আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মার্ক টোয়েন (পর্ব 27)

timursblog@yahoo.com

মার্ক টোয়েন এখন একজন সফল প্রকাশক । জেনারেল গ্র্যান্ট অর্থকষ্টে আছে শুনে তাঁকে আত্ব জীবনী লিখতে পরামর্শ দিলেন তিনি । সেঞ্চুরি পত্রিকায় গৃহযুদ্ধের অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে কয়েকটা প্রবন্ধ লিখেছিলেন গ্র্যান্ট, সেগুলোকে বই আকারে ছাপানোর ব্যাবস্থা করলেন টোয়েন । কেবল চাঁদা নিয়ে বই ছাপানোর ব্যাবস্থায় জেনারেলের খুব আস্থা ছিল না । কিন্তু তাঁর টাকার দরকার ছল খুব বেশি ।

কেউ যখন ছাপতে রাজী হলো না তখন মার্ক টোয়েন নিজেই ছাপবেন কথা দিলেন । লাভের সত্তর ভাগ পাবেন গ্র্যান্ট আর সমস্ত খরচাপাতি টোয়েনের । প্রচুর বিক্রি না হলে এভাবে বই ছাপা যে অসম্ভব সেটা জেনারেল গ্র্যান্টের মত বাইরের লোকও বুঝতে পেরেছিলেন । যাই হোক মার্ক টোয়েন লেগে থাকলেন । তারপর চুক্তি হলো ।

ক্যান্সারে আক্রান্ত জেনারেল গ্র্যান্ট তখন অসুস্থ ছিলেন । প্রথমে তিনি হাতে লিখতেন, তারপর একজন স্টেনোগ্রাফারকে ডিক্টেশান দিতেন । তারপরে যখন এত অসুস্থ হয়ে পড়লেন যে গলা দিয়ে শব্দ বেরোয় না তখন হাতে লিখে বইটা শেষ করে দিলেন । জেনারেল বুঝলেন যে তাঁর সময় শেষ হয়ে এসেছে, বইটা থেকে কত টাকা তাঁর পরিবার পেতে পারে সে ব্যাপারে একটা ধারনা তিনি জানতে চাইলেন । ক্লিমেন্স জানালেন এক লক্ষ কপি ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে, এবং লেখকের রোজগার প্রায় দেড় লাখ ডলার ।

আরো দ্বিগুন সংখ্যক বই বিক্রি হবে তিনি আশা করছেন । তেইশে জুলাই 1885 সালে জেনারেল গ্র্যান্ট পরলোক গমন করলেন । তিন লাখ কপি বিক্রি হয়েছিল বইটার । এবং মিসেস গ্র্যান্ট দুই লক্ষ ডলারের একটা চেক পেয়েছিলেন, সে যুগের সব চেয়ে বড় সন্মানীর চেক । পরে সব মিলিয়ে গ্র্যান্টের উত্তরাধীকারীরা প্রায় সাড়ে চার লাখ ডলার পেয়েছিলেন রয়্যাল্টি হিসেবে ।

কোয়্যারি ফামের্র সেই গ্রীস্মটা ক্লিমেন্সের জন্য সবচেয়ে সুখকর বলা যায় । মার্ক টোয়েনের বয়স তখন পঞ্চাশ । মার্ক টোয়েনের মেয়ে সুজি ক্লিমেন্স তার হাতে লেখা ডায়েরিতে বলেছে । 'আমরা খুবই সুখী পরিবার । বাড়িতে আছে বাবা, মা, জিন , ক্লারা আর আমি ।

বাবার কথা অনেকবার অনেক লোকে বলেছে কিন্তু তবু অনেক কিছূ বলা হয় নি । বাবার চুল ঘন আর ধুসর, চোখ নীল আর নাক রোমানদের মত । বাবা বেশ মেজাজী লোক আর খুব আপন ভোলা । আমাদের বাড়িতে এগারোটা বিড়াল আছে । ' পিছন ফিরে তাকিয়ে আমরা বলতে পারি খ্যাতি ও সাফল্যের মধ্যে গগনে অবস্থান করছিলেন তখন মার্ক টোয়েন ।

তার পরিবার পরিপুর্ন, পরিবেশ আদর্শ । অঢেল টাকা, লাখ লাখ মানুষের ভালবাসা আছে তাঁর পিছনে । যেখানেই যান জ্ঞানী-গুনী-মানী লোকেরা তাঁর সাহচর্য পেয়ে ধন্য হন । 30 এ নভেম্বর তাঁর জন্মদিনে এলেন ড. অলিভার ওয়েন্ডেল হোমস (ওই একই নামে মার্কিন সুপ্রিম কোটের্র বিচারপতির বাবা), অ্যান্ড্রু ল্যাং এবং বস্টনের সব বাঘা বাঘা লোকেরা । মার্ক টোয়েনে এক বন্ধুকে লিখেছিলেন ।

'আমার সাফল্যে আমি নিজেই ভীত বোধ করি । কারন আমি যা ধরি তাই সোনা হয়ে যাচ্ছে । '

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।