ডলারের বিপরীতে টাকার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে আছে সাধারণ মানুষ। আমাদের দেশে ব্যবহৃত নিত্যপণ্যের এক বড় অংশ বিদেশ থেকে আমদানির ওপর নির্ভরশীল। গম, ডাল, তেল, চিনি, মসলা থেকে শুরু করে নিত্যপণ্যের অন্তত ৫০ ভাগ আমদানিনির্ভর। ডলারের বিপরীতে টাকার দাম বাড়লে এসব পণ্যের দাম হ্রাস পায়। ডলারের দাম বাড়লে আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়ে। বেড়ে যায় জীবনযাত্রার ব্যয়। সাধারণ মানুষের জীবন দুর্ভোগের শিকার হয়। ডলারের বিপরীতে টাকার দাম বৃদ্ধিকে আমজনতা আশীর্বাদ বলে ভাবলেও তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের জন্য এটি দুঃসংবাদ বলে বিবেচিত হচ্ছে। যে কারণে ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমানোর দাবি তুলেছেন রপ্তানিকারকরা। এ ব্যাপারে তারা অর্থমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠিও দিয়েছেন। রপ্তানিকারকদের চিঠিতে বলা হয়, আমদানি ব্যয় কমে যাওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বাড়ছে। এর ফলে ডলারের বিপরীতে টাকার মানও দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে ডলারের বিপরীতে রুপির দাম কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি খাত হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। কারণ বাংলাদেশ যে ধরনের পণ্য রপ্তানি করে ভারতও সে ধরনের পণ্যের রপ্তানিকারক। ফলে রপ্তানির প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে পিছিয়ে পড়ছে। এ অবস্থার মোকাবিলায় ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হার পুনর্নির্ধারণের দাবি তুলেছেন তারা। রপ্তানিকারকদের এ দাবি মুক্তবাজার অর্থনীতি বা মুক্ত মুদ্রানীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। মুদ্রার মান কী হবে তা নির্ধারিত হবে কোন মুদ্রা কতটা শক্তিশালী সে প্রেক্ষিতে। ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের মুদ্রার দাম বেড়েছে সামর্থ্য অর্জনের কারণে। কৃত্রিম পন্থায় টাকার মান পুনর্নির্ধারণ হলে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ। সরকারের গ্রহণযোগ্যতার জন্যও তা হুমকি সৃষ্টি করবে। যা কাম্য হবে কিনা ভেবে দেখেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিশেষ করে সরকারের মেয়াদ যখন শেষের দিকে তখন কৃত্রিম উপায়ে টাকার দাম কমানোর উদ্যোগ নিলে তা আত্দঘাতী সিদ্ধান্ত বলে বিবেচিত হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।