আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মার্ক টোয়েন (পর্ব ৩৯)

timursblog@yahoo.com

অক্সফোর্ড শহরে হুলুস্থুল পড়ে গেল মার্ক টোয়েন কে নিয়ে । শেলডোনিয়ান থিয়েটারে যখন ডিগ্রি নিতে গেলেন তখন আন্ডারগ্র্যাজুয়েটদের হৈ হুল্লোড়ে শোনা যাচ্ছিল না কিছু । পরদিন কাগজে লিখলো অনুষ্ঠানটা একেবারে 'সাইক্লোন' হয়েছে । রুডিয়ার্ড কিপলিং থেকে শূরু করে অনেক বিখ্যাত লোকই অক্সফোর্ডে সন্মানসুচক ডিগ্রি নিয়েছেন কিন্তু কারো বেলায় এমন কান্ড ঘটে নি । তবে মার্ক টোয়েন সবচেয়ে খুশি হয়েছিলেন রম্য-কার্টুন পত্রিকা পাঞ্চ যখন তাঁকে ডিনারে ডাকল তখন ।

পাঞ্চ ইতিমধ্যেই প্রথম পৃষ্ঠায় একটা কার্টুন দিয়ে মার্ক টোয়েনকে সন্মানিত করেছিল । পাঞ্চের স্টাফরা এর আগে কোনো বিদেশী লেখককে ডিনারে ইনভাইট করেনি । অক্সফোর্ডের ডিগ্রি ও ইংল্যান্ডে সংবর্ধনা মার্ক টোয়েনের দীর্ঘ জীবনের সবচেয়ে বড় সন্মানগুলোর একটা । পরের বছর হেনরি রজার্সের সাথে বারমুডাতে কাটালেন তিনি । ওদিকে কানেক্টিকাটের রেডিংএ নতুন বাড়ি 'স্টর্মফিল্ড' তৈরী হচ্ছিল বছরখানেক ধরে ।

আশ্চর্যের ব্যাপার এই বাড়ি দেখা দূরে থাক, বাড়ির নকশাও দেখেননি তিনি । 'যখন বাড়িটা তৈরী হবে, ফায়ার প্লেসের সামনে বিড়াল শুয়ে থাকবে আমি তখন বাড়িটা যতখুশি দেখতে পাবো' এই ছিল তাঁর যুক্তি । হতে পারে লিভির আর সুজির মৃত্যু তাঁকে বাড়ির ব্যাপারে এরকম উদাসীণ করে তুলেছিল । তবে নির্দেশ দেয়া ছিল, বাড়ির ঘরগুলো যেন বড় বড় হয় আর বিলিয়ার্ড রুমের রঙ যেন লাল হয় । ১৮ই জুন ১৯০৮ সালে বাড়ি বুঝে পেলেন তিনি ।

তবে ফিফথ অ্যাভিনিউএর বাড়িটা খালি করা হয় নি । স্টর্মফিল্ডকে মফস্বলের অবকাশ কাটানোর জায়গা হিসেবেই ভাবছিলেন মার্ক টোয়েন । ছটার সময়ে ঘুম থেকে উঠে দাড়ি কামিয়ে রেডিংএর উদ্দ্যেশ্যে ট্রেনে চাপলেন টোয়েন । স্টেশনে দেখা গেল বেশ কিছূ রিপোর্টার জমায়েত হয়েছে মার্ক টোয়েনের গৃহ প্রবেশ দেখতে । পকেট থেকে পয়সাভর্তি হাত বের করে সাথের লোকদের বললেন স্টেশনের পোর্টারদের দিতে ।

স্টেশন থেকে তিন মাইল ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে গেলেন তিনি । পথের দুপাশে ডেইজি আর ডগউড ফুটে ছিল তখন । পাহাড়ের ঢালগুলো ছিল সবুজ । গভীর চিন্তাম্বিত ভাবে মার্ক টোয়েন দেখছিলেন দুপাশের দৃশ্য । বয়ে চলা ঝর্ণা, আর নিউ ইংল্যান্ডের শাদা রঙ করা ঘরবাড়ি ছাড়িয়ে চলছিলেন তাঁরা ।

অবশেষে বাড়িটার এসে পৌঁছালেন তাঁরা । ইটালিয়ান ধাঁচের ভিলা, ফ্লোরেন্সের বাড়িটার আদলে তৈরি করা । এবং সতেরো বছর পর নিজস্ব বাড়িতে পা দিলেন তিনি আবার । বাড়িটা ঘুরে ফিরে খোলা একটা ফ্রেঞ্চ উইন্ডো দিয়ে বাইরে তাকালেন তিনি । নীল আকাশ আর খামারবাড়ির ছাদগুলো দেখা যাচ্ছিলো জানালা দিয়ে ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।