কাঙাল জানিয়া বাবা দিও দরিশন, অধম জানিয়া বাবা দিও দরিশন.....
চিড়া মুড়ি বাঙ্গালী সমাজের খাদ্য অভ্যাসের একটি লোক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। নগর গ্রাম সব স্থানে মুড়ি খাদ্য উপকরনের তালিকায় সমাদৃত।
প্রাকৃতিক সমস্যাকবলিত বাঙ্গালী সমাজের প্রেক্ষাপটে সামাজিক নিরাপত্তার একটি অংশ এই চিড়া মুড়ি। আবহমান বাংলার প্রাণ কৃষক এই চিড়া মুড়ি কে বিপদের বন্ধু হিসাবে জানে। গ্রামীণ জনপদে একসময় প্রতিবছর ২/৩বার বন্যা খরা বিভিন্ন প্রকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিত।
তখন মাঠ ঘাট সড়ক সব বন্যার পানিতে তলিয়ে যেত। চারিদিকে থৈ থৈ পানি। এই বন্যার আশংকায় গ্রামীণ জনপদে তখন বিভিন্ন মাটির হাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমান চিড়া মুড়ি শুষ্ক খাবার হিসাবে মজুদ রাখার তাগিদ অনুভব করতো। খেজুরেরর গুড় আর নারিকেলের চিড়া,নাড়ু মোয়া তার সাথে সঙ্গী হিসাবে একটি সমৃদ্ধ তালিকা খোঁজ করলে পাওয়া যায়।
ধান কাটা মৌসুম শেষেই মুড়ি তৈয়ারীর জন্য গৃহিনীরা প্রস্তুত থাকতো।
এই মুড়ি কখনো বিলাস সামগ্রী ছিল না। ছিল হাতের নাগালের মধ্যে ঘরের গৃহিনীরা পর্যাপ্ত মুড়ি মজুদ করার পর কিছু বাজারে বিক্রি করতে দেখা যেত।
যদিও এখন অনেক বাণিজ্যিক ভাবে এই মুড়ি উৎপাদন করে।
মুখরোচক খাদ্য হিসাবে ঝাল মুড়িও খুব জনপ্রিয়।
ঘন ঘন প্রাকৃতিক বিপদগ্রস্থ বাংলাদেশ তার বেঁচে থাকার প্রয়োজনে অনেক পদ্ধতি আবিস্কার করেছে।
যা সু-প্রাচীন কাল থেকে আমাদের সমাজে চলে আসছে। তার মধ্যে মুড়ি অন্যতম। তখন রিলিফ বা অনুদানের কোন সুযোগ ছিল না।
বিপদগ্রস্থ গ্রামীণ সমাজ নিজেদের রোগ বালাই প্রতিরোধ করতে পারতো না। পরবর্তীতে ডায়রিয়া বা অন্যান্য মহামারীতে অনেক জীবনহানী ঘটতো।
তখন কার সমাজ নিজেরাই খাদ্যের প্রয়োজনীয় সংস্থান করতো।
মুড়ি বাঙ্গালী সমাজের প্রাচীন একটি খাদ্য পন্য
এই খাদ্যপণ্যটি একটি ঐতিহ্যবাহী নিরাপদ পরিবেশ বান্ধব খাদ্য পণ্য। তাই তাকে বিশ্ব গুরুত্বপুর্ন খাদ্য
তালিকায় , দৈনিক চাহিদার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরী। যা দুর্যোগ পরবর্তি সময়ে বিশ্বখাদ্য সংস্থা তাকে ত্রান কার্য পরিচালনায় উপযোগি হিসাবে বেছে নিতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।