নদীতেই উভয় অক্ষ মিলিত হয়েছে বলা চলে । গৃহযুদ্ধ-পুর্ব মিসিসিপি নদীর যে ছবি তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন তা ঐতিহাসিক বিচারেও অনবদ্য ।
মাঝে মাঝেই নাটক লেখার বাতিক চাপত টোয়েনের মাথায় ।
কর্নেল সেলার্স (গিল্ডেড এজ) এর চরিত্রটা আবার মঞ্চে নামানো পাঁয়তারা করতে লাগলেন তিনি । সাথে নিলেন উইলিয়াম হাওয়েলকে ।
কিন্তু নাটকটা মোটেই জমল না । কারন এই নতুন সেলার্স চরিত্রটা অভিনেতা রেমনডের মতে পাগল ছাড়া কিছু না । মার্ক টোয়েন দমে না গিয়ে নিজের খরচে নামালে নাটক ।
কিন্তু দর্শকরা 'খেলো' না । একেবারে ফ্লপ হলো পুরো প্রচেষ্টাটা ।
সেই যাই হোক 1884-1885 সালের শীতকালে জর্জ ডাবি্লউ ক্যাবলের সাথে একটা লেকচার ট্যুরে বের হলেন মার্ক টোয়েন । তবে তার আগে ক্যাবল একটা মশকরা করলেন টোয়েনের সাথে ।
একটা ছাপানো চিঠি মার্ক টোয়েনের প্রায় দেড়শো জন বন্ধুর কাছে পাঠালেন ক্যাবল ।
তাতে তাঁদের পয়লা এপ্রিল, মানে এপ্রিল ফুল্স ডে তে মার্ক টোয়েনের কাছে অটোগ্রাফ চেয়ে চিঠি লিখতে বললেন । 1884 সালের পহেলা এপ্রিল মার্ক টোয়েন প্রায় দেড়শো অটোগ্রাফ প্রত্যাশী চিঠি পেলেন ।
চিঠিগুলো পেয়ে বেশ চমকে গেলেন তিনি । কারন প্রতিটা চিঠিতেই বেশ আজব কিছু অনুরোধ ছিল । একজন 'গজ হিসাবে' অটোগ্রাফ চেয়েছেন, আরেকজন 'ওজনদরে' ।
আরকজন বলেছেন যে অটোগ্রাফটা একটা চেকের সাথে দিলে ভাল হয় (!) । আরেকজনের আবদার 'লাইফ অন দ্যা মিসিসিপি'র প্রথম কয়েকটা চ্যাপ্টার যেন কপি করে তাতে সই করেন মার্ক টোয়েন । চিঠিগুলো পড়া শেষ করার আগেই অবশ্য মার্ক টোয়েন বুঝে গেছেন কেউ ঠাট্টা করছে তাঁর সাথে ।
যে যা হোক সেই শরতকালে ক্যাবলের সাথে বক্তৃতা অভিযান ভালই চলল । কারন দুজনেই জনপ্রিয় লেখক ।
শিকাগো হয়ে কেওকুক, এমন কী হ্যানিবালেও গেলেন তাঁরা । মার্ক টোয়েনের একাশি বছর বয়স্ক মা জেইন ক্লিমেন্স এলেন স্যামের বক্তৃতা শুনতে । তাঁর মা ছোটবেলায় বলতেন 'স্যামি যদি ফাঁসির দড়িতে না ঝোলে , তাহলে বেঁচে থাকলে একটা কিছু হবে (!?!) । ' হার্টফোর্ডে বেড়াতে এলেও হ্যানিবালেই বেশিরভাগ সময় থাকতেন জেইন ক্লিমেন্স । আর বড়ভাই ওরাইওন থাকতেন কেওকুকে ।
সুস্থ অবস্থায় মা'কে সেই শেষবার দেখবেন ক্লিমেন্স ।
ক্রিসমাসের সময় হার্টফোর্ডে গিয়ে একটা সারপ্রাইজ পেলেন টোয়েন । লিভি সব বাচ্চাদের নিয়ে 'দ্যা প্রিন্স অ্যান্ড দ্য পপার' এর নাট্যরুপ পরিবেশন করলেন । বিকেল বেলায় বাসায় এসে দেখলেন ভীষন রহস্যময় কাজ-কারবার চলছে ।
তারপরে প্রতিবেশী চার্লস ওয়ার্নারের বাসায় ডাল পড়ল ওখানেই হচ্ছিল নাটকটা ।
সাংঘাতিক অভিভুত হলে টোয়েন । এমন কী ছোট্ট জিনও ছিল নাটকে । একটা টেবিলে বসে খালি মৃত্যু দন্ড সই করতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল জিন । প্রথম দিন দেখলেন তারপর নিজেই মাইলস হেন্ডন চরিত্র নিয়ে নাটকে ঢুকে গেলেন টোয়েন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।