জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাওহীদের ৩০০ সদস্য রংপুর বিভাগের আট জেলায় মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদের মধ্যে ১০০ নারী সদস্য রয়েছেন। এক মাসে ১০ নারীসহ ২৩ সদস্য গ্রেফতারের পর এই তথ্য বেরিয়ে আসে। সদস্যদের বেশির ভাগের বাড়ি কুষ্টিয়া, শেরপুর, রাজশাহী, মেহেরপুর, নওগাঁ ও দিনাজপুরে। এদের অনেকেই বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করে। আর কেউবা রিকশা চালিয়ে বা পড়াশোনার আড়ালে হিজবুতের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এমন তথ্য পাওয়ার পর পুলিশ ও র্যাবের গোয়েন্দারা মাঠে নেমেছে। রবিবার রংপুর মহানগরীর ধাপের মোড় থেকে হিজবুত তাওহীদের নারী সদস্য কুষ্টিয়া সদর উপজেলার যুগিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের আক্কাস আলীর স্ত্রী শাপলা বেগম (২৪) ও শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বাজপাড়া গ্রামের মঞ্জুরুল হক পলাশের স্ত্রী নুরজাহান পারভীন ঝর্ণাকে (২৩) গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি জিহাদি বই ও পোস্টার উদ্ধার করা হয়। তারা সাংবাদিকদের জানান, ২০০৯ সালে হিজবুত তাওহীদের সঙ্গে যুক্ত হন। সাধারণ মানুষের মধ্যে দলীয় কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে তাদের ২০১২ সালের জানুয়ারিতে রংপুরে পাঠানো হয়। তাদের সঙ্গে আরও ১৫ নারী সদস্য আছেন। তারা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে দলের জন্য কাজ করছেন। শাপলা ও নুরজাহান স্বামীসহ নগরীর তাজহাট মোল্লাপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাদের স্বামীরাও হিজবুতের সদস্য। শাপলা জানান, রংপুর বিভাগের আট জেলায় তাদের ৩০০ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এদের মধ্যে নারী সদস্য রয়েছেন ১০০ জন। শনিবার লালমনিরহাট শহর থেকে জিহাদি বই বিক্রির সময় হিজবুত তাওহীদের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা হলেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩২), তার স্ত্রী আরফিনা আক্তার (২৬), কুষ্টিয়ার চারুলিয়া গ্রামের ইয়াজ উদ্দিনের স্ত্রী ববি খাতুন (২৭), রাজশাহীর চারঘাটের আকমল হোসেনের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন (৩০) এবং কুষ্টিয়ার হাউজিং এলাকার মাসুদ হোসেন টিপুর স্ত্রী নাইচ পারভীন লাকী (২৮)। লালমনিরহাট সদর থানার ওসি জমির উদ্দিন বলেন, তারা তিন মাস আগে আদিতমারী উপজেলার কিসামত খুটামারা গ্রামের খলিলুর রহমানের বাড়ি ভাড়া নিয়ে এলাকায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। এর আগে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের নাগদাহ গ্রামে জিহাদি বই ও লিফলেট বিতরণের সময় দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাসের ছাত্র আবদুল কুদ্দুস শামীম (২৮), কারমাইকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র আমিনুল ইসলাম (২৬), জাফরুল ইসলাম (২৩) আবুল কালাম (৬০) ও সোলায়মান আলী ভুট্টোকে (২৪) আটক করা হয়। এরা সবাই নাগদাহ গ্রামের বাসিন্দা। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২ হাজার জিহাদি বই, লিফলেট ও সিডি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ছাওলা ইউনিয়নে দুজন এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় চার নারীসহ গ্রেফতার হন নয়জন। পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ইকবাল বাহার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হিজবুত তাওহীদের জঙ্গি সদস্যরা গোপনে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন, এমন তথ্য পেয়ে গোয়েন্দাদের মাঠে নামানো হয়েছে। তারা যাতে নাশকতা ঘটাতে না পারেন সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য সব জেলা পুলিশ সুপার ও থানার ওসিদের কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।