আমাদের সৌরজগতে রয়েছে এমনি এক ধরনের মহাজাগতিক গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে। পৃথিবী থেকে ওই গ্রহটির দূরত্ব ১ হাজার ৫০০ আলোকবর্ষ। নাম দেয়া হয়েছে কোরোটি ৯বি। আমাদের সৌরজগতের বাইরে এধরনের গ্রহ পাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। পৃথিবী থেকে খুঁজে পাওয়া যায় না এমন গ্রহ অনুসন্ধানের কাজে নিয়োজিত একটি মহাকাশ মিশন ওই মহাজাগতিক গ্রহটি শনাক্ত করেছে।
বিষয়টি নিয়ে কর্মরত দলের প্রধান গবেষক ড. হ্যান্স ডেগ বলেছেন, সন্ধান পাওয়া গ্রহটি বৃহস্পতি গ্রহের মতো এবং বুধ গ্রহের মতো এর বায়ুমণ্ডল রয়েছে। বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচার-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, এ ধরনের গ্রহের সন্ধান পাওয়া এটাই প্রথম। এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে, যা অনেক না জানা প্রশ্নের জবাব মিলিয়ে দেবে।
ক্যালারি দ্বীপে ইনস্টিটিউটের ডি অ্যাস্ট্রোফিজিকা ডি ক্যানারিসে কর্মরত ড. হ্যান্স ডেগ বলেন, আমাদের সৌরজগতের বাইরে এ পর্যন্ত চার শতাধিক গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে। কিন্তু সম্প্রতি পাওয়া কোরোটি-৯বি ছাড়া বাকি সবই বিচিত্র ধরনের।
এরা হয় অতি উত্তপ্ত, কিংবা মূল তারার খুব কাছে তাদের অবস্থান। কারও কারও কক্ষপথ খুবই সংক্ষিপ্ত এবং অদ্ভুত। একমাত্র কোরোটি-৯বি ব্যতিক্রম। এই গ্রহটিতে রয়েছে নাতিশীতোষ জলবায়ু যেমনটি রয়েছে আমাদের সৌরজগতে। তাই বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের।
আমাদের সৌরজগতের বাইরে এ ধরনের গ্রহের সন্ধান পেতে তারা তৈরি ছিলেন না। ওই গ্রহটির স্থলভাগের তাপমাত্রা হতে পারে মাইনাস ২০ থেকে ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ড. ডেগ বলেন, আগে পাওয়া মহাজাগতিক গ্রহগুলোর মধ্যে কিছু গ্রহের জলবায়ু নাতিশীতোষ হতে পারে বলে অনুমান করা হতো। কিন্তু কোনোভাবেই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ওইসব গ্রহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও বের করা সম্ভব হয়নি।
৬০ জন জ্যোতির্বিজ্ঞানীর আন্তর্জাতিক একটি দল ট্রানজিট ম্যাথড ব্যবহার করে খুঁজে পেয়েছেন কোরোটি-৯বি গ্রহটিকে। ৯৫ দিনে গ্রহটি তার মূল তারাকে প্রদক্ষিণ করছে। তারার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময়ই গ্রহটি তার মূল তারাকে প্রদক্ষিণ করছে। তারার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময়ই গ্রহটি চিহ্নিত করা হয়। ড. ডেগ বলেন, আগামী দশকে গবেষণার জন্য এই গ্রহটি হতে পারে একটি রেফারেন্স।
ফরাসি মহাকাশ সংস্থার কোরোটি স্যাটেলাইট মিশন কোরোটি-৯বি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরে ইউরোপিয়ান সাউদান অবজারভেটরির বেশ কয়েকটি টেলিস্কোপ গ্রহটির অবস্থান নিশ্চিত করে।
ড. ডেগ বলেন, স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া উপাত্ত এবং ভূমি থেকে পাওয়া ভরবিষয়ক উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে। গ্রহটির রং কী তা আমরা এখনও নিশ্চিত নই। হতে পারে গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে পানির মেঘ রয়েছে, তার কারণে গ্রহটির রং হতে পারে নীল।
তবে এটি নির্ভর করছে সেখানে গ্যাসের মিশ্রণের ওপর, যা কখনও জানা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখলে বহু রহস্যের সমাধান হবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।