মুম্বাইয়ের আর্থার রোড কারাগার থেকে পুনের ইয়েরাওয়াড়া কেন্দ্রীয় কারাগারে যাওয়ার আগে ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে সেখানকার কর্মচারীদের বিশেষ উপহার দিয়েছেন অস্ত্র মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বলিউডের অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত। তাঁদের জন্য ‘পুলিশগিরি’ ছবির ৫০০ টিকিটের ব্যবস্থা করে গেছেন এ ‘মুন্নাভাই’ তারকা।
সঞ্জয় দত্তকে ২১ মে দিবাগত রাতে আর্থার রোড কারাগার থেকে ইয়েরাওয়াড়া কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। গভীর রাতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ মুম্বাইয়ের আর্থার রোড কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে ওঠানো হয় সঞ্জয়কে। ভোরে তাঁকে পুনে কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
আর্থার রোড কারাগার ত্যাগের আগে সেখানকার কর্মচারীদের বিনা মূল্যে ‘পুলিশগিরি’ ছবি দেখার ব্যবস্থা করে গেছেন সঞ্জয়। তাঁদের ছবিটি দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ৫০০ টিকিট তিনি দিতে বলেছেন ছবির নির্মাতাদের। সঞ্জয় দত্ত ও প্রাচী দেশাই অভিনীত ‘পুলিশগিরি’ ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ৫ জুলাই। জানিয়েছে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’।
এ প্রসঙ্গে ‘পুলিশগিরি’ ছবির সহপ্রযোজক রাহুল আগারওয়াল জানিয়েছেন, ছবিটিতে পুলিশ চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয়।
তাঁর ইচ্ছে, আর্থার রোড কারাগারের কর্মচারীরা তাঁকে এই চরিত্রে দেখার সুযোগ পাক। সঞ্জয়ের অনুরোধ পাওয়ার পর তাঁদের বিনা মূল্যে ৫০০ টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৯৯৩ সালের মুম্বাই বিস্ফোরণ মামলায় অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে গত ২১ মার্চ সঞ্জয়কে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। এই মামলায় আগে দেড় বছর কারাভোগ করায় তাঁকে আর সাড়ে তিন বছর সাজা খাটতে হবে।
আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী গত ১৬ মে আত্মসমর্পণ করেন সঞ্জয়।
প্রথমে তাঁকে আর্থার রোড কারাগারের ১০ নম্বর ব্যারাকের আন্ডা সেলে রাখা হয়েছিল। ছোট্ট এ কুঠরিতেই থাকতেন পাকিস্তানি জঙ্গি আজমল কাসাব। ডিমের মতো দেখতে আট ফুট বাই ১০ ফুট আয়তনের এই কুঠরির অর্ধেকটা মাটির নিচে। তাই সেখানে ভালো করে আলো ঢোকে না। অন্ধকারাচ্ছন্ন আন্ডা সেলে রাখার পর থেকেই সঞ্জয়ের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়।
প্রথম দুই রাত তিনি একদমই ঘুমাতে পারেননি। সারা রাত জেগে ধর্মীয় বই পড়েছেন।
আজমল কাসাবের ফাঁসি কার্যকর হলেও একটা সময় আর্থার রোডের এ আন্ডা সেলেই তাঁর সময় কেটেছে। বিষয়টি জানার পর সেখানে কোনোভাবেই থাকতে পারছিলেন না সঞ্জয়। আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি সেল পরিবর্তনের আবেদন জানান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন সেলে স্থানান্তর করা হয় তাঁকে। সেখান থেকে পুনে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
শুধু ভারতই নয়, পুরো এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বন্দী ধারণক্ষমতা রয়েছে পুনের ইয়েরাওয়াড়া কারাগারের। কয়েদি হিসেবে সেখানে সঞ্জয় বিশেষ কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না। কারাগারের একটি বিশেষ কুঠরিতে তিনি থাকবেন।
সশ্রম কারাদণ্ড পাওয়া সঞ্জয়কে কারাগারে নির্দিষ্ট কিছু কাজও করতে হবে। তবে তাঁর জীবনের জন্য হুমকি হতে পারে, এমন কোনো ঘটনায় নিরাপত্তা পাবেন তিনি। কারাগারে প্রত্যেক কয়েদিকেই পরিচয়-স্মারক হিসেবে পৃথক একটি নম্বর দেওয়া হয়। পুনের ইয়ারাওয়াড়া কারাগারের এমনই একটি কয়েদি নম্বর ১৬৬৫৬। নম্বরটির বিশেষত্ব হচ্ছে, ‘খলনায়ক’ তারকা সঞ্জয় দত্তকে এ নম্বরটিই দেওয়া হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।