সারাদিন এই ক্লাশ ওই ক্লাশ এই কো-অর্ডিনেটর সেই টিচার করে বিকেলে জামিলের সাথে ওদের বাসার পথে রওনা হয় মতিন।
দুপুরে ক্যান্টিনে খেতে যেয়ে জামিল হাসিব মুহিব দের সাথে দেখা।
মুহিব আর হাসিব একটা টেবিলে বসে খাবার এর লাইনে এ দাঁড়ানো কে বাংলাদেশী আর কে ভারতিয় সেটা নিয়ে ফিস ফিস করছিলো।
লাইনে দাঁড়িয়ে দেশি ফিস ফাস ঠিকই বুঝতে পারছিলো মতিন।
বুফে স্টাইল খাবার এ রাইছ ভেজিটেবল আর চিকেনের অর্ডার দিতেই পেছন থেকে ঘারের কাছে পেছন থেকে একজন স্পস্ট বাংলায় বলে উঠল ভাই এইখানে চিকেন কিন্তু হালাল না।
মতিন খুব অবাক হয়ে পেছনে ফিরে দেখে হাসি হাসি মুখে একটু লম্বা মত চশমা ওয়ালা এক ছেলে তার দিকে হাত বাড়িয়ে
আমি জামিল, আপনি?
আমি মতিন
এই সেমিস্টারে এসেছেন বুঝি
হ্যা,আপনি
বলছি তার আগে আপনি খাবারটা ঠিক করেন এইখানের ফিশ আর সি ফুড টাও কিন্তু বেশ আমরা সাধারনত সি-ফুড রাইছ আর ভেজিটেবল নেই।
জামিলের কথামত চিকেন পাল্টে সি ফুড নেয় মতিন।
জামিল একসাথে তিনটা প্লেট নিয়ে ফিস ফাস করা ছেলেগুলোর টেবিলের দিকেই এগিয়ে যায়।
পাশের টেবিল থেকে একটা চেয়ার টেনে মতিনের দিকে এগিয়ে দিতে দিতে জামিল পরিচয় করিয়ে দেয় মুহিব আর হাসিব এর সাথে।
মুহিব আইটি তে আর হাসিব একাউন্টিং এ।
জামিলের বাসা টেইফ থেকে কাছেই রেডফার্নে , মুহিব থাকে কোগরাহ বন্ধুদের সাথে আর হাসিব থাকে বোনের বাসায় মিন্টোতে।
তিনজনই খুব আগ্রহের সাথে মতিনের কাছ থেকে দেশের খবর জানতে চায়।
দেশের এই খাবারটা মিস করি এই হোটেলের চা ওই হোটেলের সিংগারা এই সব শেষ করে বিস্বাদ সি-ফুড আর মশলাবিহীন শুধু সেদ্ধ করা ভেজিটেবল খেতে খেতে হঠাত্ হাসিব বলে ওঠে টেইফ নাকি এই সেমিস্টার থেকে আবার টিউশন ফি বাড়িয়ে দিচ্ছে শুনলাম।
একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জামিল বলে
আগের সেমিস্টারের হাবিব ভাইয়ের ধারের টাকা এখনও দিতে পারি নাই আবার সামনে ইউনি তে ভর্তি হতে হবে তোমার ত চিন্তা নাই লাগে টাকা দিবে দুলাভাই ।
হ্যা আমার দুলাভাই এর ত ডলার গাছ আছে বাড়ীতে বলে হাসিব
মুহিব বলে নাহ এইবারে দেখি ট্যাক্সি লাইসেন্স টা নিয়েই ফেলবো শুধু সিকিউরিটি জবে আর চালানো যাবে না তার উপরে স্টুডেন্টদের সিকিউরিটি লাইসেন্স নাকি আর রিনিউ করবে না।
নাহ জামিল তোমার ক্লিনিং এর ওখানে আমারে একটা তিন ঘন্টার শিফট দেয়ার ব্যাবস্থা করা যায় কিনা দেখো ত।
হ্যা দেয়া যাবে যায়গা একটা খালি আছে ১৮ টাকা ঘন্টা করবা বলে জামিল ।
আবার জিগায়! কোথায় যাইতে হবে খালি সেটা বলো আগ্রহের সাথে কোকের ক্যান খুলতে খুলতে তাকায় মুহিব
দূরে না কাছেই , এই জর্জ স্ট্রিটের উপরেই , বিকাল ৬ টা থেকে ৯ টা ,বেশি না দশটা ফ্লোর কভার দিবা প্রতি ফ্লোরে ৫টা মেইল ৫ টা ফিমেইল টয়লেট।
কোকের ক্যানে চুমুক দিতে যেয়ে জামিলের কথা শুনে রিতিমত বিষম খায় মুহিব আর তা দেখে বাকি তিনজন বেশ শব্দ করেই হেসে ওঠে।
মোবাইলে টাইম দেখে হাসিব বলে ওঠে এই তোমরা থাকো আমার ক্লাশ আছে ১ টায় এই টিচার আবার ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টরা পাচ মিনিট দেরী করে গেলেও নামের পাশে লিখে রাখে।
যত্ত পোংটা টিচার আছে টেইফে তার বেশিরভাগই যেয়ে জমা হয় একাউন্টিং এ বলতে বলতে ব্যাগ নিয়ে উঠে দাঁড়ায় হাসিব।
আমার একটু লাইব্রেরীরে তে যেতে হবেরে বলে উঠে দাঁড়ায় মুহিবও
জামিল এইবার মতিনের দিকে তাকায় আপনার নেক্সট ক্লাশ কয়টায়
আমার নেক্সট সেশন ২টায় শেষ হবে ৪.৩০ এ বিল্ডিং৫ এর লেভেল ৪ এ।
ওহ তাই নাকি আমারও ক্লাশ শেষ হবে আজকে ৪.৩০ এ
তাহলে চলেন আজকে বিকেলে আমাদের বাসা দেখে যাবেন আমি থাকি কাছেই সেখান থেকে স্টেশন ও কাছেই বলে জামিল।
না না করতে করতেও রাজী হয়ে যায় মতিন।
তাহলে ওই কথা ক্লাশ শেষ করে আপনি লাইব্রেরীর সামনে থাকবেন সেখান থেকে আমাদের বাসা।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।