আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মার্ক টোয়েন (পর্ব 29)

timursblog@yahoo.com

1889 সালে 'এ কানেক্টিকাট ইয়াংকি ইন কিং আর্থার্স কোর্ট' বের হলো । মার্ক টোয়েন খোলাখুলিই বললেন এ হচ্ছে তাঁর শেষ বই । 1884 সালে হাক ফিনের পর পাঁচ বছর কোনো বই বের করেননি তিনি । তবে কথা রাখেননি তিনি এর পরেও বই লিখবেন তিনি । 'কানেক্টিকাট ইয়াংকি' ও ইংল্যান্ডের পটভুমিতে লেখা বই ।

তবে 'প্রিন্স অ্যান্ড দ্যা পপারের' মতো ঐতিহাসিক উপন্যাস না বরং টাইম ট্র্যাভেল-ফ্যান্টাসি । রাজা আর্থারও তো আর ঐতিহাসিক চরিত্র না ! আর বইটাতে প্রিন্স অ্যান্ড পপারের চেয়ে অনেক কড়া কৌতুককর ভাষায় লেখা । সেই গ্রীস্মে তাঁরা কোয়্যারি ফার্মে না গিয়ে ওন্টেওরাতে বন্ধুর কটেজে উঠলেন । সময়টা চমৎকার কাটল কিন্তু শেষ হলো খারাপভাবে । অগাস্টে কেওকুক থেকে ডাক এল, জেইন ক্লিমেন্স অসুস্থ ।

কয়েক সপ্তাহ পর মার্ক টোয়েনের মা অষ্ট আশি বছর বয়সে পরোলোক গমন করলেন । তারও কিছূ দিন পরে মার্ক টোয়েনের শ্বাশুড়িও মারা গেলেন । সময়টা মার্ক টোয়েনের জন্য ভাল যাচ্ছিল না । তিনি ভেবেছিলেন 'ইয়াংকি' বইটা থেকে তিনি যথেষ্ট টাকা পাবেন যাতে তিনি বর্তমানের প্রয়োজন কাটিয়ে উঠতে পারবেন । টাকা তিনি পেলেন ঠিকই কিন্তু টাইপ-সেটিং মেশিনটার পিছনে এতো টাকা গেল যে কুলিয়ে উঠতে পারা গেল না ।

এই যন্ত্রটা ছাপাখানা টাইপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাজাতে পারত । মার্ক টোয়েন যিনি অনেক বছর হাতে ছাপার হরফ কম্পোজ করেছিলেন সাংঘাতিক ভাবে আকৃষ্ট হয়েছিলেন যন্ত্রটার দিকে । জেমস পেইজ নামে এক উদ্ভাবক প্রায় দশ বছর আগে মেশিনটার মডেল বানিয়েছিলেন । কিন্তু যন্ত্রটাকে বাস্তবে কাজে লাগানোর জন্য যে পরিবর্তনগুলো করার প্রয়োজন ছিল সেগুলো করতে টাকা বেরিয়ে যাচ্ছিল মাসে মাসে । 1890 সালের শেষ দিকে মার্ক টোয়েন প্রায় দেউলিয়া হয়ে গেলেন যন্ত্রটার জন্য ।

প্রায় এক লাখ নব্বই হাজার তো চলে গেছিলই এর পিছনে, মোটা টাকা দেনাও জমেছিল তাঁর । সুতরাং মেশিনের চিন্তাটা বাদ দিয়ে আবার টাকার চিন্তা করতে হলো তাঁকে । প্রচুর পরিমানে প্রবন্ধ লিখতে লাগলেন তিনি । হাওয়েলের সাথে আবার ফেলে রাখা একটা নাটক মঞ্চস্থ করে ফেললেন 'দ্যা আমেরিকান ক্লেইম্যান্ট' । 1891 সালের জুন মাসে, হার্টফোডের্র বাড়িটা বেচে দিলেন ।

সতেরো বছর সুখের নীড় ছিল বাড়িটা, পৃথিবীর অনেক জ্ঞানী গুনী এ বাড়িতে পায়ের ধুলো দিয়েছেন । এটা ছেড়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে কষ্টকর ব্যাপার ছিল তাঁর পক্ষে । মিসেস ক্লিমেন্স শেষ বারের মত বাড়ির ঘর গুলো দেখে নিলেন । কোচোয়ান প্যাট্রিক ম্যাকালিয়ার, যে কিনা মার্ক টোয়েনে বিয়ের পর থেকেই এ বাড়ির কোচোয়ান শেষ বারের মতো ক্লিমেন্স দম্পতিকে স্টেশনে নিয়ে এল । এলমিরায় আর কখনো ফিরবেন না টোয়েন ।

প্রতিটা প্রবন্ধ এক হাজার ডলারে কিনে নেবে বলে খবরের কাগজের সাথে চুক্তি হলো । এই দুর্যোগে আমেরিকা না থেকে ইউরোপে থাকার পরিকল্পনা করলেন টোয়েন । হাতে ব্যাথা পাচ্ছিলেন তিনি, তাই উষ্ণ প্রস্রবনের জন্য বিখ্যাত এ-লো-বেঁ আর জার্মানীর মারিনবাডে । সেখান থেকে হাইডেলবার্গে গেলেন তাঁরা । রাইন নদীর অববাহিকায় কিছু দিন কাটিয়ে সুইজারল্যান্ডে উশি-লসানে গেলেন তাঁরা ।

কোনো বইয়ের জন্য প্লট খুঁজছিলেন তখন মার্ক টোয়েন । কিন্তু এত অলস জীবনে কোনোই সৃষ্টিশীল চিন্তা আসছিলো না ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।