বাংলাদেশের মানুষের সকাল বিকালের সহজলভ্য নাস্তা হচ্ছে মুড়ি। ১ কাপ চা আর কিছু মুড়ি পছন্দ করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। খুদার সময় পেট ঠান্ডা করা খাবার হিসেবে মুড়ির প্রচলন রয়েছে সব সমাজে। যাদের বার বার ক্ষুধা পায়, অথচ সারাদিনে বেশিরভাগ সময়ে অফিসে বা বাড়িতে বসে কাজ করার জন্য শরীরে ক্যালোরির চাহিদা কম, তাদের জন্য লাঞ্চ আর ডিনারের মাঝখানে বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে মুড়ি হতে পারে আদর্শ খাবার। পেঁয়াজ, শসা, গাজর কুচিয়ে সামান্য কাঁচা লঙ্কা আর আদার কুচি দিয়ে মাখালে মুড়ি খেতেও বেশ সুস্বাদু।
যারা ওজন বাড়ার সমস্যায় ভুগছেন, ওজন কমানোটা যাদের একান্ত প্রয়োজন, তারা বিকেলের টিফিনটা অনায়াসে সারতে পারেন মুড়ি দিয়ে। অনেকটা জল টেনে নেয় বলে মুড়ি খেলে বেশ খানিকটা পেট ভরা থাকে। শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি চলে যাবার ভয়টাও থাকে না। পেটের নানা গোলমালে শুকনো মুড়ি বা জলে ভেজা মুড়ি খাওয়ার রেওয়াজ অনেকের মধ্যে রয়েছে। ব্যাপারটা মন্দ নয়, তবে শুধু মুড়ি থেকে শরীরে পুষ্টি যায় খুব কম।
বর্তমানে মুড়িকে আরও বেশি করে আকর্ষণীয় বানাতে মুড়ি তৈরির সময় ইউরিয়ার দ্রবণের ব্যবহার দিনদিন বাড়ছে। এরকম ইউরিয়া দিয়ে ভাজা মুড়ি সাধারণ লালচে মুড়ির তুলনায় বেশি ধবধবে আর বেশি ফুলকো হওয়ায় সহজেই ক্রেতার মন কেড়ে নেয়। তবে মুড়ির মতো নির্ভেজাল, কম ক্যালোরির খাদ্যে ইউরিয়ার এরকম ব্যবহার আপনার আমার শরীরের জন্য মারাত্মক বিপজ্জনক। এমনিতেই তো আমাদের শরীরে বেশ কিছুটা ইউরিয়া থাকে। তাহলে আর মুড়ির সঙ্গে শরীরে যাওয়া ইউরিয়া কি এমন ক্ষতিটা করবে? এরকম ভাবনা আপনার মনে আসতেই পারে।
এটা যে শরীরে নানা ধরনের বিপাকীয় কাজকর্মের ফলে দিনরাত বেশ খানিকটা ইউরিয়া তৈরি হয় আপনার শরীরে। রক্তে ইউরিয়ার মাত্রা একটা সীমা পেরিয়ে গেলে শরীরের স্বাভাবিক শরীরবৃত্তির কাজকর্মে আর সাম্যে বিঘ্ন ঘটে। ইউরিয়ার মাত্রা আরও বাড়লে তার প্রভাব পড়বে শরীরের সব অত্যাবশ্যক কাজকর্মের উপর, ঘনিয়ে আসবে বিপদ। আর ঠিক এই কারণে আমাদের শরীরের দুটো কিডনি অবিরত বেশ কিছুটা ইউরিয়াকে ছেকে বার করে দেয় শরীর থেকে, রক্তে ইউরিয়া সব সময় থাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে। যারা উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদযন্ত্রের নানা সমস্যায় ভুগছেন তাদের বেশি লবণের মুড়ি একটানা খাওয়া অবশ্যই বিপজ্জনক।
তাই বাজার থেকে হরেক মুড়ি থেকে কম লবণে ভাজা মুড়িটা খুঁজে নেবেন। শুধু কম লবণের মুড়ি কিনলে চলবে না, এ রকম মুড়ি মাখার সময় স্বাদ বাড়াতে আর পাঁচটা বস্তুর সঙ্গে লবণ বা আচার মেশানো যাবে না একই কারণে। লবণ মানেই সোডিয়াম ক্লোরাইড। সাধারণ সাদা লবণ, ভাজা লবণ, বিট লবণ বা সৈন্ধব লবনের কোনটাই মুড়িতে দেয়া যাবে না। সুত্র দৈনিক ইত্তেফাক: লেখক: ডাঃ মোহাম্মদ ফজলুল হক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।