আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দালালরা কখনোই বদলায় না নিজেকে, প্রগতিশীলরা অসম্ভব গতিশীল... বদলে যেতে সময় লাগে না।

পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি

অবস্থা এমন হয়েছে - কোন একটা কিছু করতে গেলেই আরেকটা বাদ দিতে হয়। দিতেই হয় , নইলে সেই একটা কিছু করার সময় পাওয়া যায় না । সুতরাং, ঘুম বাদ দিয়ে রান্না, রান্না বাদ দিয়ে খবর পড়া , খবর বাদ দিয়ে কাপড় ধোয়া - দৈনন্দিন জীবন জুড়ে কেবলই যাকে বলে "ট্রেড অফ" । প্রতি নিয়তই আমাদের এই ধরনের সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হতে হয়। এইটা করবো নাকি ঐটা? ঐটা বেশি ভালো হবে নাকি সেইটা? আর প্রতিটা সিদ্ধান্তেরই কিছু দাম দিতে হয় ।

যাকে বলে অর্থনীতির ভাষায় " অপরচুনিস্টিক কস্ট" । আপনি যা বেছে নেন নাই, তা বেছে না নেওয়া ফলে যা ক্ষতি হলো কিংবা বেছে নিলে যে লাভ হইত - সেইটার মূল্যই হলো আপনার সিদ্ধান্তের দাম বা কস্ট । বেছে নেওয়ার অপরচুনিটি ছিলো বলে এই কস্ট-এর নাম অপরচুনিস্টিক কস্ট । জীবনে জুড়েই এই ট্রেড অফ ( এর বাংলা কি হবে ? বাণিজ্যিক চ্যুতি? ) আর অপরচুনিস্টিক কস্ট ( এইটার বাংলাই বা কি হতে পারে? সুযোগজনিত বা সুযোগসন্ধানি দাম? ) এর ছড়াছড়ি । ইদানিং তার প্রকাশ ঘটছে প্রিয় কিছু নামের সাথেও।

রাজনীতিবিদেরা বেশ্যা হয়েছেন বহু আগেই। দেহ বিক্রিকারী নারীরা অনেক পবিত্র, দারিদ্র তাঁদের বাধ্য করে । কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক বেশ্যারা বিক্রি হয় লোভের কাছে । রাজনীতিবিদ, উন্নয়নের সহযোগী কিংবা তথাকথিত 'সুশীল' সমাজের ঘৃণ্য পরিণতি যতটা অন্ধকারে ডুবিয়ে রেখেছিলেন তার ভেতরে টিম টিম করে জ্বলতেন দু'একটি নাম । কবিরাই সংখ্যায় অধিক ছিলেন।

নিজে কবিতার নেশারু , হয়ত তাই। হঠাৎ অবলোকনে বুকে বেশ চড়া রকম ধাক্কা খাই যখন দেখি সেই সব কুপিবাতিরাও বিক্রি হচ্ছেন । দিব্যি শুয়োরের মালিকানায় টিভিতে, নাটকে, পত্র পত্রিকায় বিকিয়ে দিচ্ছেন এক কালের দোর্দন্ড প্রতাপশালী লেখকের দল তাদের বুড়িয়ে যাওয়া বিবেক। তাঁদের কলম এখন বিক্রয়যোগ্য । একা আল মাহমুদ সৎ রয়েছেন।

শুয়োর চেটে 'বকুলের গন্ধ পাচ্ছি' বলে ভন্ডামিটা করেন নাই! বাকি যারা- যাদের কবিতায় আমি এখনো দেশমাতৃকার প্রবল আগুন খুঁজে ফিরি, যাদের কলমে মুক্তিযোদ্ধার রক্তের স্বাদ পাই, যাদের বানীতে মায়ের অপমানের প্রতিশোধ ছুঁই - সেই তারাই কেমন বিক্রি হয়ে গেলেন! জামায়াত শিবিরের নতুন কৌশল বুঝতে না পারার কোন কারন কিন্তু নেই। জামায়াত শিবির আগে বাংলাদেশ ও বাংলার সংস্কৃতি , ঐতিহ্য , মুক্তিযুদ্ধ , ভাষা আন্দোলন - ইত্যাদি মূল আবেগের জায়গা গুলোকে প্রকাশ্যে অপমান করতো । ঘৃণায় ভরা বমি ছুড়ে দিত বাংগালীর প্রাণের মণিকোঠায় । বাংলাদেশের জন্মের বিরোধিতা করে , খুন- ধর্ষণ-লুটতরাজের মাধ্যমে বিশ্বাসঘাতকতার সর্বোচ্চ নজির স্থাপন করেও জামাত - শিবিরের আদি ও আধুনিক লক্ষ্য সব সময়ই ক্ষমতা। রাজনৈতিক ক্ষমতা।

দেশ শোষণের ক্ষমতা । মওদুদীর আদর্শে উজ্জীবীত এই শুয়োরের দল যখম শুধু ধর্মের আফিম গিলিয়ে দেখলো বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানীদের মতন 'আফিমখোর' নয় ; তখন থেকে তারা লেগে পড়েছে 'বাঙ্গালীত্বকে' পুঁজি করে ক্ষমতা দখলের। 'হিন্দুয়ানী ভাষা' বাংলা হঠাৎ করে তাই 'অধ্যাপক গু আ'র ভাষা সৈনিক' বিপ্লবের পাটাতন। কথা নাই , বার্তা নাই - মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা আর বিজয় মিছিল। টাকা দিয়ে বাংলা ব্লগে জামায়াত শিবির এর মাহাত্ম্য প্রচারণা।

নাসারাদের 'হারাম টিভি' হঠাৎ করেই হালাল ' ইসলামি চ্যানেল' । 'সংগ্রাম , ইনকিলাবের ' রাজনীতির পরে এখন নয়া দিগন্ত আর দিগন্ত টিভি । আর তাতে এতদিনের হারাম গান, কবিতা , নাচের হারামত্ব খসে গিয়ে ইসলামি গান-কবিতার উৎপত্তি । উদ্দেশ্য কি বুঝা খুব কঠিন? মোটেই না । বাংগালী শুধু ধর্ম খায় না।

শুধু মওদুদ খায় না। শুধু ইসলামি বিপ্লব খায় না । বাংগালী বিচার করতে পারুক আর না পারুক, যুদ্ধের অপরাধ ভুলে না । তাই লাড্ডু খাইয়ে , মিছরি খাইয়ে ধর্ম-বিপ্লব-মওদুদ খাওয়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে । ব্লগে এই সব অর্থজীবী মগজ পসারিনীদের আমরা চিনি ।

তিন কোনা , চারকোনা , বাত্তি লাগানো মিছরি আমাদের কাছে মিস্ট্রি নয়, বরং জামায়াত শিবির এর সাহিত্যমনা মিস্তরি। কিন্তু , জাতীয় জীবনে এই সব জামায়াতী উচ্ছিষ্ট খাওয়ানোর উপায় কি? ঢাকার রাস্তা গুলা খুব ময়লা। ধুলার সাথে বালি, মাটি, হাজারো রোগ জীবানু আর শুকিয়ে গুড়ো গুড়ো হয়ে মিশে যাওয়া পায়খানা - কি নেই সেখানে? ঝাড়ুদারের একাট্টা করা এই ময়লা যত সুদৃশ্য চামচে সাজিয়েই দেওয়া হোক না কেন, সেইটার রুপ -রস -গন্ধ দেখেই আর কেউ গিলবে না । কিন্তু সেই একই ময়লা যখন বাতাসে উড়ে গিয়ে রাস্তার পাশের সুস্বাদু চটপটি- ফুচকা- আচার- বাদামের সঙ্গে গিয়ে মেশে, মানুষ কি অবলীলায় , কতকটা না জেনেই , গিলে খায় সেইসব আপাত পরিষ্কার আবর্জনা। কষ্ট লাগে যখন দেশ বরেণ্য সাহিত্যিক, কবিরা জামায়াত শিবিরের পায়খানা গেলানোর চটপটি- ফুচকা- আচারের ঠোঙা বনে যান, ট্রেড অফ আর অপরচুনিস্টিক কস্টকে তখন সোজা সাপটা বাংলায় 'ধান্দাচ্যুতি' আর 'সুযোগসন্ধানি মূল্য' হিসেবে বেশ চিনে যাই! অপরচুনিস্টিক কস্ট আর অপরচুনিস্টিক প্যাথোজেন খাপে খাপে মিলে যায় দিন বদলানোর দিনে! --------------------------- শিরোণাম কৃতজ্ঞতা ঃ ব্লগার নজরুল ইসলাম ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.